মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১:৪৬ অপরাহ্ন

প্রতি মাসেই কমছে রিজার্ভ, কোথায় গিয়ে থামবে?

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ২৯ নভেম্বর, ২০২৩
  • ১৮৩ Time View

ডেস্ক নিউজ : বাংলাদেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ধরে রাখতে সরকার বেশ কিছু পদক্ষেপ নিলেও এখনো থামছে না রিজার্ভের ঘাটতি। বাংলাদেশ ব্যাংকের দেয়া তথ্য থেকে দেখা যাচ্ছে প্রায় প্রতি মাসেই রিজার্ভের পরিমাণ আগের মাসের তুলনায় কমছে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ডলারের আয় ও ব্যয়ের মধ্যে ভারসাম্য না থাকার কারণে প্রতি মাসে প্রায় এক বিলিয়ন ডলারের মতো ঘাটতি থাকছে।

বিশ্ব ব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, “বাজারে ডলারের যে অভাব রয়েছে সেটা আংশিক পূরণ করার জন্য প্রতি মাসে একশ কোটি ডলার বাংলাদেশ ব্যাংক বিক্রি করছে। এভাবে বিক্রি চলতে থাকলে রিজার্ভ কমতেই থাকবে। আর এটা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে বলতে গেলে বলতে হবে যে, সেটা আসলে শূন্যের নিচে নামার সুযোগ নাই!”

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ নভেম্বরে মোট রিজার্ভের পরিমাণ ২৫.১৬ বিলিয়ন ডলার। আর আইএমএফ এর প্রস্তাবিত বিপিএম৬ পদ্ধতি অনুসরণ করে করা হিসাব অনুযায়ী, রিজার্ভ ১৯.৫২ বিলিয়ন ডলার। চলতি বছরের শুরু থেকে নভেম্বর পর্যন্ত রিজার্ভের পরিমাণ বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, জানুয়ারি মাসে মোট রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৩২.২২ বিলিয়ন ডলার এবং সর্বশেষ নভেম্বরে রিজার্ভ ২৫.১৬ বিলিয়ন ডলারে এসে দাঁড়িয়েছে।

এই এগারো মাসের মধ্যে শুধু জুন মাসেই মোট রিজার্ভের পরিমাণ আগের মাসের তুলনায় কিছুটা বেড়েছিল। বাকি মাসগুলোতে ক্রমান্বয়ে রিজার্ভের পরিমাণ কমেছে। এর মধ্যে সেপ্টেম্বরে রিজার্ভের পরিমাণ প্রায় তিন বিলিয়ন ডলার কমেছে। এদিকে গত জুন মাস থেকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা সংস্থা আইএমএফ এর নির্ধারিত হিসাব পদ্ধতি যা ব্যালেন্স অব পেমেন্ট ম্যানুয়াল-সিক্সথ এডিশন বা সংক্ষেপে বিপিএম৬ অনুযায়ী বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের গণনা শুরু হয়।

জুন মাসে এই পদ্ধতি অনুযায়ী, রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২৪.৭৫ বিলিয়ন ডলার। নভেম্বরে এটি ১৯.৫২ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়ায়। এই ছয় মাসে রিজার্ভ প্রায় প্রতিবারই আগের মাসের তুলনায় কমেছে। বলা হচ্ছে, বিপিএম অনুযায়ী রিজার্ভের পরিমাণ যে ১৯ বিলিয়ন ডলারের কিছু বেশি দেখানো হচ্ছে সেটি আসলে আরো কমবে। কারণ এর থেকে আইএমএফ এর এসডিআর খাতে থাকা অর্থ, ব্যাংকগুলোর বৈদেশিক মুদ্রা ক্লিয়ারিং হিসাবে থাকা অর্থ এবং আকুর বিল পরিশোধ বাবদ অর্থ বাদ দিলে রিজার্ভ আরো কমে আসবে।

অর্থনীতিবিদ আহসান এইচ মনসুর বলেন, “বর্তমান সময়ের সমস্যা হচ্ছে সরকারের অনেক অপরিশোধিত বিল রয়েছে – যেগুলো এখনো শোধ করা হয়নি।” তিনি বলেন, “এগুলো পুরোটা শোধ করা হলে রিজার্ভ হয়তো অনেক কমে যাবে।”তবে এক্ষেত্রে দ্বিমত প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রতিষ্ঠানটির মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, দুইটি পদ্ধতিতে রিজার্ভ হিসাব করে বাংলাদেশ ব্যাংক। একটা হচ্ছে গ্রস বা মোট, অর্থাৎ যে পরিমাণ বিদেশি সম্পদ হাতে আছে, যা নভেম্বরে ২৫.১৬ বিলিয়ন। আরেকটা হচ্ছে বিপিএম৬ অনুযায়ী হিসাব যা ১৯.৫২ বিলিয়ন।

তিনি বলেন, “এখন আপনি যদি এর থেকে আবার আরো কিছু বাদ দিতে চান, তাহলে সেটার বেসিসটা কী? লায়াবিলিটিস (দায়) তো আমার কত লায়াবিলিটি আছে, সেটা কি আমি সব হিসাব করবো? আইএমএফ এর কাছে যে ডিপোজিটটা আছে সেটা কি আমার টাকা না?”

মি. হক মনে করেন, আইএমএফ এর পদ্ধতি অনুসরণ করে রিজার্ভের হিসাবের পরও মানুষকে আসলে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। কারণ আইএমএফর পদ্ধতি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত একটি পদ্ধতি। “তারপরও কেন প্রশ্নটা আসছে?,” বলেন তিনি। অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন অবশ্য বলেন, ব্যাংকে যে অর্থ থাকে তা হিসাবধারীর নিজের টাকা হলেও তার যে দায় আছে সেগুলো ব্যবহার করা যায় না। “তাই ব্যবহারযোগ্য টাকাটাই আসলে হিসাবধারীর মূল অর্থ বলে বিবেচিত হয়। একই পদ্ধতি রিজার্ভের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য”, মন্তব্য তার।

কিউএনবি/আয়শা/২৯ নভেম্বর ২০২৩,/বিকাল ৩:৩৩

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

December 2025
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৬
IT & Technical Supported By:BiswaJit