শহিদ আহমেদ খান সাবের,সিলেট প্রতিনিধি : দফায় দফায় গ্যাস, বিদ্যুৎ ও এলপিজি গ্যাসের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে, শীতকালে লোডশেডিং বন্ধ, বিদ্যুৎ ও গ্যাস খাতে দুর্নীতি, হরিলুট ও সিস্টেম লসের নামে চুরির সাথে জড়িতদের সনাক্ত ও গ্রেফতার করার দাবীতে গ্যাস-বিদ্যুৎ গ্রাহক কল্যাণ পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির এক জরুরী সভা ৪ ফেব্রুয়ারি শনিবার বেলা ১১টায় সিলেট নগরীর বন্দরবন্দর মধুবন সুপার মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় আলিফ রেস্টুরেন্টে অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় ভর্তুকির অজুহাত তুলে যারা এই দাম বৃদ্ধি করে যাচ্ছেন মূলতঃ তারা সরকারের ভিশন-৪১ নস্যাৎ করার চক্রান্তে লিপ্ত। বক্তারা বলেন, আর কত বুঝা আসবে সাধারণ মানুষের উপর। বাজার থেকে শুরু করে জীবন রক্ষকারী ঔষধ ও শিক্ষা উপকরণের দামে জনগণ আজ চিড়ে চাপ্টা হয়ে যাচ্ছেন। আয়-ব্যয় কমানোর মত আর কোন খাত নেই। গ্যাস আর বিদ্যুৎ দু’টিই সরাসরি মানুষের সংসারের সাথে সম্পৃক্ত। জ্বালানি কমিশনের ক্ষমতা কেড়ে নিয়ে দফায় দফায় গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির প্রক্রিয়ায় সাধারণ জনগণের মধ্যে এক মহাআতংক বিরাজ করছে। গ্যাসে এখন সরকারের কোন ভর্তুকি নেই, জ্বালানী তেলে সরকার লাভে আছে, বাজেটে রাখা ভর্তুকি বিদ্যুতে দিয়ে মানুষকে সস্তি দেয়া যেতো। তা না করে দু’ দফায় মূল্য বৃদ্ধির ফলে যাদের এক হাজার টাকা বিদ্যুৎ বিল আসে সেটা আগামী মাসে এক হাজার দুইশত টাকা আসবে।
গত ২রা ফেব্রুয়ারি-২০২৩, জাতীয় দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনে প্রকাশিত সংবাদে প্রকাশ- “বিদ্যুৎ বিভাগে বছরে নেই সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা”। অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজশে হরিলুট, চুরির ক্ষতি দেখানো হচ্ছে সিস্টেম লস হিসেবে। নেই কাঙ্খিত সেবা, আছে গ্রাহক হয়রানী। রিপোর্টে আরো প্রকাশ- বিদ্যুৎ বিলের সময় এক-এক বাড়ির মিটার রিডিং দেয়ার সুযোগ থাকলেও তা নেয়া হচ্ছে না। ভোক্তাদের বিল বাড়িয়ে গোজামিল করা হচ্ছে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিভাগের আয় নিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কোন পরিষ্কার তথ্য নেই।
বক্তারা বলেন, গ্যাস, বিদ্যুৎ ও রাষ্ট্রায়ত্ব বিভিন্ন ব্যাংক থেকে দুর্বৃত্তরা যে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করছে, তা যদি আদায় করা যায়, তাহলে বছরে এ অর্থের মাত্র এক ভাগ দিয়ে বিদ্যুৎ ও গ্যাসে ভর্তিুকী হিসেবে প্রদান করলে জনগণের উপর মূল্য বৃদ্ধির এই বুঝা চাপানোর কোন প্রয়োজন পড়বে না। অবিলম্বে বিদ্যু, গ্যাস ও এলপিজি গ্যাসের বর্ধিত মূল্য স্থগিত করার জোর দাবী জানানো হয়। আগামী ৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে দাবী বাস্তবায়িত না হলে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি বুধবার দেশব্যাপী প্রতিবাদ দিবস পালন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। ওই দিন কেন্দ্রীয় আহবায়ক কমিটির উদ্যোগে বিকাল ৪টার সময় সিলেট নগরীর সিটি পয়েন্টের কামরান চত্বরে এক গণজমায়েতের কর্মসূচি নেয়া হয়েছে।
গ্যাস-বিদ্যুৎ গ্রাহক কল্যাণ পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সচিব জননেতা মকসুদ হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন গ্যাস-বিদ্যুৎ গ্রাহক কল্যাণ পরিষদের কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক ইকবাল হোসেন চৌধুরী, সদস্য বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ মহিউদ্দিন, ইসলামী চিন্তাবিদ মাওলানা আব্দুল মালিক চৌধুরী, মামুনুর রশীদ এডভোকেট, সরোজ ভট্টাচার্য্য, আব্দুল মোতওয়ালী ফলিক, আমিরুল হোসেন চৌধুরী আমনু, রফিকুল ইসলাম শীতাব, ইসমত ইবনে ইসহাক সানজিদ, সাংবাদিক শহিদ আহমদ খান, দুর্নীতি মুক্তকরণ বাংলাদেশ যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি ইমাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মাহবুব ইকবাল মুন্না প্রমুখ। সভায় পরিষদের সদস্য, দক্ষিণ সুরমা যুব কল্যাণ পরিষদের সভাপতি কামাল আহমদের পিতার ইন্তেকালে গভীর শোক প্রকাশ করা হয়।
কিউএনবি/আয়শা/০৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৩/রাত ১০:৩৩