বাদল আহাম্মদ খান ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি : আবারো অনেকটাই ‘ফাকা’ মাঠে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক এম.পি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে তিনি জয়ী হচ্ছেন বলে প্রায় নিশ্চিত। তার বিরুদ্ধে মাঠে থাকা অন্য দুই প্রার্থী সাধারণ মানুষের কাছে ‘অচেনা’ হওয়া সুযোগটা কাজে লাগাতে পারছেন মন্ত্রী। তবে মন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকা ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ আসনের কসবা ও আখাউড়া উপজেলায় প্রচারণায় কমতি নেই এতটুকুও। ভোটার টানার চ্যালেঞ্জে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি স্থানীয় সাধারন মানুষের সঙ্গে পৃথক পৃথক বৈঠক করা হচ্ছে।
এদিকে টানা নয়দিনের প্রচারণায় নামছেন আইনমন্ত্রী। আগামী ২৮ ডিসেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত তিনি প্রচারণায় অংশ নিবে। প্রচারণার অংশ হিসেবে তিনি প্রতিদিনই গণসংযোগের পাশাপাশি নির্বাচনী সভায় যোগ দিবেন। ছোট ছোট সভা করবেন বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের সঙ্গে। এর আগে তিনি টানা চারদিন কসবা ও আখাউড়া উপজেলার প্রচারণা চালিয়ে গেছেন। আসনটিতে শেষ পর্যন্ত তিনজন প্রার্থী মাঠে রয়েছেন। বর্তমান সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আনিসুল হক ছাড়াও রয়েছেন ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) শাহীন খান ও বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের ছৈয়দ জাফরুল কুদ্দুস।
এর মধ্যে আনিসুল হক আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী। এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকান্ড ও দেড় হাজার বেকারকে চাকরি দিয়ে এলাকায় বেশ সুনাম কুঁড়িয়েছেন। অন্য দুই প্রার্থীর দল সম্পর্কেই অবগত নয় এলাকার মানুষ। এছাড়া তাদেরকেও খুব একটা চিনেন না। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদরের বাসিন্দা ছৈয়দ জাফরুল কুদ্দুস ওরফে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ ছাড়াও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ ও ব্রাহ্মণবড়িয়া-৫ আসনে প্রার্থী হয়েছেন। স্থানীয়ভাবে তিনি ‘পীর’ হিসেবে পরিচিত। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার মাছিহাতা দরবার শরীফের পীর তিনি। তবে শাহীন খানের তেমন কোনো পরিচিতি নেই।
তবে বিজয় সহজ হলেও তাঁর পক্ষে ভোটের মাঠে লড়াইয়ের জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। দুই উপজেলার প্রতিটিতেই ওয়ার্ড ভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনার জন্য কমিটি গঠন করা হচ্ছে। একেকটি কমিটিতে এক থেকে ৩০০ জনকে রাখা হয়েছে। উপজেলার মূল কমিটির পাশাপাশি নির্বাচনে প্রচারণার জন্যও আলাদা কমিটি গঠন করা হয়েছে। মূলত বেশি বেশি ভোটার আনার লক্ষ্যে কাজ করছে আওয়ামী লীগ।
বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সভাপতি ছৈয়দ জাফরুল কুদ্দুস রবিবার সন্ধ্যায় বলেন, ‘দলের পরিচিতিটা আমি প্রধান মনে করি না। আমার ব্যক্তিগত ইমেজে এগিয়ে যাবো। তিনটি আসনেই আমার অনেক ভক্ত, মুরিদ রয়েছে। কোনো আসনের প্রার্থীকেই আমি শক্ত প্রতিদ্বন্দি মনে করি না।’কসবা উপজেলার দেলী গ্রামের বাসিন্দা শাহীন খান বলেন, ‘আমি ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র হিসেবে নির্বাচন করেছি। ভোটের দিক থেকে তিন নম্বর হয়েছি। এলাকায় মাঝে মাঝে এলেও খবর রেখেছি সব সময়। প্রতীক বরাদ্দ পেয়ে আমি প্রচারণায় নামবো। একজন শক্ত প্রতিদ্বন্দি থাকলেও আশা করছি আমার কোনো সমস্যা হবে না।’
এ বিষয়ে আখাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য দীপক কুমার ঘোষ বলেন, ‘আনিসুল হক নিসন্দেহে একজন সজ্জন মানুষ। প্রার্থী যেই হোক না কেন আনিসুল হকের বিজয় সব সময়ই নিশ্চিত। এখন শক্ত প্রতিদ্বন্দি না থাকলেও আমাদের প্রস্তুতিতে কোনো ঘাটতি নেই। উপজেলা থেকে শুরু করে প্রতিটি ওয়ার্ডে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রতীক বরাদ্দের পরই আমরা নির্বাচনী প্রচারণায় নেমে পড়বো।’
আখাউড়া পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মো. তাকজিল খলিফা কাজল বলেন, ‘কোনো ধরণের প্রলোভনে পরে নয়, নিস্বার্থভাবে সাধারন মানুষ এসে আইনমন্ত্রীর জন্য কাজ করছেন। আমরা চেষ্টা করছি কেন্দ্রে যেন বেশি ভোটার আসে। আইনমন্ত্রী এমনিতেই পাস করবেন- এ ধারণাটুকু বাদ দিতে সবাইকে অনুরোধে করেছি। আইনমন্ত্রীকে ভালোবেসে সবাই যার যার মতো করে স্বজনদেরকে নিয়ে কেন্দ্রে আসবেন বলে আমরা আশা করছি। এখনই সময় আইনমন্ত্রীর কাছে থেকে যে ভালোবাসা আমরা পেয়েছি সেটির প্রতিদান দেওয়ার। আমরা বেশ সাড়া পাচ্ছি। আশা করছি কেন্দ্রে কেন্দ্রে ব্যাপক ভোটারের উপস্থিতি হবে।’
কিউএনবি/আয়শা/২৫ ডিসেম্বর ২০২৩,/রাত ১১:১২