বাদল আহাম্মদ খান ,ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি : মাদক পাচারের অভিযোগ উঠায় বাংলাদেশ রেলওয়ে থানা পুলিশের এক কর্মকর্তাসহ দু’জনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। ওই দুই অভিযুক্ত পুলিশ মিলে আন্ত:নগর ট্রেনে করে আখাউড়া থেকে ময়মনসিংহে গাঁজা পাচার করছিলেন। তারা হলেন, ময়মনসিংহ রেলওয়ে থানায় কর্মরত কনস্টেবল সোহেল রানা (২৬) ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া রেলওয়ে থানায় কর্মরত সহকারি উপ-পরিদর্শক (এএসআই) তারেক আলী। এর মধ্যে সোহেল রানার কাছ থেকে তিন কেজি নয়শ’ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার করা হয়। রেলওয়ে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তারের পর সে জানায় তারেক আলীর কাছ থেকে সে গাঁজা বুঝে নেয়।সংশ্লিষ্ট পুলিশ সূত্র জানায়, গত ৬ নভেম্বর চট্টগ্রাম থেকে ময়মনসিংহ অভিমুখী আন্ত:নগর বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেনে মাদক পাচারের এ ঘটনা ঘটে। অভিযানে গ্রেপ্তার হওয়া সোহেল রানাকে মঙ্গলবার আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়। তার রিমান্ড আবেদন করা হবে।
স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, আখাউড়া রেলওয়ে জংশন থানা পুলিশের একাধিক সদস্য মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িয়ে আছে। এর আগেও এক পুলিশ সদস্য মাদকসহ ধরা পড়ে। পুলিশ সদস্যরা টিকিট কালোবাজারি, ট্রেনে বিনা টিকিটে ভ্রমণে যাত্রীদের সহায়তা করার অভিযোগ আছে। সম্প্রতি স্টেশনটিতে চুরি, ছিনতাইয়ের ঘটনাও বেড়ে গেছে। সে অনুযায়ি পুলিশের তৎপরতা নেই। কিশোরগঞ্জের ভৈরব রেলওয়ে থানায় দায়ের হওয়া মামলা ও সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ৬ নভেম্বর বেলা সাড়ে তিনটায় বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেনটি কিশোরগঞ্জের ভৈরব রেলওয়ে স্টেশন ছেড়ে যায়। নিয়মিত দায়িত্বের অংশ হিসেবে ট্রেনে তল্লাশি চালাচ্ছিলেন ভৈরব রেলওয়ে থানার উপ-পরিদর্শক (এস.আই) নাজিউর রহমানসহ অন্যান্যরা। ট্রেনটি বাজিতপুর স্টেশন অতিক্রমের সময় সোহেল রানার হাতে থাকা ব্যাগ থেকে তিন কেজি ৯০০ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার করা হয়। এ সময় সোহেল রানাকে গ্রেপ্তার করে ভৈরব থানায় নিয়ে আসা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সোহেল রানা জানায় আখাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশন থেকে তিনি গাঁজার ব্যাগটি নেন। আখাউড়া রেলওয়ে থানায় কর্মরত তারেক আলী তাকে এ ব্যাগটি দেন। এ ঘটনায় এস.আই নাজিউর রহমান বাদী হয়ে ভৈরব রেলওয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন। গ্রেপ্তার হওয়া সোহেলকে মঙ্গলবার আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়। ওই দিনই দুই পুলিশকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
এ বিষয়ে মামলার বাদী নাজিউর রহমান বলেন, ‘সন্দেহ হলে সোহেল রানার ব্যাগে তল্লাশি চালানো হয়। এ সময় তার ব্যাগ থেকে গাঁজা উদ্ধার করা হয়। এ বিষয়ে রেলওয়ে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এস.আই আব্দুস সাত্তার মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছেন। এ বিষয়ে তিনি ভালো বলতে পারবেন।ভৈরব থানার এস.আই মো. আব্দুস সাত্তার বুধবার সকালে মোবাইল ফোনে বলেন, ‘গ্রেপ্তার হওয়া সোহেলকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। তার রিমান্ড আবেদন করা হবে। সোহেল রানার কথা মতো তারেক আলী এ ঘটনায় জড়িত কিনা সে বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।আখাউড়া রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. জসিম উদ্দিন খন্দকার বলেন, ‘তারেক আলীকে বরখাস্ত করার কথা জানানো হয়েছে। তবে কি কারণে বরখাস্ত হয়েছে সেটি আমি জানি না। গাঁজা পাচারের সঙ্গে তার জড়িত থাকার বিষয়টিও আমার জানা নেই।’
কিউএনবি/অনিমা/০৭ নভেম্বর ২০২৩/বিকাল ৩:১১