মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:১০ পূর্বাহ্ন

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের কোনো বিকল্প নেই: চীনা রাষ্ট্রদূত

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ২৭ আগস্ট, ২০২৩
  • ১৪২ Time View

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। ইয়াও বলেন, ‘এটা খুব অদ্ভুত। বাস্তুচ্যুত মানুষের জীবনযাপনের জন্য কক্সবাজারের পরিস্থিতি উপযুক্ত কি না তারা এই প্রশ্নের উত্তর দেননি। এ বিষয়ে তাদের নিজেদেরই নিজেদের প্রশ্ন করা দরকার।’রাষ্ট্রদূত ইয়াও বলেন, ‘রোহিঙ্গা ইস্যু দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারকে জর্জরিত করছে। বছরের পর বছর ধরে বাংলাদেশ এসব বাস্তুচ্যুত মানুষকে আশ্রয় দিয়ে অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নিরাপত্তা পরিস্থিতি দ্রুত অবনতি হচ্ছে। কক্সবাজার ক্যাম্পে হত্যা, বন্দুকযুদ্ধ, অপহরণ, মাদক ও মানবপাচার চলছে।’

তিনি বলেন, ‘ সম্প্রতি বহিরাগত সহায়তাও কমেছে। বাস্তুচ্যুত মানুষের জন্য খাদ্য-রেশন প্রতি মাসে ১২ থেকে কমিয়ে ৮ মার্কিন ডলার করা হয়েছে, যা টিকে থাকার জন্য যথেষ্ট নয়। সব পক্ষই ক্রমবর্ধমানভাবে উপলব্ধি করেছে যে, এখন প্রত্যাবাসনই একমাত্র উপায়। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বারবার প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে তার দৃঢ় সংকল্প ও অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন।’ইয়াও বলেন, ‘যদিও রোহিঙ্গা সংকট বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বিষয়, তবে উভয়দেশের অভিন্ন প্রতিবেশী এবং জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হিসেবে চীন দুই পক্ষকে বন্ধুত্বপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে মতবিরোধ নিষ্পত্তি করার বিষয়ে মত পোষণ করে। যাতে করে এই অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখা যায়।’
 
তিনি বলেন, ‘২০১৮ সালে চীন মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতির উন্নতির জন্য তিন ধাপের প্রস্তাব পেশ করেছে। এগুলো হলো: সহিংসতা বন্ধ করা, প্রত্যাবাসন শুরু করা এবং উন্নয়নে মনোযোগ দেয়া। কয়েক বছর ধরে চীন তার সামর্থ্যের মধ্যে অনেক রকম সাহায্যের প্রস্তাব দিয়েছে।’তিনি আরও  বলেন, ‘আমরা রাখাইন রাজ্যের নিরাপত্তা পরিস্থিতির উন্নতির জন্য মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছি, বাংলাদেশ ও মিয়ানমারকে প্রত্যাবাসন ও পুনর্বাসন সুবিধার শর্ত জোরদার করতে সাহায্য করেছি, বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে প্রত্যক্ষ আলোচনার ব্যবস্থা করেছি এবং দুই পক্ষকে উৎসাহিত ও সমর্থন করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছি।’
 
তার মতে, চীনের মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা বাংলাদেশ ও মিয়ানমার উভয়ের কাছ থেকে সম্মান, স্বীকৃতি ও আস্থা অর্জন করেছে এবং দুই দেশকে একে অপরের প্রতি তাদের আস্থা বাড়াতে সহায়তা করেছে। ফলে ইতিবাচক কিছু ঘটছে বলে মনে হচ্ছে। চীনা দূতের মতে, চলতি বছর পর্যন্ত মিয়ানমার কিছু বাস্তুচ্যুত লোককে ফিরিয়ে নিতে দৃঢ় ইচ্ছাশক্তি ও ক্রমবর্ধমান নমনীয়তা দেখিয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা গত কয়েক মাসে বেশ কয়েকটি ঐতিহাসিক অগ্রগতির সাক্ষী হয়েছি। উদাহরণস্বরূপ মিয়ানমারের আমন্ত্রণে বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের প্রতিনিধি এবং বাংলাদেশ সরকারের কর্মকর্তারা প্রথমবারের মতো রাখাইন রাজ্যে যান ও সেখানকার পরিস্থিতি দেখেন। মিয়ানমারও বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলতে এবং রাখাইনে ফিরে যাওয়ার পরের পরিস্থিতি সম্পর্কে তাদের অবহিত করতে কক্সবাজারে একটি ওয়ার্কিং গ্রুপ পাঠিয়েছে।’
 
তিনি আরও বলেন, চীনের মধ্যস্থতায় বাংলাদেশ ও মিয়ানমার প্রথম ব্যাচের প্রত্যাবাসন সংক্রান্ত প্রযুক্তিগত সমন্বয়ের জন্য ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ও যোগাযোগ রেখেছে। যারা প্রত্যাবাসনে বাধা দিচ্ছে তাদের বিষয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, এরা বাংলাদেশ ও মিয়ানমার উভয়ের যৌথ প্রচেষ্টাকে উপেক্ষা করছে। কিন্তু  আমরা সমস্ত অংশীজনদের প্রত্যাবাসনের উদ্দেশ্য পূরণে সমন্বিত প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানাই, যেহেতু অন্য কোনো বিকল্প নেই।’
 
সম্প্রতি পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ‘আমাদের অগ্রাধিকার হচ্ছে তারা (রোহিঙ্গারা) নিজ দেশে ফিরে যাবে। মিয়ানমারও তাদের ফিরিয়ে নিতে ইচ্ছুক। রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার পর মিয়ানমারকেই তাদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।’এর আগে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনে কারো বাধা সৃষ্টি করা উচিত নয় মন্তব্য করেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম। তিনি বলেছেন, এই ধরনের বিচার, বড় আকারে প্রত্যাবাসনের আগে সমস্যাগুলো বুঝতে সহায়তা করবে।
 
তিনি বলেন, ‘পরীক্ষামূলক প্রত্যাবাসন বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গাকে প্রত্যাবাসনের আগে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করতে সাহায্য করবে। এটি একটি নিয়মিত প্রত্যাবাসন উদ্যোগকে আরও ভালোভাবে বাস্তাবায়নের আগে সমস্যাগুলো সমাধান করতে সহায়তা করবে। কারো বাধা সৃষ্টি করা উচিত হবে না।’

 

 

কিউএনবি/আয়শা/২৭ অগাস্ট ২০২৩,/বিকাল ৪:৫০

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit