এম এ রহিম চৌগাছা (যশোর) : যশোরের চৌগাছায় হাটবাজার ও ফসল রক্ষায় পলিথিনের ব্যবহারের ফলে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে মানুষ ও প্রাণীকূল। পলিথিনের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় হাটবাজার গুলোতে দেদারছে কেনাবেচা হচ্ছে পলিথিন। ফসল রক্ষায়ও ব্যবহার হচ্ছে পলিথিন। সামান্য প্রয়োজনেও পণ্যসামগ্রী বহনের জন্য ক্রেতার হাতে তুলে দেওয়া হয় পলিথিনের ব্যাগ। কসমেটিক কিনে যেমন একটি পলিথিনের ব্যাগ পাওয়া যায়, তেমনি আলু, পটোল, মরিচ কিনলেও ধরিয়ে দেওয়া হয় পলিথিন ব্যাগ। আবার ওষুধ কিনেও পাওয়া যায় পলিথিন ব্যাগ। আর এই পলিথিনের ব্যাগ সামান্য ব্যবহারের পর যত্রতত্র ফেলে দেওয়ায় পরিবেশের ঝুঁকি বাড়ছে।
উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজার ঘুরে জানা গেছে, চৌগাছা বাজার, সলুয়া, সিংহঝুলী, পাশাপোল, খলশি, ধুলিয়ানী, মাশিলা, তিলকপুর, কচুবিলা, খড়িঞ্চা, পুড়াপাড়া, চাঁদপাড়া, ফাঁসতলা ও ঝাওতলা হাটে প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে পলিথিন। কৃষকরা পিয়ারা, টমেটা, ড্রাগন, আমসহ বিভিন্ন ফসল রক্ষায় ব্যবহার করছেন পলিথিন। এ ছাড়াও বিভিন্ন দোকানে ওয়ান টাইম ব্যাগ হিসেবে বেড়েছে পলিথিনের নানা ব্যবহার। যে কারণে রাস্তাঘাট, জলাশয়, নালা ও নর্দমায় যত্রতত্র পলিথিন পড়ে থাকতে দেখা যায়। আবার অনেক সময় ব্যবহারকারীরা ব্যবহারের পর পলিথিন নদী-নালা ও জলাশয়ে ফেলে দেওয়ায় এ অপব্যবহারে যত্রতত্র পলিথিন পড়ে থাকতে দেখা যায়। যে কারণে পরিবেশের ওপর নানা ধরনের ক্ষতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে। বিশেষ করে আবাদী জমির ক্ষেতে পলিথিন ফেলে রাখায় উরবরতা হ্রাস পাবে।
পুড়াপাড়া হাটের লবণ ব্যবসায়ী জিয়াউর রহমান বলেন, আগে পদ্দপাতা ও কলাপাতা ব্যবহার করে লবণ বিক্রি করা হতো। এখন আর পদ্দ ও কলাপাতায় কেউ লবণ নিতে চাই না। আর পদ্দপাতা পাওয়াও যায় না। সে জন্য পাতায় লবণ বিক্রি করতে বসে থাকতে হয় না। কালক্রমে এখন আর সে ব্যবস্থা নেই। হাতের কাছে খুব সহজে পলিথিন পাওয়া যায়। আর তাতে গুণমান ঠিক রেখে খুব দ্রুত লবণ বিক্রি করা যায়। আর তাছাড়া পলিথিনে লবণ বিক্রি করা খুব সহজ, সেজন্য এর ব্যবহারও বেড়েছে।
চৌগাছা বাজারের সবজি ব্যবসায়ী আব্দুল করিম বলেন, আগে সবজি ক্রেতারা ব্যাগ হাতে বাজারে আসতেন। এখন তারা খালি হাতে এসে বাজার সবজি কিনে পলিথিন ব্যাগে করে নিয়ে যান। পলিথিন দিতে না পারলে ক্রেতারা অন্য দোকান থেকে সবজি কিনে নিয়ে যান। কাজেই বিক্রি ঠিক রাখতে বাধ্য হয়ে পলিথিন ব্যাগ রাখি। চৌগাছা পৌর শহরের ভ্যান চালক আব্দুস শুকুর বলেন, আমি সাধারণ মানুষ, পলিথিনের ক্ষতিকারক প্রভাব স¤পর্কে ধারণা কম। আর পলিথিন ব্যবহারে যে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে প্রশাসন সে ব্যাপারে কোনো কার্যকর ভূমিকা পালন করছে না।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুসাব্বির হুসাইন বলেন, পলিথিনের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর দিক হলো, এটি অপচন শীল। কাজেই পরিত্যক্ত কৃষি জমিসহ যে কোনো মাটিতে মিশেই জমির উর্বরতার পাশাপাশি পরিবেশের ক্ষতিকর নানা প্রভাব ফেলে পলিথিন। এছাড়া নালা, খালে ও বিলে যাওয়া পলিথিন মাছ খেয়ে ফেললে আবার সেই মাছ মানুষ খেলে মানব শরীরে নানা রকম রোগব্যাধি সৃষ্টি হয়। এ ব্যাপারে এখনই সচেতন হওয়া দরকার। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুস্মিতাশাহ বলেন, খোঁজখবর নিয়ে পলিথিনের বিক্রি ও ব্যবহার বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কিউএনবি/আয়শা/২৩ ডিসেম্বর ২০২৩,/রাত ৮:১৪