শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ০৭:৪৪ অপরাহ্ন

ইমানের মূল্য

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ৫ জানুয়ারী, ২০২২
  • ১৩২ Time View

 

ডেস্ক নিউজ : একজন মুমিন মুসলমানের কাছে ইমানই সবচেয়ে মহামূল্যবান সম্পদ। ইমান লাভ করা ও মুসলমান হতে পারা সৌভাগ্যের বিষয়। ইহকালে সফলতা, কবরে শান্তি, পরকালের মুক্তি এবং সবশেষে চিরশান্তির ঠিকানা জান্নাতের নিশ্চয়তা। রসুলুুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলবে আর এর ওপর তার মৃত্যু হবে সে জান্নাতে যাবে।’ বুখারি।

ইমানের প্রথম অংশ হলো ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। তিনি এক, অদ্বিতীয়। তিনি একক, তাঁর কোনো অংশী নেই। ইমানের দ্বিতীয় অংশ মুহাম্মাদুর রসুলুল্লাহ। মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর রসুল। তিনি সর্বশেষ নবী। মানব জাতির হেদায়েতের জন্য তাঁকে পাঠানো হয়েছে। এ কথা স্বীকার করা ও মনেপ্রাণে বিশ্বাস করা। এ ইমানের ওপরই মানুষের ইহ ও পর কালীন জীবনের ব্যর্থতা-সফলতা নির্ভর করে। ইমানবিহীন আমলের কোনো মূল্য নেই। আল্লাহ ঘোষণা করেন, ‘শপথ সময়ের! নিশ্চয়ই মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। কিন্তু তারা নয়, যারা ইমান গ্রহণ করে ও সৎকর্ম করে। পরস্পর সত্যের উপদেশ দেয় এবং ধৈর্যের উপদেশ দেয়।’ সুরা আসর। যারা ইমান গ্রহণের পাশাপাশি নেক আমল করে তাদের প্রতি অনেক সুসংবাদও রয়েছে। আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই যারা ইমান আনে ও সৎকর্ম সম্পাদন করে তাদের অভ্যর্থনার জন্য আছে জান্নাতুল ফিরদাউস। সেখানে তারা চিরকাল থাকবে, সেখান থেকে স্থান পরিবর্তন করতে চাইবে না।’ সুরা কাহাফ আয়াত ১০৭-১০৮।

ইমানের মূল বিষয় আল্লাহর একাত্মবাদের ওপর অবিচল থাকা, অটুট ও দৃঢ় বিশ্বাস রাখা এবং আল্লাহর প্রেরিত রসুল ও তাঁর প্রদত্ত দীনের আনুগত্য করা। ইমানের শিখর খুবই মজবুত ও সুদৃঢ়। ইমানের পরিধি অনেক ব্যাপক ও বিস্তৃত। ইমানের শাখা-প্রশাখা অন্তহীন। রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘ইমানের সত্তরোর্ধ শাখা-প্রশাখা রয়েছে। প্রধান হলো লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ। এর সবচেয়ে ছোট শাখা রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক বস্তু সরিয়ে ফেলা। আর লজ্জাশীলতা ইমানের একটি বিশেষ শাখা।’ বুখারি, মুসলিম। রসুলুল্লাহ (সা.) ইমানের অসংখ্য শাখা-প্রশাখা থেকে তিনটি বস্তু আমাদের জন্য উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। ইমানের যাবতীয় শাখা-প্রশাখা কোরআন-হাদিসে বিস্তারিত উল্লেখ আছে। যাদের সাধ্য আছে তারা কোরআন-হাদিস থেকে অথবা বিজ্ঞ ওলামায়ে কিরাম থেকে ভালোভাবে জেনে নিতে পারেন। প্রয়োজনে তা নিজের জীবনে বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা করা। ইহ ও পর কালে ইমানের সুফল লাভের জন্য এর প্রতিটি শাখা জীবনে বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা করতে হবে। সৎ আমলের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি হওয়া এবং সৎকর্মের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ তৃপ্তি লাভ করা ও ইমানের স্বাদ অনুভবের জন্য ইমান সুদৃঢ় করার বিকল্প নেই। রসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তিনটি গুণ যার মধ্যে রয়েছে সে ইমানের স্বাদ আস্বাদন করেছে। এক. আল্লাহ ও তাঁর রসুল তার কাছে সবকিছু অপেক্ষা অধিক প্রিয়। দুই. কাউকে যে একমাত্র আল্লাহর জন্যই ভালোবাসে ও আল্লাহর জন্যই ঘৃণা করে। তিন. ইমান থেকে প্রত্যাবর্তন করা তার কাছে আগুনে নিক্ষেপ হওয়ার মতো অনীহা হয়।’ বুখারি, মুসলিম।

একজন প্রকৃত ইমানদারের জীবনে ইমানের প্রভাব পড়বে। ইমানের ফলে আল্লাহ ও তাঁর রসুল (সা.)-এর আনুগত্যের প্রতি তার স্পৃহা বেড়ে যাবে। আল্লাহ ও তাঁর রসুল (সা.)-এর প্রতি ইমানদারদের ভালোবাসা বৃদ্ধি পাবে। ইমানদার অন্য মুমিনের প্রতি সহনশীল ও কল্যাণকামী হবে। তাদের মধ্যে পরস্পর আন্তরিকতার বন্ধন সৃষ্টি হবে। ইমানের যাবতীয় শাখা-প্রশাখা নিজের জীবনে বাস্তবায়নের জন্য আগ্রহ সৃষ্টি হবে। তারাই ইমানের প্রকৃত স্বাদ গ্রহণ করবে। অর্জন করবে ইহ ও পর কালে অফুরন্ত শান্তি। আল্লাহ আমাদের তৌফিক দিন।

লেখক : গবেষক, ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার, বসুন্ধরা, ঢাকা।

কিউএনবি/অনিমা/৫ই জানুয়ারি, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ/সকাল ৯:৩৮

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit