খোরশেদ আলম বাবুল শরীয়তপুর প্রতিনিধি : ভূল চিকিৎসায় নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগে জেলার গোসাইরহাটের বেসরকারি হাসপাতাল সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অমান্য করে চিকিৎসাসেবা প্রদান ও ডিগ্রিবিহীন চিকিৎসক দিয়ে অপারেশন করানোর অভিযোগে গোসাইরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সংলগ্ন ঢালী ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার অ্যান্ড হাসপাতাল এবং গরীবে নেওয়াজ হাসপাতাল অ্যান্ড ক্লিনিক বন্ধ রাখান সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। বুধবার (৬ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টায় শরীয়তপুরের সিভিল সার্জন আবুল হাদী মোহাম্মদ শাহ পরান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সিভিল সার্জন অফিস ও ভুক্তভোগীদের সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অমান্য করে গোসাইরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সংলগ্ন ঢালী ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার অ্যান্ড হাসপাতাল এবং গরীবে নেওয়াজ হাসপাতাল অ্যান্ড ক্লিনিক চিকিৎসা প্রদান করে আসছিল। এর মধ্যে ঢালী ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গত ৪ মার্চ নাগেরপাড়া ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামের হাবিবুর রহমান আজাদের স্ত্রী নাদিয়া বেগম প্রসব বেদনা নিয়ে ভর্তি হন।
রাতে ডিপ্লোমাধারী চিকিৎসক দিয়েই অ্যানেসথেসিয়া (চেতনানাশক ঔষধ) প্রয়োগ করে নাদিয়ার অপারেশন করা হয়। অপারেশনের মাধ্যমে জন্ম নেওয়া নবজাতকের শ্বাসকষ্টে দেখা দেয়। নবজাতকের শ্বাসকষ্টের চিকিৎসা করেন হাসপাতালটির নার্স ও ডিগ্রিবিহীন চিকিৎসকরা। চিকিৎসা করতে গিয়ে তারা ৩০ মিনিটের বেশি সময় ধরে নবজাতকের বুকে সিবিসি প্রয়োগ করতে থাকেন। অতিরিক্ত সিবিসি প্রয়োগের কারণে বাচ্চার বুক নীল হয়ে এলে তড়িঘড়ি করে নবজাতককে জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেন তারা। কিন্তু জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথেই শিশুটির মৃত্যু হয়।
শিশুটির বাবা হাবিবুর রহমান আজাদ বলেন, আমার সন্তান সিজারের পরও ভালো ছিল। কান্নার শব্দ আমরা শুনেছি। তারা আমার সন্তানকে আমার কাছে না দিয়ে বুকের মধ্যে চাপ দিতে থাকে। আধা ঘণ্টার বেশী সময় ধরে চেপে জখম করে বলে আমরা এখানে কিছু করতে পারব না। আপনারা ওকে আইসিইউতে নিয়ে যান। এরপর আমার সন্তানকে অন্য হাসপাতালে নেওয়ার পথে সে মারা যায়।
শরীয়তপুরের সিভিল সার্জন ডা. আব্দুল হাদী মো. শাহ পরান বলেন, গোসাইরহাটে দুটি বেসরকারি হাসপাতাল সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করেছি। এর মধ্যে ঢালী ডিজিটাল ডায়গনস্টিক সেন্টার ও হাসপাতালে নিয়ম বহির্ভূত কর্মকা-ে দুটি নবজাতক মারা গেছে। নবজাতকের মৃত্যু ও ডিগ্রিবিহীন চিকিৎসক দ্বারা চিকিৎসা প্রদান করার বিষয়টি তদন্ত করার জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কিউএনবি/আয়শা/০৬ মার্চ ২০২৪,/সন্ধ্যা ৭:৩০