শহিদ আহমেদ খান সাবের,সিলেট প্রতিনিধি : সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার ‘ইমরান আহমদ সরকারি মহিলা কলেজ’র অধ্যক্ষ এনামুল হক সরদারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন বালাগঞ্জ উপজেলার আদিত্যপুর গ্রামের মৃত কছির আলীর ছেলে মিজু আহমদ লুলু। মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বেলা ২টায় সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এসব অভিযোগ তুলে ধরেন।
নিজেকে শিক্ষানুরাগী ও ‘ইমরান আহমদ সরকারি মহিলা কলেজ’র শুভাকাক্সক্ষী দাবি করে মিজু আহমদ লিখিত বক্তব্যে বলেন- ‘যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও প্রভাব খাটিয়ে এবং ভুয়া অভিজ্ঞতার সনদ দেখিয়ে এনামুল হক সরদার এ কলেজের অধ্যক্ষ পদে দায়িত্ব পালন করছেন। দায়িত্ব নেওয়ার শুরু থেকেই তিনি সারা মাসে মাত্র ২-৩ দিন কলেজে উপস্থিত থাকলেও বেতন-ভাতা পুরোপুরি ভোগ করছেন। ভুয়া বিল-ভাউচারের মাধ্যমে কলেজ ফান্ডের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন এনামুল হক সরদার। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে উচ্চহারে বেতন-ফি আদায় করছেন তিনি। অবৈধভাবে তাঁর দায়িত্ব পালনের কারণে দিন দিন কলেজটিতে পড়ালেখার মান ক্ষুণœ হচ্ছে।’
মিজু আহমদ লুলু বক্তব্যে আরও বলেন- ‘ইমরান আহমদ মহিলা কলেজ সরকারি হওয়ার পর কলেজের ফাইল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে গেলে এনামুল হক সরদার অধ্যক্ষের যোগ্য নন উল্লেখ করে তাকে এ পদ থেকে বাদ দিয়ে দেয় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ। পরে নতুন অধ্যক্ষ নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। কিন্তু এনামুল হক সরদার অদৃশ্য ক্ষমতাবলে কলেজের অধ্যক্ষ পদটি দখল করে রেখেছেন। এ বিষয়ে আমি চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ দাখিল করলে ৩ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়। ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের কথা থাকলেও অজানা কারণে তা করা হয়নি। পরবর্তীতে ১১ সেপ্টেম্বর থেকে ৭ কার্যদিবসের মধ্যে সরেজমিন তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশনা প্রদান করা হলেও দাপট দেখিয়ে সেটিও ঠেকিয়ে দেন এনামুল হক সরদার। এ অবস্থায় ‘ইমরান আহমদ সরকারি মহিলা কলেজ’র ভবিষ্যৎ নিয়ে চরম উদ্বীগ্ন সকল শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবক।’
কলেজটিতে শিক্ষার ‘সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে’ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি করেছেন মিজু আহমদ লুলু। তবে সব অভিযোগ মিথ্যা দাবি করেছেন ‘ইমরান আহমদ সরকারি মহিলা কলেজ’র অধ্যক্ষ এনামুল হক সরদার। তিনি বলেন- ‘অভিযোগকারীকে আমি ঠিক চিনতে পারছি না। ২৩ বছর ধরে এই কলেজে দায়িত্ব পালন করছি। কেউ কখনো আমার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ তুলেনি। অভিযোগকারী নিশ্চয় কারো দ্বারা প্ররোচিত হয়ে আমার বিরুদ্ধে বিভ্রান্তিকর মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছেন।’
নিয়োগের বিষয়ে তিনি বলেন- ‘২০০৩ সালে আমি এই কলেজে যোগদান করি। ১২ বছর পরে কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমাকে অধ্যক্ষের স্কেলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। আমার নিয়োগে কোনো অনিয়ম হয়নি।’আর্থিক অনিয়মের অভিযোগটিও মিথ্যা দাবি করে এনামুল হক সরদার বলেন- ‘সকল আয়-ব্যয় অডিট হয়। অডিটে আর্থিক অনিয়মের কোনো অভিযোগ কখনো পাওয়া যায়নি।’
কিউএনবি/আয়শা/১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩,/রাত ১১:০৪