নিজেস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহী পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কমকর্তা ডাঃ মোঃ আলী মাজরুই রহমান বলেন, আমাদের দেশে নিপাহ ভাইরাস সংক্রমণে সৃষ্ট লক্ষণসমূহকে বুঝায়৷ লক্ষণসমূহের মধ্যে রয়েছে জ্বর, মাথাব্যথা, প্রলাপ বকা, খিঁচুনি, শ্বাসকষ্ট, অজ্ঞান হয়ে যাওয়া ইত্যাদি৷ অনেক সময় কোনো লক্ষণ নাও দেখা দিতে পারে৷ এ রোগে মৃত্যু হার অনেক বেশি৷
নিপাহ ভাইরাস একটি Emerging Zoonotic ভাইরাস, যা পশু-পাখি থেকে মানুষে ছড়ায়। ভাইরাসটি মস্তিষ্ক বা শ্বসনতন্ত্রে প্রদাহ তৈরির মাধ্যমে মারাত্মক অসুস্থতার সৃষ্টি করে। এটি Henipavirus জেনাসের অন্তর্গত একটি ভাইরাস। নিপাহ ভাইরাসে এনসেফালাইটিস নামক মস্তিষ্কের প্রদাহজনিত রোগ হয়।
বাংলাদেশে নিপাহ ভাইরাস ছড়ায় মূলত বাদুড়ের মাধ্যমে। বাংলাদেশে সাধারণত শীতকালীন সময়ে নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর বেশি পাওয়া যায়। এ সময়টাতে খেজুরের রস সংগ্রহ করা হয়। আর বাদুড় গাছে বাঁধা হাঁড়ি থেকে রস খাওয়ার চেষ্টা করে এবং রসের হাড়িতে প্রস্রাব করে বলে ওই রসের সঙ্গে তাদের লালা ও মুত্র মিশে যায়। সেই বাদুড় নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে থাকলে এবং সেই কাঁচা রস খেলে মানুষের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়তে পারে নিপাহ ভাইরাস। আক্রান্ত একজন মানুষের কাছে থেকে একাধিক মানুষে ছড়াতে পারে এ ভাইরাস।
সরাসরি নিপাহ ভাইরাস নিরাময়ে কোনো ওষুধ বা প্রতিষেধক ভ্যাকসিন এখনও আবিষ্কার হয়নি। সুতরাং রোগ থেকে বাঁচার একমাত্র পন্থা৷ নিপাহ ভাইরাস থেকে বাঁচতে সকলকে সচেতন হতে হবে।
নিপাহ ভাইরাস রোগ প্রতিরোধে করণীয়-
১) খেজুরের কাঁচা রস বা তাড়ি না খাওয়া৷২) খেজুরের কাঁচা রসে ডুবিয়ে পিঠা বা অন্য খাবার না খাওয়া৷ রস ভালোভাবে টগবগিয়ে ফুটিয়ে বা গুড় বানিয়ে খাওয়া উচিত৷৩)আধা খাওয়া ফল না খাওয়া৷ বাদুড়ের আধাখাওয়া ফল থেকে নিপাহ ছড়াতে পারে৷ ৪) যে কোনো ফল ধুয়ে খাওয়া৷৫) সাবান ব্যবহারে নিপাহ ভাইরাস মারা যায়৷ তাই সবধরনের ধোয়া-মোছার কাজে সাবান ব্যবহার করা উচিত৷৬) নিপাহ ভাইরাস মানুষ থেকে মানুষে ছড়াতে পারে৷
তাই আক্রান্ত এলাকায় কারো মধ্যে এর লক্ষণসমূহ দেখা দিলে মানুষের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলতে হবে এবং দ্রুত নিকটস্থ হাসপাতালে যোগাযোগ করে চিকিৎসা নিতে হবে৷ নিপাহ ভাইরাসের সংক্রমণ সাধারণত শীতকালে গাছ থেকে খেজুরের রস সংগ্রহ ও খাওয়া হয় সেই সময়ে হয়ে থাকে৷ এজন্য সকল কে নিপাহ ভাইরাস রোগ নিয়ন্ত্রণে সচেতন হতে হবে।
কিউএনবি/আয়শা/২৭ জানুয়ারী ২০২৩/রাত ১১:৩৪