ডেস্ক নিউজ : কভিড পরবর্তী পরিস্থিতিতে সমতাভিত্তিক অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারকে বৈশ্বিক ও সামাজিকভাবে প্রাধান্য দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। তিনি বলেছেন, সমগ্র বিশ্বের অর্থনীতি ও জনজীবনে কভিড-১৯ মহামারি নজিরবিহীন দুর্দশা বয়ে এনেছে। এমতাবস্থায় উন্নত, প্রাণবন্ত, শক্তিশালী, অন্তর্ভুক্তিমূলক, সমতাভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা এবং স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, খাদ্যনিরাপত্তার মতো বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জসমূহ অর্থনৈতিক সম্প্রসারণের সাথে সংযুক্ত বিধায় অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে অর্থনৈতিক সম্প্রসারণ জরুরি।
আজ বৃগস্পতিবার উজবেকিস্তানের তাসখন্দে স্পিকার্স অফ পার্লামেন্টের ১৪তম সামিটের ‘এড্রেসিং দ্যা রিস্কস অফ দ্যা পোস্ট প্যান্ডেমিক গ্লোবাল রিকভারি’ শীর্ষক সেশনে বক্তৃতাকালে এসব কথা বলেন তিনি। সিনেট অফ উজবেকিস্তানের চেয়ারউইমেন তানজিলা নারবিভার সভাপতিত্বে সেশনে সূচনা বক্তৃতা করেন ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়ন (আইপিইউ)’র প্রেসিডেন্ট মি. দুয়ার্তে পাসিকো। সেশনে বিভিন্ন দেশের স্পিকারগণ তাঁদের মূল্যবান বক্তব্য রাখেন এবং বিভিন্ন দেশের সাংসদ ও অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশগ্রহণ করেন।
ওই সেশনে স্পিকার বলেন, অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার নিশ্চিত করতে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী ও আর্থ-সামাজিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত জনজীবনের অভিজ্ঞতাগুলো এবং সামাজিক বৈষম্যকে অবশ্যই মূল্যায়ন করতে হবে। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী সুরক্ষা এবং খাদ্য নিরাপত্তা সহায়তা সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। নগদ স্থানান্তর প্রক্রিয়া প্রসারিত করা উচিত, যাতে করে অতিদরিদ্ররা সামাজিক নিরাপত্তার বাইরে ছিটকে না পরে। কভিড পরবর্তী পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে অতিদরিদ্রদের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে ২০মিলিয়ন পরিবারকে ‘ফ্যামিলি কার্ড’ দেওয়া হয়েছে, যাতে করে তারা স্বল্প মূল্যে খাদ্যদ্রব্য সংগ্রহ করতে পারে।
তিনি আরো বলেন, নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন ও লিঙ্গ সমতা নিশ্চিতকরণ, দক্ষতা উন্নয়ন, সমান মজুরি, জামানতমুক্ত ঋণ ব্যবস্থা ও অনুদান, নারীদের জন্য শ্রম বাজারে প্রবেশাধিকার বৃদ্ধি, নারী ও মেয়েদের মানসিক স্বাস্থ্য, নারী সহিংসতা প্রতিরোধ বর্তমানে গুরুত্বপূর্ণ। সকল ক্ষেত্র স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ এবং অসমতা ও বৈষম্য দূরীকরণে সংসদ কর্তৃক উপযুক্ত আইনী কাঠামো প্রণয়ন করতে হবে।
ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, কিছু সুনির্দিষ্ট খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি, শিল্পকারখানাগুলো পুনরুদ্যমে চালু ও ব্যবসা-বাণিজ্যের পুনরায় উন্নয়ন, ফরেন ডিরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট, রাজস্ব সংগ্রহ বৃদ্ধি, বিভিন্ন খাতে অপ্রয়োজনীয় ব্যয় হ্রাস ইত্যাদি বৈশ্বিকভাবে জরুরি কেননা বিশ্বব্যাপী সরবরাহ শৃঙ্খল স্থানীয় অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলে। কিছু দেশে তেলের উচ্চ মূল্য অন্যান্য অনেক দেশের শক্তি উৎপাদন খাত তথা সামগ্রিক অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলছে। রপ্তানি উন্নয়নের পাশাপাশিপ কৃষক, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা ও নারী উদ্যোক্তাদের স্বার্থে প্রণোদনা জরুরি।
অনুষ্ঠানের পূর্বে ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী তাসখন্দ বিমানবন্দরে পৌঁছালে তাঁকে স্বাগত জানাতে সিনেট অফ উজবেকিস্তানের চেয়ারউইমেন তানজিলা নারবিভার নেতৃত্বে উজবেকিস্তানের সংসদ সদস্যগণ বিমানবন্দরে উপস্থিত হন। স্পিকারের সফরসঙ্গী আছেন সংসদ সদস্য সাগুফতা ইয়াসমিন, পারভীন হক সিকদার ও আদিবা আনজুম মিতা, সংসদ সচিবালয়ের সচিব কে এম আব্দুস সালাম, যুগ্মসচিব সুমিয়া খানম ও সার্জেন্ট এট আর্মস মিয়া মোহাম্মদ নাঈম রহমান।
কিউএনবি/আয়শা/০৮ সেপ্টেম্বর ২০২২,খ্রিস্টাব্দ/রাত ১০:১৯