ডেস্কনিউজ : তওবা মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভের অন্যতম মাধ্যম। এটি সফলতার চাবিকাঠিও বটে। তওবার অন্যতম পদ্ধতি হলো নামাজ। গোনাহ হয়ে গেলে তওবার নিয়তে নামাজ পড়াকে তওবার নামাজ বলে। গোনাহ সংঘটিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এ নামাজ পড়া উচিত। বিগত জীবনের গোনাহ থেকে তওবার নিয়তেও তা পড়া যায়। বিজ্ঞ আলেমদের মতে, তওবার নামাজ মুস্তাহাব।
আমাদের উচিত, কখনো কোনো গোনাহ সংঘটিত হয়ে গেলে যত দ্রুত সম্ভব মহান আল্লাহর কাছে তওবা করা। এর একটি উত্তম পদ্ধতি হলো, উত্তমরূপে অজু করে দুই রাকাত নামাজ পড়ে তওবা করা।
সময়সীমা : তিন মুহূর্ত আসার আগ পর্যন্ত মহান আল্লাহ তার বান্দার তওবা কবুল করেন। কিন্তু এরপর আর তওবা কবুল করা হয় না। সেই তিন মুহূর্ত হলো-
ক. মৃত্যু আসার আগ পর্যন্ত। সুরা আন নিসা : ১৮
খ. আজাব চলে আসার আগ পর্যন্ত। সুরা মুমিনুন : ৮৫
গ. পশ্চিমাকাশে সূর্যোদয় হওয়ার আগ পর্যন্ত। মুসলিম : ৬৭৫৪
নামাজের নিয়ম : তওবার নামাজের পদ্ধতি ওপরে উল্লিখিত হজরত আবু বকর (রা.)-এর হাদিসে স্পষ্ট বর্ণিত আছে। প্রথমে উত্তমরূপে অজু করতে হবে। তারপর একাগ্রচিত্তে নফল নামাজের মতো দুই রাকাত নামাজ পড়বে। তওবার নামাজের জন্য নির্দিষ্ট কোনো সুরা নেই। যেকোনো সুরা দিয়েই তওবার নামাজ পড়া যায়। এই নামাজের অজু ও নামাজের মাঝখানে কোনো দুনিয়াবি কাজ বা কথা না বলা উত্তম। কারণ হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আমার মতো এভাবে অজু করবে, অতঃপর দুই রাকাত নামাজ আদায় করবে এবং এর মাঝখানে দুনিয়ার কোনো খেয়াল করবে না, তার আগের গোনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।’ সহিহ বোখারি : ১৫৯
নামাজ শেষে তাসবিহ-তাহলিল পড়বে, আল্লাহর প্রশংসা করবে এবং ইস্তিগফার পড়ে মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করবে।
দোয়া : তওবার শ্রেষ্ঠ দোয়া হলো, সাইয়েদুল ইস্তিগফার। নিম্নে তার উচ্চারণসহ অর্থ তুলে ধরা হলো, ‘আল্লাহুম্মা আনতা রাব্বি, লা-ইলাহা ইল্লা আনতা খলাকতানি, ওয়া আনা আবদুকা, ওয়া আনা আলা আহদিকা, ওয়া ওয়াদিক মাসতাতাতু, আউজুবিকা মিন শাররি মা সানাতু, আবু-উ লাকা বিনি মাতিকা আলাইয়া ওয়া আবু-উ বিজাম্বি ফাগফিরলি ফা-ইন্নাহু লা ইয়াগফিরুজ জুনুবা ইল্লা আনতা।’
অর্থ : হে (দয়াময়) আল্লাহ! আপনি আমার রব, আপনি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। আমাকে আপনি সৃষ্টি করেছেন, আমি আপনার বান্দা। আমি যথাসাধ্য আপনার সঙ্গে কৃত প্রতিশ্রুতির ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকব। আমি আমার নিকৃষ্ট আমল থেকে আপনার কাছে আশ্রয় চাই, আপনার যে অসংখ্য নিয়ামত ভোগ করছি এজন্য কৃতজ্ঞতা স্বীকার করছি। আমি আমার কৃত অপরাধ স্বীকার করছি। অতএব আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিন। আপনি ছাড়া অপরাধ ক্ষমা করার কেউ নেই। সুনানে আবু দাউদ : ৫০৭০
উল্লেখ্য, কারও এই দোয়া মুখস্থ করা সম্ভব না হলে সে নিজের ভাষাতেও মহান আল্লাহর কাছে কান্নাকাটি করে তওবা করতে পারবে। ইনশাআল্লাহ, মহান আল্লাহ ক্ষমা করে দেবেন।
কিউএনবি/আয়শা/২১ অক্টোবর ২০২৩,/বিকাল ৫:৫৪