মঙ্গলবার, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০২:৩৭ পূর্বাহ্ন

যুক্তরাষ্ট্রে স্নাতক সমাপনী অনুষ্ঠানেও শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ১৩ মে, ২০২৪
  • ৯৯ Time View

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ব্যাপক ধরপাকড় ও বহিষ্কৃত হওয়ার ঝুঁকির মধ্যেও যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভে অনড় যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পাসে তাঁবু গেড়ে বিক্ষোভের পাশাপাশি স্নাতক সমাপনী অনুষ্ঠান বর্জন করছেন তারা। গত কয়েক দিনে দেশটির অন্তত এক ডজন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের স্নাতক সমাপনী অনুষ্ঠানে বিক্ষোভ হয়েছে। ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরাইলি নৃশংসতার প্রতিবাদে অনুষ্ঠানস্থল থেকে বেরিয়ে যান অনেক শিক্ষার্থী।

রোববার ডিউক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক সমাপনী অনুষ্ঠান থেকে বেরিয়ে গেছেন যুদ্ধবিরোধী কয়েক ডজন শিক্ষার্থী। অনুষ্ঠান শুরু হলে এসব শিক্ষার্থী ‘ফিলিস্তিনকে মুক্ত করো’, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করো’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে শুরু করেন। শিক্ষার্থীদের কারও কারও হাতে দেখা যায় ফিলিস্তিনের পতাকা। একপর্যায়ে স্লোগান দিতে দিতেই অনুষ্ঠানস্থল থেকে বেরিয়ে যেতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের।

ক্যাম্পাসে তাঁবু গেড়ে বিক্ষোভ করছেন যুদ্ধবিরোধী শিক্ষার্থীরা। এ কারণে কলেজ থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে স্নাতক সমাপনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল ক্যালিফোর্নিয়ার পোমোনা কলেজ কর্তৃপক্ষ। এরপরও বিক্ষোভকারীদের থামানো যায়নি। রোববার স্নাতক সমাপনী অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা।

গতকাল স্নাতক সমাপনী অনুষ্ঠান ছিল বোস্টনের এমারসন কলেজে। তাতে অংশ নিয়ে বিক্ষোভ করেন কলেজটির যুদ্ধবিরোধী শিক্ষার্থীরা। কেউ কেউ নিজেদের কালো গাউন ও টুপি মঞ্চের দিকে ছুড়ে মারেন। এ সময় অনুষ্ঠান কিছু সময়ের জন্য বন্ধ হয়ে যায়।

স্নাতক সমাপনী অনুষ্ঠান বর্জন করেছেন নর্থ ক্যারোলাইনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও। অনুষ্ঠানের আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ভবনে লাল রং দিয়ে প্রতিবাদী স্লোগান ও চিত্রকর্ম এঁকেছেন তারা।

স্নাতক সমাপনী অনুষ্ঠানে নীরব প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছেন উইসকনসিন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। কালো গাউন পরে ফিলিস্তিনের পতাকা ও গাজায় নৃশংসতা বন্ধের দাবিসংবলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে অনুষ্ঠানে যোগ দেন তারা। স্নাতক সমাপনী অনুষ্ঠানের মঞ্চ দখলে নিয়েছিলেন টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের যুদ্ধবিরোধী শিক্ষার্থীরা। এতে বাধার মুখে পড়ে অনুষ্ঠান। তবে পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা এসে তাদের মঞ্চ থেকে সরিয়ে দেন।

ফিলিস্তিনের পতাকা নিয়ে স্নাতক সমাপনী অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন বোস্টনের নর্থ ওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। গত মাসে বিশ্ববিদ্যালয়টির শতাধিক শিক্ষার্থীকে আটক করে পুলিশ। এদিকে মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়েও যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভকারীদের বাধার মুখে পড়েছে স্নাতক সমাপনী অনুষ্ঠান। রোববার ওহাইও স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক সমাপনী অনুষ্ঠানে যুদ্ধবিরোধী শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেন। এ সময় তাদের অনেকের হাতে ছিল যুদ্ধবিরোধী ব্যানার, প্ল্যাকার্ড ও ফিলিস্তিনের পতাকা।

এর আগে শনিবার ক্যালিফোর্নিয়া ও ভার্জিনিয়া কমনওয়েলথ বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক সমাপনী অনুষ্ঠান চলাকালে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। অনুষ্ঠানস্থল থেকে অনেক শিক্ষার্থী বের হয়ে যান।

গাজায় যুদ্ধ বন্ধ, ইসরাইল সরকার ও ইসরাইলি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পর্ক ছিন্ন করাসহ বেশ কিছু দাবিতে গত ১৭ এপ্রিল প্রথম বিক্ষোভে নামেন কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। পরে যুক্তরাষ্ট্রের দেড় শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ইউরোপের অন্তত ১২টি দেশে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। প্রতিবাদের অংশ হিসেবে স্নাতক সমাপনী অনুষ্ঠান বর্জন করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা।

যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভে যোগ দিয়েছেন। বিক্ষোভে সমর্থন, নয়তো সংহতি জানিয়েছেন অনেক শিক্ষক। যুক্তরাষ্ট্রে অন্তত ৫০ জন অধ্যাপককে আটক করেছে পুলিশ।

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের খ্যাতনামা দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হার্ভার্ড ও ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (এমআইটি) কর্মীরাও। এছাড়া জন হপকিনস, টেক্সাস, ওহাইও স্টেটের মতো যুক্তরাষ্ট্রের আরও কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মীরা শিক্ষার্থীদের এ বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন। বিক্ষোভ করছেন নেদারল্যান্ডস ও স্পেনের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মীরা।

যুদ্ধবিরোধী শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে যোগ দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের খ্যাতনামা দুই বিশ্ববিদ্যালয় অক্সফোর্ড ও কেমব্রিজের অনেক কর্মী। বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে অক্সফোর্ডের ৫০০ শিক্ষক–কর্মী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে চিঠি দিয়েছেন। ইসরাইল সরকার ও ইসরাইলি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানিয়েছেন তারা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে অক্সফোর্ডের এক কর্মী বলেন, গাজায় নৃশংসতা চলছে। কিন্ত এই নৃশংসতা বন্ধে বিশ্ববিদ্যালয় কোনো নৈতিক অবস্থান নেয়নি। আমরা চাই, বিশ্ববিদ্যালয় তাদের নীতিতে পরিবর্তন আনবে। একমাত্র এটা হলেই আমরা আমাদের এই বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে গর্ব করতে পারব।

কিউএনবি/অনিমা/১৩ মে ২০২৪,/রাত ১০:৩৩

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

September 2025
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit