আন্তর্জাতিক ডেস্ক : তিনি বলেছিলেন, ‘আল্লাহই মানুষের জীবন দান করেন এবং মৃত্যু ঘটান। এবং আল্লাহ সবকিছু সম্পর্কে অবগত। যদি একজন নেতা চলে যান, তাহলে আরেকজনের উত্থান হবে।’ হানিয়া এসব আরবি ভাষায় বলেছিলেন। এর কয়েক ঘণ্টা পরই তার গেস্ট হাউসে সন্দেহভাজন ইসরাইলি হামলায় তিনি নিহত হন।
হানিয়ার এই মন্তব্য টেলিভিশনে সম্প্রচার করা হয়। যেখানে খামেনিকে উদ্দেশ করে এসব কথা বলেছেন হানিয়া। এর মধ্যদিয়ে তার ইসলামের প্রতি গভীর বিশ্বাস প্রকাশ পেয়েছে। এছাড়া ইসরাইলের সঙ্গে ফিলিস্তিনিদের সংঘাতে তার দৃষ্টিভঙ্গি এবং জীবন দর্শন পরবর্তীতে তার কর্মকাণ্ডকে প্রভাবিত করেছে। হানিয়ার এই জীবন দর্শন হামাসের প্রতিষ্ঠাতা শেখ আহমেদ ইয়াসিনের দ্বারা প্রভাবিত।
১৯৮০ সালে ইসরাইলের বিরুদ্ধে ইয়াসিন জিহাদ ঘোষণা করেন। ইসরাইল ২০০৪ সালে তাকে কারাদণ্ড দেয় এবং পরে হত্যা করে। ১৯৯৪ সালে গাজায় রয়টার্সের একটি সাক্ষাৎকারে হানিয়া বলেছিলেন, ইয়াসিন তাদের শিখিয়েছেন যে, ফিলিস্তিনিরা তাদের দখলকৃত মাতৃভূমি পুনরুদ্ধার করতে পারে একমাত্র শক্তিশালী অস্ত্র দিয়ে লড়াই করার মাধ্যমে। ফিলিস্তিন দখলে থাকা অবস্থায় কোনো মুসলমান যেন তার ঘরে মারা না যায়। ইয়াসিনকে উদ্ধৃত করে বলেন হানিয়া।
হানিয়া বলেন, তিনি শেখ ইয়াসিনের কাছ থেকে ‘ইসলামের প্রতি ভালবাসা ও ইসলামের জন্য আত্মত্যাগ শিখেছেন। এছাড়া অত্যাচারী ও স্বৈরাচারীদের কাছে কীভাবে নতজানু না হতে হয়, তাও শিখেছেন। গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর হামাসের একজন দৃঢ় ও অবিচলিত নেতা হয়ে ওঠেন হানিয়া। অনেক বিষয়ে তিনি অকপটে সত্য তুলে ধরেছেন। এপ্রিলে ইসরাইলের বিমান হামলায় তার তিন ছেলে ও চার নাতি-নাতনি নিহত হন। এছাড়া গাজা যুদ্ধে তার পরিবারের অন্তত ৬০ জন সদস্যও নিহত হন।
তাদের মৃত্যুর পর হানিয়া বলেন, ‘আমার সন্তানদের রক্ত ফিলিস্তিনি জনগণের শিশুদের রক্তের চেয়ে বেশি মূল্যবান নয়। ফিলিস্তিনের সব শহীদ আমার সন্তান।’গত বুধবার (৩১ জলাই) ভোরে তেহরানে এক ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় দেহরক্ষীসহ নিহত হন হানিয়া। সেখানে ইরানের নতুন প্রেসিডেন্টের অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়েছিলেন হানিয়া।
হানিয়াকে শুক্রবার কাতারে সমাহিত করা হয়েছে।
সূত্র: রয়টার্স
কিউএনবি/আয়শা/০৩ অগাস্ট ২০২৪,/রাত ৮:৪৪