বাদল আহাম্মদ খান ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি : কখনো ড্রেন নির্মাণ। কখনো সড়ক মেরামত। কখনো বা পানির লাইনের পাইপ টানা। সড়ক ও এর আশেপাশে খোঁড়াখুড়িটা চলছে বছর দু’য়েক ধরে। এ অবস্থায় পৌর এলাকার প্রধান সড়ক ধরে চলাচল যেন দায়। না যানবাহনে চলা না পায়ে হাঁটা- দু’টোতেই ভোগান্তি চরমে। তবে এখানেই শেষ নয়। কয়েকশ’ গজের মধ্যে তিনটি অনির্ধারিত বা অবৈধ সিএনজিচালিত অটোরিকশা স্ট্যান্ড। ফুটপাত দখল করে শতাধিক ভ্রাম্যমাণ দোকান। সড়কের দু’পাশ ধরেই অপরিকল্পিত পাকিং। ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার ব্যাপকতা।
এসব মিলিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া পৌর এলাকায় সাধারন মানুষের যেন দুর্ভোগের শেষ নেই। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দায়সারাভাবের কারণে এ অবস্থা থেকে মুক্তি মিলছিলো না দীর্ঘদিন ধরে। অবশেষে অতিষ্ট জনতাই নামলো মাঠে। যানজট ও ফুটপাত মুক্ত করতে সোমবার সকালে একদল সচেতন মানুষ পৌর এলাকার সড়ক বাজারে নেমে পড়েন। একটি মানবাধিকার সংগঠনের টুপি পড়ে তারা সড়ক বাজারের এক মাথা থেকে আরেক মাথা পর্যন্ত অভিযান চালান।
এ সময় বাঁশি হাতে তারা যানবাহনগুলোকে সারিবদ্ধভাবে চলাচলের ব্যবস্থা করে দেন। সড়কের উপর পণ্য নিয়ে বসা ভ্যানগুলোকে সরিয়ে দেন। ফুটপাত দখল করে বসা দোকানীদেরকেও তারা সরিয়ে দেন। তাদের এ অভিযানের ফলে ঈদ মৌসুমে যেন অনেকটা স্বস্থি নেমে আসে পৌর এলাকায় নানা কাজে আসা মানুষের। এমন উদ্যোগকে তারা স্বাগত জানিয়ে যেন অব্যাহত রাখা হয় সেই দাবি তুলেন।
সকাল নয়টার পর থেকে পৌর এলাকার সড়ক বাজারে রাস্তায় দাঁড়িয়ে যানজট নিরসনে কাজ করতে দেখা যায়, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. মনির হোসেন বাবুল, আখাউড়া রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মো. আব্দুল মমিন বাবুল, পৌর যুবলীগ সভাপতি মো. মনির খান, সাধারণ সম্পাদক মো. আবু কাউছার ভুঁইয়া, যুবলীগ নেতা মো. মনির হোসেন, জুয়েল রানা, সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল হান্নান, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান দীপংকর ঘোষ নয়নসহ আরো অনেককে। মূলত যুবলীগ নেতা মো. মনির খান উদ্যোগটা গ্রহন করেন।
এদিকে সড়ক বাজারে উপস্থিত হয়ে এ নিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলেন আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রাবেয়া আক্তার, আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. নূরে আলমসহ প্রশাসনের আরো কর্মকর্তা। এমন উদ্যোগকে তারাও স্বাগত জানিয়েছেন। যুবলীগ নেতা মনির খান বলেন, ‘নানা কারণে আখাউড়ার প্রাণকেন্দ্র সড়ক বাজারে চলাটা অনেকটা দায় হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় কয়েকজন শুভাকাঙ্খীর সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলি। তাদের উৎসাহে সড়কে নেমে আমরা কাজ শুরু করি। এতে সবার সার্বিক সহযোগিতা পেয়েছি।’
সাংবাদিক ও যুবলীগ নেতা মো. আব্দুল মমিন বাবুল বলেন, ‘পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে পৌর এলাকায় যানজট এখন কিছুটা বেড়েছে। রোজা রেখে মানুষজন যাতে করে ভোগান্তিতে না পড়ে সে লক্ষ্যে আমরা যানজট নিরসনে কাজ করে যাচ্ছি।’উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. মনির হোসেন বাবুল বলেন, ‘যানজটের এ সমস্যা আখাউড়াতে দীর্ঘদিনের। আমাদের রেলওয়ে জংশন স্টেশনে যাতায়তকারি ট্রেন যাত্রীদের জন্য এটা সবচেয়ে বড় ভোগান্তির বিষয়। ঈদকে সামনে রেখে যানজট এখন তীব্র আকার ধারণ করায় বিভিন্ন দিক চিন্তা করে আমরা সড়কে কাজ করছি।’