রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:৪৬ পূর্বাহ্ন

তিউনিসিয়ায় বিরোধী নেত্রীর ১২ বছরের কারাদণ্ড

Reporter Name
  • Update Time : শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫
  • ৩৬ Time View

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আরব বসন্তের সূতিকাগার হিসেবে পরিচিত তিউনিসিয়ার প্রভাবশালী বিরোধী দলীয় নেত্রী ও ‘ফ্রি ডেসতুরিয়ান পার্টি’র (ফ্রি কনস্টিটিউশনাল পার্টি) সভাপতি আবির মুসিকে ১২ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির একটি আদালত।

তিউনিসিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্ট কাইস সাইদের সমালোচকদের বিরুদ্ধে চলমান কঠোর অভিযানের মধ্যেই আবির মুসিকে এই দণ্ড দেওয়া হয়। দেশটির রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে এ রায়।

শুক্রবার ঘোষিত এই রায়কে ‘অন্যায় ও রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্য প্রণোদিত’ বলে অভিহিত করেছেন মুসির আইনজীবী নাফা লারিবি। তিনি বলেন, এটি কোনও স্বাধীন বিচারিক সিদ্ধান্ত নয় বরং সরকার-নির্দেশিত একটি আদেশ। গত দুই বছরের মধ্যে এটি ছিল আবির মুসির বিরুদ্ধে তৃতীয় বিচারিক আদেশ।

রায়ের আগে দেওয়া এক বিবৃতিতে ফ্রি ডেসতুরিয়ান পার্টি জানিয়েছে, ২০২৩ সালের ৩ অক্টোবর থেকে আবির মুসিকে ‘ইচ্ছাকৃত ও নির্বিচারভাবে’ আটক রাখা হয়েছে। দলটির অভিযোগ, বিরোধী কণ্ঠরোধ করতেই তাকে বারবার মামলার মুখোমুখি করা হচ্ছে।

২০১৬ সাল থেকে ফ্রি ডেসতুরিয়ান পার্টির নেতৃত্বে রয়েছেন আবির মুসি। তিনি প্রয়াত সাবেক প্রেসিডেন্ট আবিদিন বেন আলির ঘনিষ্ঠ সমর্থক ছিলেন। ২০১১ সালে ‘আরব বসন্ত’ গণঅভ্যুত্থানে বেন আলির পতনের মধ্য দিয়ে তিউনিসিয়ায় গণতান্ত্রিক উত্তরণ শুরু হয়েছিল। এ অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে মুসি রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় হয়ে ওঠেন।

মুসির দল বর্তমান প্রেসিডেন্ট কাইস সাইদের বিরুদ্ধে একাধিক বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ কর্মসূচি আয়োজন করেছে। সাইদ ২০১৯ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন এবং ২০২১ সালে নির্বাচিত সংসদ ভেঙে দিয়ে ডিক্রির মাধ্যমে শাসন শুরু করেন। তিনি দাবি করেন, দেশকে ‘নৈরাজ্য থেকে রক্ষা করতেই’ এসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল।

২০২৩ সালে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের প্রবেশপথে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন আবির মুসি। সে সময় তার বিরুদ্ধে ‘বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে হামলার’ অভিযোগ আনা হয়। তবে মুসি এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, তিনি কেবল তার সাংবিধানিক অধিকার অনুযায়ী সমালোচনা ও বৈধ রাজনৈতিক বিরোধিতা করছিলেন।

এর আগে ২০২২ সালে প্রেসিডেন্ট সাইদের জারি করা ডিক্রি ৫৪-এর আওতায় ‘ভুয়া সংবাদ প্রচারের’ অভিযোগে মুসিকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়, যা পরে আপিল করে কমানো হয়। প্রথম দফার সাজা ভোগ শেষে গত বছরের জুনে মুক্তি পেলেও একই আইনে তাকে আবারও দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। সেই মামলার আপিল প্রক্রিয়া এখনও চলমান রয়েছে।

মুসির সমালোচকদের দাবি, তিনি বেন আলির শাসনামলের কর্তৃত্ববাদী রাজনীতিতে ফেরার চেষ্টা করছেন। তবে মানবাধিকার সংগঠন ও বিরোধী দলগুলো বলছে, বর্তমান সরকারও একইভাবে কর্তৃত্ববাদী পথে হাঁটছে।

তবে প্রেসিডেন্ট কাইস সাইদ এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন। তার দাবি, বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবেই কাজ করছে এবং রাষ্ট্রের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় আইন প্রয়োগ করা হচ্ছে। সূত্র: আল-জাজিরা

কিউএনবি/অনিমা/১৩ ডিসেম্বর ২০২৫,/রাত ১০:২৭

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

December 2025
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৬
IT & Technical Supported By:BiswaJit