বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫, ০১:১২ পূর্বাহ্ন

প্রায় ১০ বছর ধরে মাদ্রাসায় আসেননা ক্কারিয়ানা শিক্ষক,অথচ বেতনভাতা তোলা হচ্ছে প্রতিমাসে

স্টাফ রিপোর্টার,মনিরামপুর(যশোর) ।
  • Update Time : শনিবার, ৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩
  • ২৫৩ Time View

স্টাফ রিপোর্টার,মনিরামপুর(যশোর) : যশোরের মনিরামপুরে হাজরাকাঠি আহম্মদীয়া দাখিল মাদ্রাসার এবতেদায়ী ক্কারি শিক্ষক শেখ আবদুল মালেক অসুস্থজনিত কারন দেখিয়ে প্রায় ১০ বছর যাবত প্রতিষ্ঠানে আসেননা। অভিযোগ রয়েছে ম্যানেজিং কমিটির যখন যিনি সভাপতি হন সুপারের মধ্যস্থতায় তাকে ম্যানেজ করে পুত্রবধুসহ বিভিন্ন ব্যক্তিদের দিয়ে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান করানো হয়। আবার প্রতিমাসে গোপনে শিক্ষক হাজিরা খাতা ও বেতনশিট বাড়িতে নিয়ে আবদুল মালেকের দিয়ে স্বাক্ষর করিয়ে সরকারি বেতনভাতা উত্তোলন করা হয়।

বেতন উত্তোলনের পর তা আবার ভাগবাটোয়ারা করা হয়। বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। জানাযায়, মনিরামপুর উপজেলার মশ্বিমনগর ইউনিয়নের বেলাতলা বাজারের পাশে অবস্থিত হাজরাকাঠি আহম্মদীয়া দাখিল মাদ্রাসাটি। এখানে এবতেদায়ী থেকে দাখিল পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের পাঠদান করা হয়। এবতেদায়ী ক্কারি শিক্ষক হিসেবে ১৯৮৩ সালে নিয়োগ দেওয়া হয় স্থানীয় শেখ আবদুল মালেককে। ১৯৮৬ সালে আবদুল মালেক এমপিওভূক্ত(সরকারি বেতন-ভাতা প্রাপ্ত ইনডেক্স নম্বর কেবি-০৭৬৬৬৬) হয়ে বর্তমান তিনি ১৪ গ্রেডে বেতন পান। কিন্তু প্রায় ১০ বছর আগে ২০১২ সালের প্রথমদিকে তিনি অসুস্থ হন। সেই থেকে তিনি মাদ্রাসায় আসা বিরত রয়েছেন। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে যখন যিনি সভাপতি হয় সুপার আবদুস সামাদের মধ্যস্থতায় তাকে ম্যানেজ করে বাড়ি থেকে হাজিরা ও বেতনশিটে আবদুল মালেকের কাছ থেকে স্বাক্ষর নিয়ে সরকারি বেতন উত্তোলন করা হয়।

ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম জানান, আগের সভাপতি মিজানুর রহমান মিন্টুর সময়কালে ক্কারিয়ানা শিক্ষক আবদুল মালেকের পরিবর্তে এলাকার নাসিমা খাতুন নামে একজনকে দিয়ে শ্রেনিকক্ষে পাঠদান করানো হতো। আর এজন্য মাদ্রাসা থেকে নাসিমা খাতুনকে দেওয়া হতো প্রতিমাসে দুই হাজার টাকা। কিন্তু নাসিমার বিয়ে হয়ে যাবার পর সভাপতি হন তরিকুল ইসলাম। তরিকুল ইসলামের সময়কালে আবদুল মালেকের মেয়ে খাদিজা খাতুনকে দিয়ে পাঠদান করাতেন। খাদিজার বিয়ে হয়ে যাবার পর নেওয়া হয় মালেকের পুত্রবধু উম্মে আসমা লিজাকে। কিন্তু পুনরায় সভাপতি হয়ে রফিকুল ইসলামের সময়কালে লিজাকে বাদ দেওয়া হয়।

সাবেক দুই সভাপতি মিজানুর রহমান মিন্টু ও রফিকুল ইসলাম জানান, গতবছর জুন মাসে নতুন সভাপতি হন গোলাম মুক্তাদির মন্টু। সেই থেকে মন্টু আবারও আবদুল মালেকের পুত্রবধু লিজাকে দিয়ে পাঠদানের ব্যবস্থা করেন। অভিযোগ রয়েছে এভাবেই দিনের পর দিন, বছরের পর বছর ক্কারিয়ানা শিক্ষক আবদুল মালেক প্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিত থাকলেও তাকে দিয়ে স্বাক্ষর করিয়ে বেতন উত্তোলনের পর ভাগবাটোয়ারা করা হচ্ছে। তবে নিজের দোষ অস্বীকার করে সুপার আবদুস সামাদ জানান, ম্যানেজিং কমিটির নির্দেশনায় ক্কারিয়ানা শিক্ষক আবদুল মালেককে সুযোগ দেয়া হচ্ছে। তিনি জানান, ইতিমধ্যে আবদুল মালেক সুস্থ হয়েছেন। ফলে তাকে প্রতিষ্ঠানে আসতে ইতিমধ্যে নোটিশ করা হয়েছে। কিন্তু তিনি আসছেননা। আবদুল মালেক জানান, তিনি দুএক মাস পর অবসরে যাবার চিন্তাবাবনা করছেন। গত বৃহস্পতিবারও পুত্রবধু লিজাকে দিয়ে পাঠদান করানো হয়েছে।

জিলণা জানান, ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্তমোতাবেক তিনি মাদ্রাসায় পাঠদান করেনে। বর্তমান সভাপতি গোলাম মুক্তাদির মন্টু জানান, মানবিক কারনে আবদুল মালেকের পরিবর্তে তার পুত্রবধু উম্মে আসমা লিজাকে দিয়ে পাঠদান করানো হচ্ছে এবং বেতন উত্তোলনের পর তাকেই দেওয়া হচ্ছে। এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বিকাশ চন্দ্র সরকার জানান, বিষয়টি তার জানানেই, তবে দুএকের মধ্যে সরজেমিন গিয়ে অভিযোগটি তদন্ত করা হবে। অভিযোগটি প্রমানিত হলে সুপারসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/০৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৩/রাত ৮:৪৪  

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

June 2025
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit