স্টাফ রিপোর্টার,মনিরামপুর(যশোর) : যশোরের মনিরামপুরে দূর্বৃত্তরা গুলি করে নেহালপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি প্রভাষক উদয় শংকর বিশ্বাসকে হত্যা করেছে। গতকাল সোমবার সকাল সাতটার দিকে উপজেলার পাঁচাকড়ি গ্রামে উদয় শংকরের বাড়ির সামনে এ ঘটনা ঘটে। নিহত উদয় শংকর বিশ্বাস পাঁচাকড়ি গ্রামের মৃত রনজিত কুমার বিশ্বাসের একমাত্র ছেলে। এছাড়া উদয় শংকর নেহালপুর স্কুল এন্ড কলেজের সংস্কৃতি বিভাগের প্রভাষক ছিলেন। তবে এ ঘটনায় জড়িত কাউকে পুলিশ আটক করতে পারেনি।
নিহতের স্ত্রী অনিন্দীতা বিশ্বাষ ও পুলিশ জানায়, এক ছেলে সন্তানের জনক উদয় শংকর(৪০) সোমবার সকাল ছয়টার দিকে তরিতরকারি কেনার জন্য বাড়ি থেকে মোটরসাইকেলে করে টেকারঘাট বাজারের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। বাজার করে ফেরার পথে সকাল সাতটার দিকে নিজের বাড়ির সামনে পৌছলে পিছন থেকে অজ্ঞাত পরিচয়ের দুই যুবক মোটরসাইকেলে এসে তাকে বেরিকেড দেয়। এ সময় উদয় শংকর রাস্তার উপর লুটিয়ে পড়লে সন্ত্রাসীরা তার বুকে অস্ত্র ঠেকিয়ে পর পর দুই রাউন্ড গুলি করে মোটরসাইকেলে করে পালিয়ে যায়। এ সময় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধারের পর খুলনা ৫০০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে জরুরী বিভাগের চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষনা করেন। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরন করেন।
এ দিকে খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলাল হোসাইন, সহকারি পুলিশ সুপার(মনিরামপুর সার্কেল) আশেক সুজা মামুন, ওসি শেখ মনিরুজ্জামানসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন করতে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছে। এদিকে হত্যাকান্ডের ঘটনাস্থলের অদুরে অবস্থিত দশোরথ বিশ্বাসের চায়ের দোকান। দশোরথ বিশ্বাস বলেন, ঘটনার আধাঘন্টা আগে হেলমেট পরিহিত অপরিচিত দুই যুবক মোটরসাইকেলে এসে তার কাছে উদয় সম্পর্কে জানতে চেয়েছিল। পরে তারা চা খেয়ে চলে যায়। তারা চলে যাবার আধাঘন্টা পরই হত্যাকান্ডের এ ঘটনা ঘটে। ধারনা করা হচ্ছে ওই যুবকই এ হত্যাকান্ডে অংশ নেয়। তবে পুলিশ কাউকে আটক করতে পারেনি।
ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহুল আমিনসহ অনেকেই জানিয়েছেন, উদয় ছিলেন টেকারঘাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি। ওই প্রতিষ্ঠানে মোট পাঁচজন কর্মচারী নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এর মধ্যে গত সপ্তাহে তিনজন নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে নিয়োগ দিতে প্রায় ৪০ লাখ টাকার ঘুষ বাণিজ্য করা হয়। অপরদিকে ম্যানেজিং কমিটি গঠন নিয়ে স্থানীয় পবিত্র বিশ্বাসের সাথে উদয় শংকরের বিরোধ চলে আসছিল। এলাকাবাসীর ধারনা কমিটি গঠন ও নিয়োগ সংক্রান্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটতে পারে। তবে ঘটনার পর থেকে প্রতিপক্ষ পবিত্র বিশ্বাসকে এলাকায় দেখা যায়নি।
থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) শেখ মনিরুজ্জামান জানান, তদন্ত চলছে। আশা কার হচ্ছে স্বল্প সময়ের মধ্যে হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন এবং হত্যাকারীদের আটক করা সম্ভব হবে। গতকাল রাতে এ রিপোর্ট লেখার সময় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছিল। এ দিকে খুলনা ৫০০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের মর্গ থেকে ময়না তদন্ত শেষে বিকেল চারটার দিকে উদায়ের মরদেহ আনা হয় পাঁচাকড়ি গ্রামের বাড়িতে। এসময় সেখানে স্বজনদের আহাজারিতে পরিবেশ ভারি হয়ে ওঠে। পরে টেকারঘাট শ্মশানঘাটে তার মরদেহ সৎকার করা হয়।
কিউএনবি/আয়শা/১৬ অক্টোবর ২০২৩,/বিকাল ৫:৫০