মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:০০ অপরাহ্ন

পদ্মাপারের রান্নার স্বাদ প্রচারে ছুটছেন দেশ-বিদেশে

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ১৯ নভেম্বর, ২০২৩
  • ১২২ Time View

লাইফ ষ্টাইল ডেস্ক : টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া; লাল-সবুজের এই দেশটির প্রায় ৯০ শতাংশ জেলার রান্নার ঘ্রাণই শুধু নেননি বরং সেই রান্না নিয়ে করেছেন নিজের মতো করে পরীক্ষা নিরীক্ষা; করেছেন বিস্তর কাটাছেঁড়াও।

 একটি আন্তর্জাতিক সংস্থার সাথে দীর্ঘ কাজ করার সুযোগে লুফে নিয়েছেন বাংলাদেশের হরেকরকম রান্নার স্বাদ-বর্ণ ও গন্ধ। আর সেই চেখে দেখা বাংলাদেশি রান্নার স্বাদ-ই এখন বিশ্ব-দরবারে তুলে ধরতে করছেন বাংলাদেশি নানান পদের রান্নার উৎসব।
 
বলছি বাংলাদেশি গৃহবধূ নয়না আফরোজের কথা। মধ্য বয়স্কা এই নারী এখন বাংলাদেশি রান্নার প্রচার করে বেড়াচ্ছেন ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে।
 
১৩০ কোটি মানুষের দেশ ভারত। নানা ভাষা, সংস্কৃতি এবং খাদ্যাভাসের ছোট ছোট অধ্যায় থেকে যে কোনো একটি রাজ্যের রান্নার উপকরণ নিয়েই বড়সড় উপন্যাস রচনা করা যায়; সেখানে বাংলাদেশি রান্না, সেটাও আবার ভর্তা-ডালের মতো উপকরণের উৎসব; রীতিমত দুঃসাহসিক তো বটেই; বড়সড় চ্যালেঞ্জেরও।
 
সেই চ্যালেঞ্জেরই সঙ্গী হয়েছে কলকাতার অন্যতম মধ্য ও উচ্চবিত্তদের ‘খাবার ঘর’ ৬ বালিগঞ্জ প্লেস। আর খাবারে ‘বড্ড চুজি’ এই দুই শ্রেণির পাতে বাংলাদেশি শুটকি, আলু, টাকি মাছের মতো ভর্তার ম্যানু পরিবেশন করেই খ্যান্ত হচ্ছে না আয়োজকরা। বরং সামনে দিচ্ছেন বাংলাদেশি হরেক রকম ডাল। এমনকি বাংলাদেশের সব খাবারের সঙ্গে থাকা কমন ম্যানু মরিচ ভর্তাও।
 
আর সেটাই প্রায় কবজি ডুবিয়ে সাবার করে দিচ্ছেন রসিক ভুরি ভোজনে অভ্যস্ত বাঙালি-অবাঙালি সবাই। আর যাদের সাথে ন্যূনতম রয়েছে পদ্মাপারের শিকরের সম্পর্ক-তারা তো অগ্রিম বুক করে বসে পড়ছেন “বাংলাদেশি ভর্তা-ডাল” খেয়ে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলতে তুলতে ফেলে আসা শৈশব-কৈশরের স্মৃতি উসকাতে।
 
পুরো আয়োজনের সূচনা হয় ১০ নভেম্বর দুপুরে। কলকাতার বাংলাদেশ উপদূতাবাসের নিযুক্ত উপরাষ্ট্রদূত আন্দালিব ইলিয়াস ”আমার রসনার বাংলা” আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন বাংলার ডাল ও ভর্তা উৎসব। দশ দিনের এই বাংলাদেশি ডাল-ভর্তা উৎসবের পর্দা নামার কথা ১৯ নভেম্বর রাতে।
 
শুধু কলকাতার দক্ষিণের বালিগঞ্জ ৬ প্লেসে এই উৎসব হয়নি, হয়েছে উত্তরের সল্টলেক, নিউটাউনসহ প্রতিষ্ঠানের সব আউটলেটে। বলা ভালো উত্তর থেকে দক্ষিণ, গোটা কলকাতাসহ শহরতলীর খেতে ভালোবাসেন-এমন মানুষের ভিড়এখন বাংলাদেশি ভর্তা-ডাল উৎসবে; বলছেন রান্নার গবেষক নয়না আফরোজ।তার ভাষায়, কলকাতার মেয়ে আমি, কর্মসূত্রে বাংলাদেশে গিয়ে ভালোবেসে জড়িয়ে যাই ঢাকার মাটির সাথে। আন্তর্জাতিক সংস্থায় কাজ করার সুযোগে ঘুরতে হয় বাংলাদেশের গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে..। ঘুরে বেড়ানোর সুযোগে গ্রামের হেঁসেল গুলোর ঘ্রাণ আমায় মুগ্ধ করে। ঢুঁ মারি সেই সব মা-বোনদের রান্না ঘরে। চেখে দেখি সব রান্নার স্বাদ! নিজের মধ্যে এসবকের কারণে এক ধরনের শিহরণও জাগে। সেখান থেকেই রান্না শেখার চিন্তা এবং এরপর গবেষণাও যা প্রায় ২৩ বছরের বেশি।

এই গবেষক আরও বলছেন, ডাল-ভর্তা উৎসবের আগেও কলকাতা, উত্তর কিংবা দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বাংলাদেশি রান্নার উৎসব করেছি। বাংলাদেশের মাটির গন্ধ মেশানো অকৃত্রিম রান্নার স্বাদ বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরার আগে প্রতিবেশি ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের মানুষের কাছে তুলে ধরছি। ভারতে বাংলাদেশি রান্নার ভ্রমণ শেষ হলে বিশ্বের অন্য দেশে ছুটে যাবো; বলবো বাংলাদেশি রান্নার সাতকাহন।

সিক্স বালিগঞ্জ প্লেসের পরিচালক সুশান্ত সেনগুপ্ত সময় সংবাদকে বলছেন, বাংলাদেশি ডাল-ভর্তার উৎসবে সাড়া মিলেছে। এই ধরনের বাংলাদেশি রান্নার উৎসব আগামীতেও করার প্রত্যাশা রয়েছে। ইলিশ উৎসবও পরিকল্পনায় রয়েছে। আমার রসনার বাংলা নামের ডাল ভর্তা উৎসবের মূলত ৮ ধরনের ভর্তার রয়েছে, যেমন চিংড়ি ভর্তা, তিল-বাদামের ভর্তা, বেগুন-কাঁচা টমেটোর ভর্তা, আলুর ভাজা ভর্তা পোস্ত দিয়ে, তিসি বালাচাও ভর্তা, টাকি ভর্তা, পাঠার মাংসের ভর্তা, ডিম কলিজা ভর্তা। ইলিশের মাথা দিয়ে মাসকালাই, খাসির মাংস দিয়ে মুগ ডাল, হাতেমাখা মুশরির ডাল, ঘি অরহরের ডাল দিয়ে সাজানো ডালের আইটেম। উৎসবে এসে কব্জি ঢুবিয়ে খেয়েছেন তরুণ সবীর কুমার। তার ভাষায়, অনেক স্বাদ। বাংলাদেশি রান্না এবং খাবার ভীষণ প্রিয়। তাই যেখানেই বাংলাদেশি খাবারের উৎসবের খবর পান; চেখে নিতে সেখানেই ছুটে যান পরিবার নিয়ে।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/১৯ নভেম্বর ২০২৩,/বিকাল ৪:০৮

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

December 2025
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৬
IT & Technical Supported By:BiswaJit