শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:০৭ অপরাহ্ন

মাটি কেটে সংসার চালাচ্ছেন ইউপি সদস্য ববিতা

Reporter Name
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ২৭ জানুয়ারী, ২০২২
  • ১০৭ Time View

 

ডেস্ক নিউজ : জীবন সংসারে নানা ঘাত-প্রতিঘাতে একজন মানুষ যখন সুখের মুখ দেখে তখন সে তার আগের ইতিহাস ভুলে যায়। আগে সেই মানুষটি কী কর্ম করেছে তা আর মনে করতে চায় না বা সেই কর্মও করতে চায় না। কিন্তু সেই নিয়মের ব্যতিক্রম দেখা যাচ্ছে পাবনার চাটমোহর উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের সংরক্ষিত ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের এক নারী ইউপি সদস্যের ক্ষেত্রে। ওই ওয়ার্ডে গত ২৮ নভেম্বর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ববিতা খাতুন নামের এক শ্রমজীবী নারী বিপুল ভোটে ইউপি সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।

তিনি মূলগ্রাম ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামের জায়দুল ইসলামের স্ত্রী। নির্বাচনে জয়ী হয়ে এরই মধ্যে তিনি শপথগ্রহণ শেষে পরিষদের দায়িত্বও গ্রহণ করেছেন। কিন্তু তিনি এখন পর্যন্ত প্রতিদিন ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে স্থানীয় সরকার প্রকৌশলীর অধীন পল্লী কর্মসংস্থান ও সড়ক রক্ষণাবেক্ষণে (আরইআর এম পি-৩) মাটি কাটায় নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন। তিনি দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে এই কাজ করছেন।

বেশ কয়েক বছর আগে তাঁর স্বামী তাঁকে ত্যাগ করে অন্যত্র বিয়ে করে আলাদা সংসার পেতেছেন। পরিবারে তাঁর ১৮ বছর বয়সী একমাত্র ছেলে আর এক ছোট বোন রয়েছে। ছেলেকে বিয়ে দেওয়ার পর তিনিও আলাদা হয়ে গেছেন। এখন ইউপি সদস্য হয়েও জীবিকার তাগিদে প্রতিদিন ২৫০ টাকা পারিশ্রমিকে তিন বছরের চুক্তিতে শ্রম বিক্রি করে চলছেন ইউপি সদস্য ববিতা খাতুন।

এ বিষয়ে ইউপি সদস্য ববিতা খাতুন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমার মা একবার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দাঁড়িয়ে হেরেছেন। পরের বার নির্বাচনে আমিও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরে যাই। এবার আবার নির্বাচনে দাঁড়িয়েছি। জনগণ আমাকে বিপুল ভোটে নির্বাচিত করেছেন। নির্বাচনে আমি কোনো টাকা-পয়সা খরচ করতে পারিনি। গ্রামের মানুষ সবাই এক জোট হয়ে আমাকে নির্বাচিত করেছেন। আমি ইউপি সদস্য নির্বাচিত হয়েছি বলে অনেক বড় কিছু হয়ে গেছি, সেটা আমি মনে করি না। জীবিকার জন্য আমাকে কাজ করতেই হবে। ’

তিনি আরো বলেন, ‘এলাকার মানুষের প্রয়োজন হলে এবং পরিষদ থেকে চেয়ারম্যান সাহেব খবর দিলে তখন আমি পরিষদে যাই। কাজ শেষ হলে আবার এসে কাজে যোগদান করি। মানুষ আমাকে অনেক আশা-আকাঙ্ক্ষা নিয়ে ভোট দিয়েছেন। আমি গরিব, অসহায় ও নিপীড়িত-নির্যাতিত মানুষের পাশে থেকে কাজ করতে চাই। ’এ বিষয়ে মূলগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রাশেদুল ইসলাম বকুল বলেন, ‘বর্তমানে আমার পরিষদের সে একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। তাকে ব্যক্তিগতভাবে আমি বলেছিলাম, মাটি কাটার কাজ না করতে। সে জবাবে বলেছে, যতদিন পর্যন্ত আমি পরিষদ থেকে কোনো বেতন/ভাতা না পাব তত দিন পর্যন্ত আমি এই কাজই করব। যেহেতু সে একজন হতদরিদ্র কর্মঠ মেয়ে, তাই আমি তাকে বলেছি তোমার যেকোনো ধরনের সাহায্য-সহযোগিতার প্রয়োজন হলে আমি ব্যক্তিগতভাবে এবং পরিষদের পক্ষ থেকে সাধ্য অনুযায়ী সহযোগিতা করব। ’

 

 

কিউএনবি/আয়শা/২৭শে জানুয়ারি, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ/|বিকাল ৩:০৯

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit