স্পোর্টস ডেস্ক : ঈদের দিন দুপুর থেকেই মানুষের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠছে পদ্মাসেতু সংলগ্ন এলাকা। এক্সপ্রেসওয়ে, নদ-নদীর সেতুসহ আশেপাশের এলাকায় ভ্রমনপ্রেমীদের উপচে পড়া ভিড়। তবে ঈদের ছুটিতে মানুষের বিনোদনের ভিড়ে উঠতি বয়সীদের ‘ট্রাক বিনোদন’ অসহনীয় হয়ে উঠছে। সাধারণ মানুষদের ভোগান্তির কারণ হয়ে উঠছে এ ধরনের বিনোদন।
বৃহস্পতিবার(১১ এপ্রিল) দুপুর থেকে মাদারীপুর জেলার শিবচরের আড়িয়াল খাঁ নদের লিটন চৌধুরী সেতু, পদ্মাসেতুর এক্সপ্রেসওয়েসহ গ্রামের বিভিন্ন সড়ক দাপিয়ে বেড়াতে দেখা গেছে উঠতি বয়সী ছেলেদের ‘পার্টি ট্রাক’।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ট্রাক, পিকআপে করে একদল কিশোর বয়সীরা উচ্চস্বরে বাজনা বাজিয়ে নাচানাচি করছে। ট্রাক চলছে, উচ্চস্বরে গান বাজছে আর ট্রাকের উপর কিশোরদল লাফালাফি করছে। মেয়েদের দেখলে চিৎকার চেঁচামেচি করছে আর অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করে নাচানাচি করছে। এদের এধরনের ‘অসুস্থ্য বিনোদন’ বিব্রত করছে সাধারণ মানুষদের। অন্যদিকে ট্রাকে করে লাফালাফিত যেকোনো সময় দুর্ঘটনার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
ঘুরতে আসা একাধিক ব্যক্তি বলেন, ট্রাকে করে এ সকল ছেলেদের এরকম নাচানাচি খুবই অস্বস্তিকর। সড়ক দাপিয়ে বেড়ানো এ ধরনের বিনোদন বন্ধ করা উচিত। এর ফলে কিশোর বয়সীরা বিপথে চলে যাচ্ছে। প্রশাসনের পদক্ষেপ নেয়া উচিত এই অসুস্থ্য বিনোদন বন্ধে।
জানতে চাইলে ট্রাকে থাকা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কিশোর বলে, এলাকার ছেলেরা দলবেঁধে এসেছে। আমিও এসেছি। সবাই চাঁদা দিয়ে ট্রাক ভাড়া করেছি। সঙ্গে সাউন্ডবক্স, জেনারেটর। ঈদের নামাজ শেষে বের হয়েছি। রাত ৮/৯ টা পর্যন্ত ভাড়া করেছি ট্রাক।
আরেক কিশোর বলে, এখন ঈদে তো অনেকেই এভাবে আনন্দ করে। এছাড়া আর কি করবো? এদিকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শিবচরের লিটন চৌধুরী সেতু থেকে নয়াবাজার পর্যন্ত সড়কের দেড় কিলোমিটার জুড়ে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। ঘুরতে আসা হাজার হাজার মানুষ, মোটরসাইকেল, ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক, ভ্যান, ট্রাক আর পিকআপের দীর্ঘ জটলা তৈরি হয় সড়কে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এনায়তে হোসেন নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, ঈদ বিনোদনে লিটন চৌধুরী সেতুতে মানুষের ঢল নামে বিকেলে। তবে ট্রাকে করে উচ্ছৃঙ্খল ছেলেদের নাচানাচি এবং বেপরোয়া গতিতে ঘুরে বেড়ানো মোটরবাইক সাধারণ মানুষের চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করে। নারী-শিশুদের নিয়ে বিপাকে পড়তে হয় অনেককেই।
ঈদ মানেই আনন্দ। এই আনন্দের রেশ থাকবে আরও কিছুদিন। ঈদের ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে আসা কর্মজীবীরা ঘুরে বেড়াবেন বিভিন্ন স্থানে। পরিবার-পরিজন নিয়ে সময় কাটাবেন। ঈদের এই সময়ে বিনোদনের নামে উঠতি বয়সীদের বেপরোয়া চলাচল যেকোন সময়ই ঈদ আনন্দকে বিষাদে রূপ নিতে পারে বলে মনে করেন সচেতন মহল। ঈদ আনন্দের নামে ট্রাকে চড়ে নাচানাচির এই অসুস্থ্য প্রতিযোগিতা বন্ধে পারিবারিক সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।
শিবচর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মো.শাকিল আহমেদ বলেন, আমাদের মোবাইল টিম এদেরকে এভাবে ঝুঁকিপূর্ণ বিনোদন গ্রহণে নিরুৎসাহিত করছে। মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দেয়া হচ্ছে। তবে পবিত্র ঈদ উদযাপনের খুশির কথা বিবেচনা করে কারো বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
কিউএনবি/আয়শা/১১ এপ্রিল ২০২৪,/রাত ১১:৪০