স্টাফ রিপোর্টার,মনিরামপুর(যশোর) : সারাদেশে আমন সংগ্রহ শেষ হয়েছে গতকাল সোমবার।কিন্তু যশোরের মনিরামপুরে আমন ধান সংগ্রহ শুন্যের কোঠায়। কারন হিসেবে জানাগেছে গোডাউনে ধান দিতে একেতো চাষীদের বিভিন্ন হয়রানির শিকার হতে হয়। তার ওপর সরকারের নির্ধারিত দরের চেয়ে বাজার মূল্য বেশি থাকায় কোন চাষী এবার সরকারের কাছে ধান বিক্রি করেননি। ফলে মনিরামপুরে এবার আমন সংগ্রহ শুন্যের কোঠায়। ফলে ধানক্রয়ের বরাদ্দকৃত প্রায় কোটি টাকা ফেরত পাঠাতে হচ্ছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে।
উপজেলা খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসিএলএসডি) মোহাম্মদ সেলিম জানান, চলতি মৌসুমে আমনধান সংগ্রহের লক্ষমাত্রা নির্ধারিত ছিল এক হাজার ৪৪৫ মে:টন। আর এ ধান ক্রয়ের জন্য বরাদ্দ আসে ৯৮ লাখ ২৭ হাজার ৭৬০ টাকা। এলাকার তালিকাভূক্ত চাষীদের কাছ থেকে সরকার নির্ধারিত এক হাজার আশি টাকা প্রতিমন ধান ক্রয়ের কথা ছিল গতবছরের ৮ নভেম্বর থেকে শুরু হয়ে ২৮ ফেব্রুয়ারি(সোমবার)পর্যন্ত।
কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এক ছটাক ধান ক্রয় করা সম্ভব হয়নি। কারন হিসেবে বিভিন্ন চাষীদের সাথে আলাপ করে জানাযায়, সরকারের নির্ধারিত ক্রয় মূল্যের চেয়ে বাজার মূল্য বেশি হওয়াই এমনটি হয়েছে। পৌরশহরের পাইকার মোদাচ্ছের আলী জানান, বর্তমান বাজারে মোটা ধান বিক্রি হচ্ছে সর্বনি¤œ এক হাজার দুই’শ টাকা প্রতিমন। চাঁদপুর গ্রামের চাষী নিরঞ্জন দাস জানান, তিনি এবার আমন মৌসুমে ১০ বিঘা জমিতে আবাদ করেন। ফলনও বেশ ভাল হয়েছে। কিন্তু সরকারের ক্রয় মূল্যের চেয়ে বাজার মূল্য বেশি থাকা, তার ওপর খাদ্যগুদামে বিক্রি করতে গেলে ধানের আদ্রতা বেশিসহ বিভিন্ন ঝামেলার শিকার হতে হয়। ফলে তিনি এবার সব ধান বাজারে বিক্রি করেছেন। মাহমুদকাটি গ্রামের চাষি নূর ইসলাম জানান, তিনি এবার পাঁচ বিঘা জমিতে আমন চাষ করেছিলেন।
কিন্তু তিনি অভিযোগ করেন, মৌসুমের শুরুতে সরকারি মূল্য এবং বাজার মূল্য প্রায় সমান থাকা, তার ওপর খাদ্যগুদামে বিক্রি করতে গিয়ে বিভিন্নভাবে হয়রানি হতে হয়। ফলে এবার সব ধান তিনি বাজারে বিক্রি করেছেন। একই কথা জানান, রাজগঞ্জের আসাদুল হক, নেহালপুরের আবদুর রাজ্জাক, পৌরশহরের গাংড়া এলাকার মিজানুর রহমান সহ অধিকাংশ চাষীরা। উপজেলা ধান ক্রয় কমিটির সদস্য সচিব ও উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ইন্দ্রজিৎ সাহা জানান, লটারির মাধ্যমে প্রকৃত আমন চাষিদের কাছ থেকে ধান সংগ্রহের নির্দেশনা ছিল। কিন্তু ধানের বাজার মূল্য বেশি হওয়ায় উপজেলা ক্রয় কমিটির সভায় লটারি প্রথা বাদ দিয়ে কার্ডধারী চাষীদের কাছ থেকে ধান ক্রয়ের সিদ্ধান্ত হয়। এছাড়াও চাষীদের উৎসাহিত করতে খাদ্যগুদাম উন্মুক্ত করে ব্যাপক প্রচারনা চালানো হয়।তার পরও কোন চাষী খাদ্যগুদামে ধান বিক্রি করেননি।
কিউএনবি/আয়শা/২৮শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ/সন্ধ্যা ৭:১৮