ডেস্ক নিউজ : ফরিদপুরে বসতঘরের খাটের নিচ থেকে মুখমণ্ডল ঝলসে যাওয়া ঝুমা আক্তার (৩৫) নামের এক নারীর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। একই সময়ে শহরের বাইপাস এলাকার সড়ক থেকে সামিউল শেখ মিন্টু (২০) নামের এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
দুটি লাশই উদ্ধার করা হয় রোববার ভোরে ও দুপুরে। পুলিশ লাশ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করেছে।
কোতোয়ালি থানা পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রোববার দুপুরে ৯৯৯ নাম্বারে খবর পেয়ে কোতোয়ালি থানা পুলিশ শহরের পশ্চিম খাবাসপুরের মিয়াপাড়া এলাকার একটি বাসায় যায়। এ সময় সেই বাসার লোকজন পুলিশকে বাড়িতে ঢুকতে না দিলে তাদের সন্দেহ হয়। একপর্যায়ে পুলিশ ওই বাড়িতে ঢুকে খাটের নিচ থেকে ঝুমা আক্তারের লাশটি উদ্ধার করে। নিহত ঝুমা আক্তার অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য আব্দুল আহাদ তালুকদারের মেয়ে। সে তার মা ও বোনের সঙ্গে ওই বাড়িতে বসবাস করত।
কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল খায়ের জানান, গত কয়েক দিন ধরে স্থানীয়রা ওই বাড়ির পাশ দিয়ে যাওয়ার পথে দুর্গন্ধ পেত। বিষয়টি বাড়ির লোকজনকে বললে তারা কোনো উত্তর দিত না। শনিবার দুপুরে ৯৯৯ নাম্বারে স্থানীয় এক ব্যক্তি ফোন দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই বাড়ির খাটের নিচ থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়। নিহতের মুখমণ্ডল অ্যাসিড দিয়ে ঝলসে দেওয়া হয়েছে এবং তাকে ৮ থেকে ১০ দিন আগে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় নিহতের মা ও বোনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নেওয়া হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় কয়েক নারী জানান, নিহতের বোন ও মা অনৈতিক কাজের সঙ্গে জড়িত থাকায় ঝুমা আক্তার প্রতিবাদ করত। এ কারণেই তাকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে।
কোতোয়ালি থানার ওসি এমএ জলিল বলেন, লাশ উদ্ধার করে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঝুমা আক্তারের মৃত্যুর ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে মা-বোনকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে দ্রুতই এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করা যাবে।
এদিকে ফরিদপুর শহরের ডোমরাকান্দি এলাকার বাইপাস সড়ক থেকে সামিউল শেখ মিন্টু নামের এক যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহতের মাথায় একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নাম্বারে স্থানীয় এক ব্যক্তি ফোন করলে কোতোয়ালি থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে। নিহত সামিউল জেলার সালথা উপজেলার সাধুরহাটি এলাকার আইয়ুব শেখের ছেলে।
পুলিশ জানায়, ভোরে রাস্তার পাশে লাশটি পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সামিউলের লাশ উদ্ধার করে। এটি দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু না হত্যা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
জানা গেছে, সামিউল শেখ মিন্টু মধুখালী উপজেলার এক গৃহবধূর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। এ কারণে ওই নারীর ডিভোর্স হয় তার স্বামীর সঙ্গে। মাঝে-মধ্যেই সামিউল ওই নারীর সঙ্গে দেখা করত বলে জানান স্থানীয়রা।
মরদেহ উদ্ধারকারী কোতোয়ালি থানার এসআই আ. জব্বার জানান, রাস্তার পাশে মরদেহটি পড়ে ছিল। তার মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে সে মারা যেতে পারে।
কিউএনবি/অনিমা/১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৩/রাত ১০:৪৮