বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ০৭:৩৯ অপরাহ্ন

ফুড পয়জনিং কেন হয়? কি খাবেন আর কি খাবেন না

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
  • ২২৭ Time View

লাইফ ষ্টাইল ডেস্ক : বাংলাদেশের মত দেশে ফুড পয়জনিং বা খাদ্যে বিষক্রিয়া একটি সাধারণ ও পরিচিত সমস্যা। কারণ রাস্তায় বা রাস্তার পাশের হোটেলে প্রায়ই খাবারগুলো অপরিষ্কার ও জীবাণুযুক্ত হয়ে থাকে।

যখন কেউ দূষিত, নষ্ট বা বিষাক্ত খাবার খায়, যা ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস এবং পরজীবী দ্বারা সংক্রামিত, তখন ফুড পয়জনিং হয়ে থাকে।

ফুড পয়জনিং এর কারণ

সাধারণত নোরোভাইরাস, সালমোনেলা, ক্লোস্ট্রিডিয়াম পারফ্রিনজেন, ক্যাম্পাইলোব্যাক্টর এবং স্টাফিলোকক্কাস নামক প্যাথোজেনের কারণে বেশীরভাগ ফুড পয়জনিং হয়ে থাকে। তবে ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক, ছাঁচ, টক্সিন পদার্থ, অ্যালার্জেন, কম রান্না করা মাংস ইত্যাদি খাদ্যে বিষক্রিয়ার জন্য দায়ী।

তবে বেশিরভাগ সময়ই খাদ্যে বিষক্রিয়া বা ফুড পয়জনিং এর জন্য হাসপাতালে যাওয়ার প্রয়োজন হয় না।

ফুড পয়জনিং এর লক্ষণ

সাধারণ ক্ষেত্রে ফুড পয়জনিং এ নিম্নলিখিত লক্ষণ গুলো দেখা যায়,

পেটের ব্যথা

ডায়রিয়া

বমি বমি ভাব বা বমি

ক্ষুধামন্দা

অল্প জ্বর

দুর্বলতা

মাথাব্যথা

তবে মারাত্নক ফুড পয়জনিং এ কিছু লক্ষণ রয়েছে, যেগুলো হল,

ডায়রিয়া যা ৩ দিনের বেশি স্থায়ী হয়

১০২ ডিগ্রির বেশি জ্বর

দেখতে বা কথা বলতে অসুবিধা

গুরুতর ডিহাইড্রেশনের লক্ষণ, যেমন শুষ্ক মুখ, সামান্য প্রস্রাব করা

রক্তাক্ত প্রস্রাব ইত্যাদি

এসব লক্ষণ দেখলে দ্রুত ডাক্তারের কাছে যাওয়া উচিত।

ফুড পয়জনিং হলে কি খাবেন?

১. প্রচুর পানি পান করুন

খাদ্যের বিষক্রিয়ার প্রভাবের বিরুদ্ধে লড়াই করতে প্রচুর পরিমাণ পানি খাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বমি এবং ডায়রিয়া ডিহাইড্রেশনের কারণ হতে পারে, তাই ফুড পয়জনিং হলে কিছুক্ষণ পর পর পানি পান করা উচিত।

এ ছাড়া ইলেক্ট্রোলাইট সমৃদ্ধ পানীয় গুলো এই সময়ে ডিহাইড্রেশন প্রতিরোধের সর্বোত্তম উপায়। এ ছাড়া নন-ক্যাফেইনযুক্ত সোডা, ভেষজ চা, মুরগি বা সবজির স্যুপ ইত্যাদি বেশি করে খাওয়া উচিত।

২. কম চর্বি ও কম ফাইবারযুক্ত খাবার খান

ফুড পয়জনিং হলে মসৃণ, কম চর্বিযুক্ত, কম ফাইবারযুক্ত খাবার খাওয়া উচিত। কারণ এ সময় পেটের জন্য চর্বি ও উচ্চ ফাইবার হজম করা কঠিন। তাই এ সময় কলা, খাদ্যশস্য, ডিমের সাদা অংশ, মধু, ওটমিল, আলু, রাইস, আপেল ইত্যাদি খাওয়া উপকারি।

৩. প্রাকৃতিক প্রতিকার

খাদ্যের বিষক্রিয়ার সময় ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া নির্মূল করাই মূল লক্ষ্য। তাই এ সময় আদা চা, দই বা প্রোবায়োটিক ক্যাপসুল খাওয়া উপকারি। কারণ এগুলো শরীরে স্বাস্থ্যকর ব্যাকটেরিয়া পুনরুজ্জীবিত করতে সাহায্য করে।

ফুড পয়জনিং এ যা খাবেন না

কিছু কিছু খাবার ফুড পয়জনিং কে আরও তীব্র করে তুলতে পারে। তাই ফুড পয়জনিং এর সময় এসব জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলাই শ্রেয়।

১. অ্যালকোহল, ক্যাফেইন বা সোডা জাতীয় পানীয়। যেমন এনার্জি ড্রিংকস, কফির মতো পানীয়গুলি এড়িয়ে চলা উচিত।

২. উচ্চ ফাইবারযুক্ত খাবার যেমন অ্যাভোকাডো, ব্রোকলি, মটরশুটি, পুরো শস্য, বাদামী চাল ইত্যাদি।

৩. অতিরিক্ত ঝাল বা অতিরিক্ত মশলাযুক্ত খাবার ফুড পয়জনিং এর সময় পেটে জ্বালা অনুভব তৈরি করে। তাই এসব খাবার না খাওয়াই ভালো।

৪. পনির এবং আইসক্রিমের মতো কিছু দুগ্ধজাত খাবারে সাধারণত চর্বি বেশি থাকে। এগুলো পেটে সমস্যা তৈরি করে থাকে।

৫. উচ্চ চর্বিযুক্ত খাবার এবং আধাসিদ্ধ মাংস।

৬. অতিরিক্ত তেলে ভাজা খাবার যেমন ফ্রায়েড চিকেন, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই ইত্যাদি টাইপের খাবার না খাওয়াই শ্রেয়।

৭. ধূমপান।

৮. ফলের রস।

ফুড পয়জনিং প্রতিরোধ

ফুড পয়জনিং বা খাদ্যের বিষক্রিয়া প্রতিরোধ করতে নিম্নোক্ত পদক্ষেপগুলি মেনে চলা উচিত,

১. খাবার তৈরির স্থান, জিনিসপত্র এবং আপনার হাত সব সময় পরিষ্কার রাখুন।

২. গরুর মাংস খুব ভালোভাবে রান্না করুন। ১৬০ ডিগ্রি ফারেনহাইটে রান্না করা উচিত। এ ছাড়া রোস্ট, স্টেক এবং চপস ১৪৫ ডিগ্রি ফারেনহাইটে রান্না করুন।

৩. মুরগি এবং টার্কি জাতীয় মাংস ১৬৫ ডিগ্রি ফারেনহাইটে রান্না করুন।

৪. সামুদ্রিক খাবার সম্পূর্ণরূপে ভাল মত পরিস্কার করে রান্না করা উচিত।

৫. যে কোন স্থান থেকে মেয়াদ দেখে এবং ভেজাল কিনা নিশ্চিত হয়ে খাবার কেনা উচিত।

৬. পচনশীল খাবার ১ ঘন্টার মধ্যে ফ্রিজে রাখুন।

৭. খাবার সন্দেহজনক মনে হলে বা গন্ধযুক্ত হয়ে গেলে তা ফেলে দিন।

৮. পানি ভালো মত ফুটিয়ে বা পরিশোধন করে পান করুন।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩,/রাত ৮:৪০

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit