আন্তর্জাতিক ডেস্ক : দুই নেতার বৈঠকে ইউক্রেন যুদ্ধ, গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসন এবং জ্বালানি তেলের বিষয়টি সবচেয়ে গুরুত্ব পায় বলে জানায় বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম।
বুধবার আমিরাতে পা রাখতেই দেশটির আমিরের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন পুতিন। প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের সঙ্গে করেন সাক্ষাৎ। তার সম্মানের আবুধাবিতে আয়োজন করা হয় গান স্যালুট ও ফ্লাই পাস্ট।
আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক শেষ করেই কঠোর নিরাপত্তায় উড়াল দেন সৌদি আরবের উদ্দেশ্যে। রিয়াদে পৌঁছেই সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে বৈঠক করেন পুতিন। বৈঠকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, গাজায় ইসরাইলি বর্বরতা ও আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম নিয়ন্ত্রণের বিষয় সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পায়।
সৌদি যুবরাজের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে পুতিন বলেন, ‘দুই বন্ধুত্বপূর্ণ দেশের মধ্যকার সম্পর্কোন্নয়নে কোনো শক্তিই আমাদের বাধা দিতে পারবে না।’
বৈঠকে পুতিন সৌদি যুবরাজকে মস্কো সফরের আমন্ত্রণ জানিয়ে বলেন, ‘এই অঞ্চলে কী ঘটছে সে বিষয়ে আপনার সঙ্গে তথ্য ও মূল্যায়ন আদান-প্রদান করা আমাদের সবার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের এই বৈঠক অবশ্যই সময়োপযোগী।’
এ সময় সৌদি যুবরাজও দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্কের প্রশংসা করেন। সৌদি রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থা এসপিএ মোহাম্মদ বিন সালমানকে উদ্ধৃত করে বলেছে, ‘মোহাম্মদ বিন সালমান বলেছেন, এই সুসম্পর্ক মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা দূর করতে অনেকটাই সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে।’
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর পর পুতিনের এটিই প্রথম মধ্যপ্রাচ্য সফর। এর আগে, সবশেষ ২০১৯ সালে এই দুই দেশে সফর করেন তিনি।
পুতিনের এই সফরকে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতির টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে দেখছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসন শুরুর পর যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো নেতানিয়াহু সরকারকে একতরফাভাবে অন্ধ সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। এতে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ক্ষোভ বেড়েছে মধ্যপ্রাচ্যে। আর সেই সুযোগে আরব দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক আরও জোরদার করছে মস্কো।
বিশেষ করে, দীর্ঘদিনের বৈরিতা ভুলে সৌদি আবর ও ইরানের সম্পর্ক জোরদারের কারণে মধ্যপ্রাচ্যে সুদৃঢ় হচ্ছে রাশিয়ার অবস্থান।সাম্প্রতিক সময়ে তার বাস্তব প্রতিফলনও দেখা গেছে। ইউক্রেনে রুশ অভিযান শুরুর পর বিভিন্ন বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আহ্বানে সাড়া দেয়নি আরব দেশগুলো।
আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কম রাখতে যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোকে জ্বালানি উৎপাদন বাড়ানোর আহ্বান জানালেও কেউই সাড়া দেয়নি। উল্টো রাশিয়ার সঙ্গে হাত মিলিয়ে তেলের উৎপাদন কমিয়েছে আরব দেশগুলো।
কিউএনবি/আয়শা/০৭ ডিসেম্বর ২০২৩,/সন্ধ্যা ৭:৪৮