স্টাফ রিপোর্টার,মনিরামপুর(যশোর) : যশোরের মনিরামপুরে এক ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের স্টাফকে অপহরনের পর পাঁচলাখ টাকা মুক্তিপন দাবি করার অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি জানাজানি হবার পর ১২ ঘন্টার মধ্যে পুলিশ সাড়াশি অভিযান চালিয়ে বুধবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে পৌরশহরের গরুহাট এলাকার একটি বাসা থেকে অপহৃত স্টাফ সাজিদ হাসানকে উদ্ধার করে। এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ উপজেলা চেয়ারম্যান নাজমা খানমের ব্যক্তিগত সহকারি(এপিএস) আশিকুর রহমান খানকে আটক করেছে। আশিকুর রহমান খান উপজেলার চালুয়াহাটি ইউনিয়নের ত্রিপুরাপুর গ্রামের মিজানুর রহমান খানের ছেলে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মেমার্স অর্থ প্রাইভেট লিমিটেডের পরিচালক কাজল বিশ্বাস জানান, তিনি সম্প্রতি মনিরামপুর, বাঘারপাড়া ও ঝিকরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে ৩৩ জন স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগের প্রকল্পটি পান। ইতিমধ্যে নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। সে মোতাবেক সোমবার ঢাকা থেকে বিশেষ কাজে প্রতিষ্ঠানের স্টাফ সাজিদ হোসেনকে মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.তন্ময় বিশ্বাসের কাছে পাঠান।
কিন্তু অভিযোগ রয়েছে মঙ্গলবার বিকেল তিনটার দিকে মনিরামপুর পৌরশহরের দোলখোলা মোড়ে পৌছলে তিনজন যুবক অস্ত্র ঠেকিয়ে সাজিদকে অপহরন করে। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের পরিচালক কাজল বিশ্বাস অভিযোগ করেন, রাত ১০ টার পর উপজেলা চেয়ারম্যান ও যশোর জেলা যুব মহিলালীগের সহসভাপতি নাজমা খানমের পিএস আশিকুর রহমান তার মোবাইলফোনে ফোন দিয়ে মুক্তিপন হিসেবে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেন।
বিষয়টি জানিয়ে তিনি পুলিশের জরুরী সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করেন। পরে মনিরামপুর থানা পুলিশের একটি টিম সাড়াশি অভিযান চালিয়ে পৌরশহরের গরুহাট এলাকার পাশের একটি বাসা থেকে সাজিদ হাসানকে উদ্ধার করে।এ সময় পুলিশ সেখান থেকে আটক করে উপজেলা চেয়ারম্যান নাজমা খানমের এপিএস আশিকুর রহমানকে। অবশ্য উপজেলা চেয়ারম্যান নাজমা খানম জানান, তিনি গত জুলাই মাসে আশিককে এপিএস থেকে বাদ দিয়েছেন। মনিরামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) শেখ মনিরুজ্জামান জানান, এ ঘটনায় সাজিদ হাসান বাদি হয়ে আশিকসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
এ দিকে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের পরিচালক কাজল বিশ্বাসের বাড়ি মনিরামপুরে। তিনি উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ছিলেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকার নির্ভরযোগ্য একাধীক ব্যক্তি জানিয়েছেন, সম্প্রতি মনিরামপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে ১১ জন স্বাস্থকর্মী নিয়োগ দিয়ে ৫৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়। মূলত: ওই টাকা ভাগাভাগি নিয়ে দলের একটি পক্ষের সাথে ভুলবোঝাবুঝি হয় কাজলের।
মূলত: এ নিয়োগ বাণিজ্যকে কেন্দ্র করে অপহরনের ঘটনা ঘটতে পারে বলে অনেকেই মন্তব্য করেছেন। তবে অর্থ বাণিজ্যের এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অর্থ প্রাইভেট লিমিটেডের পরিচালক সাবেক ছাত্রলীগ নেতা কাজল বিশ্বাস।
কিউএনবি/আয়শা/২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩,/রাত ৮:৩৪