শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫, ০৭:৫৮ অপরাহ্ন

আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ প্রকল্প, ট্রায়াল ট্রেন এখন আখাউড়ায়

Reporter Name
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
  • ১১৭ Time View
বাদল আহাম্মদ খান ,ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি : বহুল আকাঙ্ক্ষিত রেলপথ প্রকল্প যা বাংলাদেশের আখাউড়াকে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলার সঙ্গে সংযুক্ত করতে যাচ্ছে। সেই মাহেন্দ্রক্ষণের অপেক্ষায় দুইপাড়ের বাসিন্দারা উন্মুখ হয়ে তাকিয়ে আছেন সীমান্তের দিকে। শনিবার আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ প্রকল্পটি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করবেন। ওই দিন আখাউড়া-আগরতলা রেলপথে পরীক্ষামূলক বা ট্রায়াল ট্রেন চালাতে যাচ্ছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। আখাউড়া-আগরতলা রেলপথে ট্রায়াল রানের ট্রেনটি এখন পূর্বাঞ্চল রেলপথের আখাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশনে অপেক্ষা করছে।শনিবার দুপুরে নতুন এ রেলপথ দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া রেল সেকশনের গঙ্গাসাগর রেলওয়ে স্টেশন থেকে ভারতের উত্তর-পূর্ব ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলা রেলওয়ে স্টেশনের নিশ্চিতপুর স্টেশনে যাবে একটি মালবাহী কন্টেইনার ট্রায়াল ট্রেন।

রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অবকাঠামো) শহীদুল ইসলাম, পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর হোসেন ও আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ প্রকল্প পরিচালক আবু জাফর মিয়া সম্প্রতি রেলপথ প্রকল্প পরিদর্শনে আসলে গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।আখাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশন সুপারিন্টেনডেন্ট মো. নুরুন্নবী কে জানান, ঢাকার তেজগাঁও স্টেশন থেকে ট্রায়াল রান বা পরীক্ষামূলক ট্রেনটি ৩ সেপ্টেম্বর বিকালে আখাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশনে পৌঁছায়। ট্রেনটি ১১টি কোচ নিয়ে আখাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশনে পৌঁছলে ট্রায়াল রান ট্রেনের কোচগুলোতে হলুদ ও বডিতে কালো রংয়ের কাজ করানো হয়েছে।তিনি জানান, পরীক্ষামূলক বা ট্রায়াল রানের ট্রেনটি এখন আখাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশনের ৩ নম্বর প্লাটফর্মের ৮ নম্বর লাইনে রাখা হয়েছে। শুক্রবার সকালে ট্রায়াল রানের ট্রেনটি আখাউড়া স্টেশন থেকে গঙ্গাসাগর রেলওয়ে স্টেশনে নিয়ে যাওয়া হবে।জানা গেছে, আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ উদ্বোধনের দিনক্ষণকে সামনে রেখে রেলপথ মন্ত্রী, সচিব, অতিরিক্ত সচিবসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা প্রকল্প এলাকা ঘুরে গেছেন। শনিবার দুপুরে প্রকল্পের কাজ পরিদর্শন করেন রেলওয়ের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল। দলের নেতৃত্বে ছিলেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মো. ইয়াছিন। প্রতিনিধি দলে রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অবকাঠামো) শহীদুল ইসলাম, পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর হোসেন, আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ প্রকল্প পরিচালক আবু জাফর মিয়া, আখাউড়া-লাকসাম ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন প্রকল্পের পরিচালক মো. সুবক্তগীন, আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ প্রকল্পের ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টেক্সমেকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের কান্ট্রি হেড শরৎ শর্মাসহ রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ইতোমধ্যে এ পথে একাধিকবার পরীক্ষামূলক গ্যাঙ্কার বা পরিদর্শন কার চলাচলও করেছে। প্রকল্পের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা আখাউড়া-আগরতলা রেলপথের গঙ্গাসাগর রেলওয়ে স্টেশন থেকে গ্যাঙ্কার বা পরিদর্শন কারে ভারত সীমান্তবর্তী শিবনগর পর্যন্ত ঘুরে দেখেছেন। জানা যায়, ভারত-বাংলাদেশ রেলওয়ে সংযোগ প্রকল্পটি আখাউড়া-ঢাকা হয়ে আগরতলা এবং পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে ভ্রমণের সময় ও দূরত্ব কমিয়ে দেবে। প্রকল্পটি চালু হলে ৩১ ঘণ্টার পরিবর্তে সময় লাগবে ১০ ঘণ্টা এবং আগরতলা-কলকাতার দূরত্ব ১ হাজার ৬৫০ কিলোমিটার থেকে দূরত্ব দাঁড়াবে মাত্র ৫১৩ কিলোমিটার।স্থানীয় বাসিন্দাদের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি দুই দেশের মধ্যে রেলপথে বাণিজ্যের দ্বার খুলবে, কমবে পরিবহণ খরচ- এমনটাই দাবি করছেন রেলপথ মন্ত্রী ও সচিবসহ সংশ্লিষ্টরা।আখাউড়া-আগরতলা সড়কপথের পর এবার আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ সংযোগে উন্মোচিত হবে বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্যের নতুন দ্বার। রেলপথটি চালু হলে ব্যবসা-বাণিজ্যের পাশাপাশি দুই দেশের মধ্যে পর্যটন এবং সাংস্কৃতিক বিনিময়ে দিগন্তের সূচনা ঘটবে বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আখাউড়ার গঙ্গাসাগর থেকে আগরতলার নিশ্চিন্তপুর পর্যন্ত ডুয়েল গেজ রেলপথ নির্মাণের জন্য ২০১৮ সালের ২১ মে ভারতের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টেক্সমেকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তি হয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ২০১৮ সালের ২৯ জুলাই প্রকল্পের কাজ শুরু করে। দেড় বছরের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও করোনা মহামারিসহ নানা সংকটের কারণে নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ প্রকল্প পরিচালক আবু জাফর মিয়া কে বলেন, দুই দেশের এ রেলপথের মোট দৈর্ঘ্য ১২ দশমিক ২৪ কিলোমিটার ডুয়েল গেজ রেলপথের বাংলাদেশ অংশে ৬ দশমিক ৭৮ কিলোমিটার। পুরো অংশেই বসানো হয়েছে রেললাইন। ইতোমধ্যে প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৯৫ শতাংশের বেশি শেষ হয়েছে এবং শেষপর্যায়ের কাজ চলছে বলে ওই প্রকল্প পরিচালকের দাবি। তবে এখনো পুরোপুরি শেষ হয়নি কাস্টমস ও ইমিগ্রেশন ভবন এবং স্টেশনের প্ল্যাটফর্মের কাজ।এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ৪৭৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৫৭ কোটি ৫ লাখ টাকা এবং ভারতীয় ঋণ ৪২০ কোটি ৭৬ লাখ কোটি টাকা।২০১০ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফরের সময় এ রেলপথ নির্মাণের বিষয়ে উভয় দেশের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই হয়।

কিউএনবি/অনিমা/ ০৭.০৯.২০২৩/রাত ১০.৪১

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit