সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:৫৬ পূর্বাহ্ন

ঘোড়াঘাটে আত্মহণনের প্রবণতা বৃদ্ধি ৫ মাসে ১১ জনের আত্মহত্যা

মোঃ আফজাল হোসেন, দিনাজপুর প্রতিনিধি
  • Update Time : শনিবার, ১১ জুন, ২০২২
  • ১৬৪ Time View

মোঃ আফজাল হোসেন, দিনাজপুর প্রতিনিধি : দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে পারিবারিক কলহের জেরে বাড়ছে আত্মহণনের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে।পরিবারতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় পারিবারিক কলহ, মনোমালিন্যতা কিংবা ছোটখাটো ঝগড়া বিবাদ স্বাভাবিক একটি বিষয়। এই সমস্যা গুলো প্রতিনিয়ত মানসিক সমস্যায় রুপ নিচ্ছে। ফলে বাড়ছে আত্মহত্যার প্রবণতা।চলতি বছরে শুধুমাত্র দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলাতে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে ১১টি। উপজেলাটিতে গড়ে প্রতি মাসে ২ জন ব্যক্তি নানা কারণে আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে। তারমধ্যে বিভিন্ন প্রকার রাসায়নিক বিষপানে আত্মহণনের ঘটনাই বেশি। তথ্য বলছে আত্মহত্যা করে মারা যাওয়ার যে সংখ্যা, তার চেয়ে আত্মহত্যা চেষ্টা ঘটনার সংখ্যা কয়েক গুণ বেশি।

ঘোড়াঘাট থানা পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের জানুয়ারী থেকে চলতি জুন মাস পর্যন্ত এই ছোট্ট উপজেলাটিতে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে ১১টি। তারমধ্যে ৬ জন পুরুষ এবং বাকি ৫ জন নারী। এসব ঘটনার মধ্যে বিভিন্ন ধরণের বিষপানে আত্মহত্যা করেছে ৪ জন পুরুষ এবং ৩ জন নারী।বাকি ২ জন পুরুষ এবং ২ জন নারী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। আত্মহত্যার ঘটনায় ঘোড়াঘাট থানায় অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে ১১টি। সব কয়টি অপমৃত্যুর মামলাতেই মরদেহের ময়না তদন্তের রিপোর্টে আত্মহত্যার বিষয়টি উঠে এসেছে। মারা যাওয়া সকলের বয়স ২০ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে।এই উপজেলায় আত্মহত্যা রোধে সরকারী সংস্থা বা প্রশাসনের তেমন কোন সচেতনতা মূলক কার্যক্রম নেই। পাশাপাশি বেসরকারী সংস্থা, এনজিও ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা গুলোরও কোন কার্যক্রম চোখে পড়ে না। তবে স্থানীয় সুশীল সমাজের লোকদের দাবি সচেতনতা কার্যক্রম বাড়ানো গেলে আত্মহত্যার প্রবণতা অনেকাংশে রোধ করা সম্ভব। তাদের মতে আত্মহত্যার উপকরণের সহজলভ্যতা আত্মহত্যার একটি বড় কারণ।

মনোচিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের মতে, আত্মহত্যার প্রবণতা তরুণ-তরুনীদের মাঝেই বেশি। যারা আত্মহত্যা করেন তাদের ৯৫ ভাগই কোন না কোন মানসিক রোগে ভোগেন। তাদের মাঝে এক ধরণের তীব্র আশাহীনতা তৈরি হয়।এদিকে ঘোড়াঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের জানুয়ারী থেকে চলতি জুন মাস পর্যন্ত হাসপাতালটিতে আত্মহত্যা চেষ্টার ঘটনার রোগী এসেছে ৩২ জন। এসব রোগীদের সবাই বিভিন্ন কীটনাশক বিষ ও গ্যাসের ট্যাবলেট অথবা মাত্রাতিরিক্ত ঘুমের ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহণনেন চেষ্টা করেছিল। এর মধ্যে পুরুষ ১৭ জন এবং নারী ১৫ জন। তাদের সকলের বয়স ২০ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে। ভর্তি হওয়া এসব রোগীদের মধ্য ৩ জনের শরীরে বিষক্রিয়া মারাত্বক হারে ছড়িয়ে পড়ায় মারা গেছে। বাকিরা চিকিৎসায় বেঁচে ফিরেছে।ঘোড়াঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তৌহিদুল আনোয়ার জানান, আত্মহত্যা চেষ্টার ঘটনায় হাসপাতালে ভর্তি হওয়া এসব রোগীদের পরিবারের লোকজন ভিকটিমের বিষপানের বুঝতে পারায় দ্রুত তাদেরকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। এক্ষেত্রে বিষক্রিয়া পুরো শরীরে ছড়িয়ে না পড়লে তাদেরকে বাঁচানো সম্ভব হয়। তবে উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতাল গুলোতে ভেন্টিলেটর সুবিধা থাকলে, বিষক্রিয়া রোগীর শরীরে ছড়িয়ে পড়লেও অনেক ক্ষেত্রে তাদেরকে বাঁচানো যেত।

ঘোড়াঘাট-হাকিমপুর সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার শরিফুল ইসলাম বলেন, ঘোড়াঘাট থানায় আত্মহত্যার সবগুলো ঘটনার পেছনেই রয়েছে পারিবারিক নানা ধরণের সমস্যা। স্ত্রীর সাথে স্বামী কিংবা স্বামীর সাথে স্ত্রী মনোমালিন্যতা জনিত সমস্যায় আত্মহত্যার পথ বেছে নেন অধিকাংশ জন। এছাড়াও বাবা-মায়ের সাথে ঝগড়া-বিবাদ অথবা প্রেমের সমস্যা সংশ্লিষ্ট কারণেও অনেকে নিজের প্রাণ দেন। আমরা আত্মহত্যা রোধ করতে বিট পুলিশিং এর মাধ্যমে সাধারণ নাগরিকদেরকে জানা যায়, দিনাজপুর সদর উপজেলা থেকে ২০ জন যাত্রী পিকআপ যোগে গাইবান্ধায় যাচ্ছিল একটি অটো রাইস মিলে কাজ করার জন্য। অপরদিকে নিহত মোজাহার নিজ মোটরসাইকেল যোগে কর্মস্থল পলাশবাড়ী থেকে নিজ বাড়ি বিরামপুরে যাচ্ছিল।যাত্রী বোঝাই পিকআপটি উপজেলার হিলিমোড়ে পৌঁছালে অপরদিক থেকে আসা মোটরসাইকেলের সাথে সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই মোটরসাইকেল চালক নিহত হয় এবং পিকআপটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে নিচু জমিতে উল্টে যায়।পরে ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা এসে আহতদেরকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।ঘোড়াঘাট ফায়ার সার্ভিসের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন ইনচার্জ নিরঞ্জন সরকার বলেন, আমাদের স্টেশন থেকে ৩০০ মিটার দুরে মহাসড়কে বিকট শব্দে আওয়াজ হয়। পরে আমরা সেখানে গিয়ে দেখি পিকআপ-মোটরসাইকেল সংঘর্ষ হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে আমরা প্রায় ১০-১৫ জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করি।

ঘোড়াঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. পার্থজ্বীময় সরকার জানান, আহত ১৭ জনের মধ্যে ৩ জনের অবস্থা আশংকাজনক। তাদেরকে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে। বাকি ১৪ জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেই চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।এদিকে ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু হাসান কবির বলেন, আমরা সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করেছি। মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এই ঘটনায় কেও বাদী হয়ে মামলা না করলে, আমরা নিজেরাই বাদী হয়ে মামলা করব।

কিউএনবি/অনিমা/১১.০৬.২০২২ খ্রিস্টাব্দ/দুপুর ২:৩১

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

December 2025
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৬
IT & Technical Supported By:BiswaJit