
ডেস্ক নিউজ : ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মৃতি বিজরিত স্থাপনাগুলো সংরক্ষণে বিশেষ উদ্যেগ গ্রহণ করা হবে। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে কাজ করছে। কোনো অবস্থাতেই সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে বিলুপ্ত হতে দেওয়া যাবে না। সংখ্যা যত কমই হোক ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতি সংরক্ষণে সরকার যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। শিক্ষা কোনো দয়া বা দান নয় বরং অধিকার। তাই ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীসহ প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর শিক্ষার অধিকার নিশ্চিতকরণে সরকার সচেষ্ট হবে।
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির আয়োজনে এফডিসিতে ‘একুশের চেতনা বৃথা যায়নি’ শীর্ষক এক ছায়া সংসদে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, এবারের বইমেলায় উগ্র জঙ্গিবাদী হামলার তেমন কোনো শঙ্কা নেই। তবুও নিরাপত্তার ঝুঁকি বিবেচনায় বইমেলায় সরকার সর্বোচ্চ সতর্ক ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। প্রকাশকদের ক্ষতি বিবেচনা করে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে থাকলে বইমেলার মেয়াদ বাড়ানো হবে।
সভাপতির বক্তব্যে হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, বিশ্বে বাংলাদেশই একমাত্র দেশ যেখানে মাতৃভাষার জন্য জীবন দিতে হয়েছে। সারা বিশ্বে আজ ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে। বাংলাদেশে অবস্থিত ৪১টি জাতিগোষ্ঠির ভাষাকেও সমানভাবে এগিয়ে নিতে হবে। সরকার প্রতিবছরের শুরুতেই প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেয়। কিন্তু বাংলা ভাষা ছাড়া অন্য যে ভাষাগুলো রয়েছে তাদের শিক্ষার্থীদের হাতে কি আমরা নিজস্ব ভাষায় বই তুলে দিতে পারছি? ২০১৬ সালে সরকার গারো, উরাও, চাকমা, মারমা ও ত্রিপুরা এই পাঁচটি আদিবাসী ভাষায় বই প্রকাশ করেছে। কিন্তু এই পাঁচটি আদিবাসীদের নিজস্ব ভাষায় রচিত বই পড়ানোর জন্য এখনো শিক্ষক নিয়োগ করা হয়নি।
আদিবাসীদের ১৪টি ভাষা আজ বিপন্ন হতে যাচ্ছে। এই বিপন্ন ভাষাগুলো হচ্ছে খাড়িয়া, কোডা, মুন্ডারি, কোল, মালতো, খুমি, লুসাই, পাংখোয়া, চাক, খিয়াং, পাত্র, সৌরা, রেংমিটচা। আদালতে বাংলা ভাষার ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হলেও তা এখনো লাল ফিতায় বন্দি। উচ্চ আদালতে এখনো উপেক্ষিত বাংলা ভাষা। বাংলায় মামলা দায়ের, শুনানি, আদেশ ও রায় দেওয়া হলে বিচারপতি, আইনজীবী ও বিচার প্রার্থী সবাই উপকৃত হবেন। বিশেষ করে বিচার প্রার্থীরা রায় সম্পর্কে সহজে বুঝতে পারবেন।
ভাষা দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত ছায়া সংসদের বিতর্ক প্রতিযোগিতায় ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিতার্কিকদের পরাজিত করে মজিদ জরিনা ফাউন্ডেশন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিতার্কিকরা বিজয়ী হয়। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলের মাঝে ট্রফি ও সনদপত্র বিতরণ করা হয়। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মোহাম্মদ রইস, ড. এস এম মোর্শেদ, জোসিন্তা জিনিয়া, সাংবাদিক সাব্বির নেওয়াজ ও সাংবাদিক পার্থ সঞ্জয়।
কিউএনবি/আয়শা/১২ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ/রাত ৯:১৩