ডেস্ক নিউজ : পরিবেশ দূষণের কারণে সাভারের চামড়া শিল্প নগরী বন্ধে এবার পরিবেশ অধিদপ্তরকে অভিযানের সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি। বৃহস্পতিবার সংসদ ভবনে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সুপারিশ করা হয়। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সঠিকভাবে না হওয়ায় গত ২৩ আগস্ট কমিটির বৈঠকে এ শিল্প নগরী ‘আপাতত বন্ধ রাখার’ সুপারিশ করা হয়েছিল। এখনও তার বাস্তবায়ন না হওয়ায় বৈঠকে ‘অসন্তোষ’ প্রকাশ করেছে কমিটি।
সংসদীয় কমিটি বলছে, দৈনিক ১৫ হাজার ঘনমিটার বর্জ্য সেখানে পরিবেশে মিশছে। এই হিসাবে গত তিন বছরে এক কোটি ৬৪ লাখ ঘনমিটার বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বাইরে থেকে গেছে। এ কারণে গত আগস্টে সাভারের ট্যানারি বন্ধের সুপারিশ করে সংসদীয় কমিটি। এরপর গত সেপ্টেম্বরে ‘চামড়া শিল্পখাতের উন্নয়নে সুপারিশ তৈরি ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ণের লক্ষ্যে গঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় টাস্কফোর্সের বৈঠকে এই শিল্পের জন্য আলাদা কর্তৃপক্ষ গঠনের প্রস্তাব করা হয়।
কমিটির সুপারিশের পর পরিবেশ অধিদপ্তর বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনকে (বিসিক) চিঠি দিয়েছিল। চামড়া শিল্প নগরী ‘কেন বন্ধ করা হবে না’, তা বিসিকের কাছে জানতে চেয়েছিল সংসদীয় কমিটি। তবে ওই চিঠির জবাব ‘সন্তোষজনক হয়নি’ বলে বৃহস্পতিবারের বৈঠক শেষে সংসদীয় কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী জানান।
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, কেন বন্ধ করা হবে না- এই প্রশ্নে পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে নোটিস দেওয়া হয়েছিল। তারা ওই নোটিসের জবাব দিয়েছে। তারা কিছু পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে। ওই জবাবটি আমাদের কাছে সন্তোষজনক মনে হয়নি।সেজন্য আমরা ট্যানারি বন্ধের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের কথা বলেছি। পরিবেশ মন্ত্রী এই বিষয়ে শিল্পমন্ত্রীর সাথে কথা বলবেন। এরপর পরিবেশ অধিদপ্তর ট্যানারি শিল্প বন্ধে পদক্ষেপ নেবে।
চামড়া শিল্পকে আন্তর্জাতিক মানসম্মত পরিবেশে উন্নীত করতে ২০০৩ সালে সাভারের হেমায়েতপুরে চামড়া শিল্পনগরী গড়ে তোলার কাজে হাত দেয় বিসিক। হাজারীবাগের ট্যানারি মালিকদের অনীহা সত্ত্বেও ২০১৭ সালের এপ্রিলে আদালতের নির্দেশে তাদেরকে সেখানে যেতে বাধ্য হতে হয়।
শুরুতে কথা ছিল শিল্পনগরীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য ট্যানারিগুলো নিজেরাই ইটিপি স্থাপন করবে। কিন্তু ট্যানারিগুলো তা না করায় শিল্প মন্ত্রণালয় প্রকল্পের আওতায় সিইটিপি স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়ে ২০১০ সালে প্রকল্প সংশোধন করা হয়। তখন প্রকল্প ব্যয় বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয় ৫৪৫ কোটি টাকা।
এরই মধ্যে শিল্পনগরীর কোনো সুবিধা নিশ্চিত না করে ট্যানারিগুলোকে বারবার স্থানান্তরের সময়সীমা বেঁধে দিতে থাকে শিল্প মন্ত্রণালয়। তাতেও কাজ না হওয়ায় উচ্চ আদালত হাজারীবাগের কারখানাগুলোর গ্যাস, পানি ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার আদেশ দেওয়ার পর ২০১৭ সালের এপ্রিলে কারখানাগুলো একযোগে স্থানান্তরিত হয়।
কিউএনবি/আয়শা/১১ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ/সকাল ১১:১৮