আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মধ্যপ্রাচ্যের উত্তপ্ত ভূরাজনীতির পটভূমিতে সোমবার ইরানকে ঘিরে নতুন আলোচনার ঝড় উঠেছে। দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম দাবি করেছে, রাজধানী তেহরানসহ ইসফাহান ও মাশহাদ শহর থেকে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করা হয়েছে। ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে আকাশ চিরে ছুটে চলা আগুনের রেখা। এটি চলতি মাসে দ্বিতীয়বারের মতো এমন মহড়ার খবর। কিন্তু এই দাবির সত্যতা নিয়ে পরে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা—বাস্তব মহড়া নাকি কেবল বিভ্রম?
রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যমের টেলিগ্রাম চ্যানেল ও আধা-সরকারি নুরনিউজে প্রকাশিত ভিডিওগুলোতে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের দৃশ্য দেখা যায়। তবে উৎক্ষেপণের সঠিক স্থান বা সময় সম্পর্কে কোনো স্পষ্ট তথ্য দেওয়া হয়নি। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্স জানিয়েছে, তারা এসব ভিডিওর সত্যতা স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি।
পরিস্থিতি আরও জটিল হয় যখন একই দিনে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে ‘অবগত সূত্র’-এর বরাতে বলা হয়—কোনো ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা হয়নি। তাদের দাবি, ছড়িয়ে পড়া ছবি ও ভিডিও আসলে ‘উচ্চ আকাশে উড্ডয়নকারী বিমান’-এর দৃশ্য। সরকারিভাবে এই পরস্পরবিরোধী বক্তব্যের ব্যাখ্যা এখনো পরিষ্কার করা হয়নি।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এনবিসি নিউজ জানায়, ইসরায়েলি কর্মকর্তারা মনে করছেন, ইরান তাদের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি আবার জোরদার করছে। এমনকি পারমাণবিক জ্বালানি সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্রগুলো নতুন করে সক্রিয় হওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অবহিত করতে পারেন। পশ্চিমা দেশগুলো দীর্ঘদিন ধরে ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ভাণ্ডারকে মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি হিসেবে দেখে আসছে। তাদের আশঙ্কা—ভবিষ্যতে যদি ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করে, তবে এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো তা বহনে ব্যবহার হতে পারে। যদিও ইরান বরাবরই দাবি করে আসছে, তাদের পারমাণবিক বোমা তৈরির কোনো উদ্দেশ্য নেই।
এর আগে চলতি মাসের শুরুতে ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসের (আইআরজিসি) নৌ শাখা দুই দিনের সামরিক মহড়া চালায়। ওই মহড়ায় বিদেশি হুমকি মোকাবিলার প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ব্যালিস্টিক ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে অনুশীলন করা হয়।
কিউএনবি/অনিমা/২৩ ডিসেম্বর ২০২৫,/সকাল ৮:৫৫