আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পশ্চিমবঙ্গের ভোটার তালিকায় ‘বিশেষ নিবিড় সংশোধন’র (এসআইআর) খসড়া তালিকা প্রকাশ করল নির্বাচন কমিশন। মঙ্গলবার দুপুরে এসআইআর’র খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হয়। এ খসড়া তালিকায় কাদের নাম থাকলো, আর কারা বাদ গেল, সেই তথ্যই তুলে ধরে কমিশন।
পরে এদিন সন্ধ্যায় কলকাতায় অবস্থিত রাজ্যের প্রধান নির্বাচনী কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে এক সংবাদ সম্মেলন করা হয়। প্রধান নির্বাচনী কর্মকর্তা মনোজ কুমার আগরওয়াল জানান, ‘খসড়া তালিকা থেকে বাদ পড়ছে ৫৮ লাখ ২০ হাজার ৮৯৯ জনের নাম।’
সবচেয়ে বেশি নাম পড়ে বাদ পড়েছে কলকাতা উত্তর জোনে, কম নাম বাদ পড়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জোনে। এর মধ্যে রয়েছে মৃত ভোটার, ভুয়া ভোটার, নিখোঁজ ভোটার, স্থানান্তরিত হয়ে অন্য জায়গায় চলে যাওয়া এবং এসআইআর’র জন্য প্রয়োজনীয় এনুমারেশন ফর্ম পূরণ না করা ভোটাররা।
আগরওয়াল আরও জানান, ভোটার তালিকা থেকে যাদের নাম বাদ গিয়েছে, তাদের ডাকা হবে। ৭ দিন পর থেকে নোটিশ পাবেন। নির্দিষ্ট আবেদনপত্র জমা দিয়ে পুনরায় নাম তুলতে হবে। অভিযোগ জানানো যাবে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত। ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এর শুনানি চলবে। চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে আগামী বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি।
এদিকে গোটা রাজ্যে যে ৫৮ লাখের বেশি ভোটারের নাম বাদ গেছে, তার মধ্যে রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির কেন্দ্র ভবানীপুরে, বাদ পড়া নামের সংখ্যা ৪৪ হাজার ৭৭০। আর মুখ্যমন্ত্রী যেই কেন্দ্রে ভোট দেন, সেই মিত্র ইন্সটিউশন বুথে বাদ পড়েছে ১২৭ জনের নাম। এটি ২৬০ নম্বর বুথ। তালিকায় দেখা যাচ্ছে, ১২৭ জনের মধ্যে ১৩ জন মৃত। বেশিরভাগ ভোটারকেই হয় খুঁজে পাওয়া যায়নি, অথবা স্থায়ীভাবে স্থানান্তরিত হয়েছেন।
আর এর পরপরই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক ডাকেন মমতা। ভবানীপুরের আট কাউন্সিলর এবং বিএলএ-২ দের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। কোনো বৈধ নাম বাদ গেলে শুনানিতে তার পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দেন মমতা। তার স্পষ্ট নির্দেশ যাদের নাম বাদ গিয়েছে তাদের পাশে দাঁড়ানোর। ওই বৈঠকে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী।
অন্যদিকে, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারের কেন্দ্র পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নন্দীগ্রামের ৭৯ নম্বর বুথ নন্দনায়কবাড় প্রাথমিক স্কুলে ১১ জনের নাম বাদ গেছে।
উল্লেখ্য, গত ৪ নভেম্বর পশ্চিমবঙ্গসহ ১২টি রাজ্য ও কেন্দ্রীয় শাসিত অঞ্চলে এসআইআর চালু হয়। কিন্তু তারপরেই রাজ্যের ভোটারদের একাংশের মনে যথেষ্ট উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে। খসড়া তালিকা থেকে তাদের নাম বাদ পড়তে পারে, এই আশঙ্কা থেকে একাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ।
আবার তেমনি অতিরিক্ত কাজের চাপ সহ্য করতে না পেরে এসআইআর’র কাজে নিযুক্ত কয়েকজন ‘বুথ লেভেল অফিসার’র (বিএলও) মৃত্যু হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। এমন এক প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার খসড়া তালিকা প্রকাশের পর পরই অনলাইন এবং অফলাইন-দুইটি মাধ্যমে নিজেদের নাম যাচাই করেন ভোটাররা।
কিউএনবি/অনিমা/১৭ ডিসেম্বর ২০২৫,/সকাল ১০:৫৩