শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫, ১২:১৪ পূর্বাহ্ন

মনিরামপুরে কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় পিতা-পুত্র সহ নিহত ৫

Reporter Name
  • Update Time : শুক্রবার, ২ ডিসেম্বর, ২০২২
  • ১৩৫ Time View

স্টাফ রিপোর্টার,মনিরামপুর(যশোর) : বিস্কুটবোঝাই কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কায় পিতা-পুত্র, দাদা-নাতীসহ পাঁচজন নিহত হয়েছে। এর আগে কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় সারিবদ্ধ ১০ টি দোকান ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যায়। আর এ ঘটনা ঘটেছে গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে যশোরের মনিরামপুরে বেগারীতলা বাজারে। প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ জনতা যশোর-সাতক্ষীরা মহাসড়ক প্রায় দুইঘন্টাব্যাপী অবরোধ করে। ফলে প্রায় আধাকিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। পুলিশ এ সময় কাভার্ডভ্যানটি জব্দ করলেও চালককে আটক করতে পারেনি।

অপরদিকে মর্মান্তিক এ দূর্ঘটনায় নিহতদের বাড়িসহ এলাকায় চলছে শোকের মাতম। পুলিশ নিহতদের মরদেহ উদ্ধারের পর ময়না তদন্তের জন্য যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরন করেছে। নিহতরা হলেন ভোজগাতী ইউনিয়নের টুনিয়াঘরা গ্রামের কৃষক হাবিবুর রহমান ও তার শিশু ছেলে তাওশিকুর রহমান, একই গ্রামের মৃত রফিজ উদ্দিনের ছেলে খন্ডকালিন শিক্ষক শামছুর রহমান, মীর আলী বাবুর ছেলে তৌহিদুল ইসলাম এবং ঢাকুরিয়া ইউনিয়নের জয়পুর গ্রামের আবদুল মোমেনের ছেলে মাটিকাটা শ্রমিক জিয়াউর রহমান।

প্রত্যক্ষদর্শী, এলাকাবাসী ও পুলিশ জানায়, শুক্রবার সকালের দিকে যশোর থেকে বিস্কুট বোঝাই একটি কাভার্ডভ্যান মনিরামপুরের দিকে আসছিল। সকাল সাড়ে সাতটার দিকে মনিরামপুরের বেগারীতলা বাজারে পৌছলে নিয়ন্ত্রন হারিয়ে দ্রুতগামী কাভার্ডভ্যানটি সারিবদ্ধ ১০ টি দোকানের ভেতর ঢুকে যায়। এ সময় কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় দোকানের সামনে থাকা পাঁচ জন ঘটনাস্থলেই নিহত হন। ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যায় ১০ টি দোকান। কমবেশি আহত হন পলটু, আবু তালেব, মনির উদ্দিনসহ বেশ কয়েকজন।প্রত্যক্ষদর্শী আমেনা বেগম, শাহাজান আলী, হোটেল ব্যবসায়ী আবুতালেবসহ স্থানীয়রা জানান, টুনিয়ঘারা গ্রামের হাবিবুর রহমান তার ছয় বছর বয়সি ছেলে তাওশিকুর রহমানকে নিয়ে বেগারীতলা বাজারে হোটেলে নাস্তা খাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়। বাজারে তার বড়ভাই বজলুর রহমানের মুদিদোকানের সামনে পৌছানো মাত্রই কাভার্ডভ্যানটি প্রথমে তাদের ধাক্কা দেয়।

এতে পিতাপুত্রের মৃত্যু হয়। পরে তাভার্ড ভ্যানটি একে একে আঘাত করে মতিয়ার রহমানের পানের দোকান, বাবুর ভাজার দোকান, আতিয়ারের মিষ্টির দোকান, শাহাজানের পানের দোকান, রুহুল আমিনের চায়ের দোকান, আবু তালেবের হোটেলসহ ১০ টি দোকানে। এতে দোকানসমুহ ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যায়। চায়ের দোকানী রুহুল আমিন জানান, টুনিয়াঘরা গ্রামের খন্ডকালিন শিক্ষক শামছুর রহমান ও তার নাতি ছেলে(ভাইপোর ছেলে) তৌহিদুল ইসলাম দোকানের সামনে বেঞ্চে বসে চা পান করছিলেন। এ সময় কাভার্ডভ্যানটি তাদের চাপা দিলে ঘনাস্থলেই দাদা-নাতির মৃত্যু হয়। একই সময় বিসমিল্লাহ হোটেলের সামনে দাড়িয়ে ছিলেন জয়পুর গ্রামের শ্রমিক জিয়াউর রহমান। কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কায় জিয়াউর রহমানেরও মৃত্যু হয়। হোটেল ব্যবসায়ী এ ঘটনার বর্ননা দিতে গিয়ে ডুকরে কাদতে কাদতে জানান, কোনকিছুর বোঝার আগেই ঝড়ের গতিতে কাভার্ডভ্যানটি তার হোটেলের ভেতর ঢুকে পড়ে। এ সময় অবশ্য তিনি মাঝখানে ছিলেন।

তবে মর্মান্তিক এ দূর্ঘটনার সময় বাজারের অধিকাংশ দোকানপাট ছিল বন্ধ। হতাহতের পর পরই এলাকাবাসী বিক্ষোভে ফেটে পড়েন এবং যশোর-সাতক্ষীরা মহাসড়ক অবরোধ করেন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ফায়ার সার্ভিসসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা এসে পাঁচটি মরদেহ উদ্ধারের পর সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে সড়ক থেকে অবরোধ সরিয়ে দেয়। মনিরামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) শেখ মনিরুজ্জামান জানান, পাঁচটি মরদেহ উদ্ধারের পর ময়না করা হয়েছে।

কিউএনবি/অনিমা/০২ ডিসেম্বর ২০২২,খ্রিস্টাব্দ/সন্ধ্যা ৬:৫২

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

June 2025
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit