ডেস্ক নিউজ : দেশের ওষুধ শিল্প ঘিরে ঝুঁকি তৈরি হওয়ার জন্য সরকারের অস্বচ্ছ এবং একপেশে নীতি-নির্দেশনাকে দায়ী করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বুধবার (১৩ আগস্ট) গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তিনি এসব কথা বলেন। বিজ্ঞপ্তিতে মির্জা ফখরুল বলেন, প্রায় দুই বছর যাবৎ নতুন কোনো ওষুধের নিবন্ধন দেয়া হয়নি। এছাড়া অনেক দিন যাবত ওষুধের মূল্য সমন্বয়ও করা হয়নি।
তিনি বলেছেন, সরকার গঠিত ওষুধ নিয়ন্ত্রণ কমিটি (ডিসিসি), অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের তালিকা প্রণয়নে কাজ করা টাস্কফোর্স কমিটি এবং ডিসিসির টেকনিক্যাল সাব কমিটিতে বাংলাদেশ ওষুধশিল্প সমিতির কোনো প্রতিনিধি রাখা হয়নি। এটা শিল্পের স্বার্থবিরোধী বলে তিনি মন্তব্য করেন। বিএনপি মহাসচিব বলেন, ওষুধশিল্পের নীতি প্রণয়ন ও উন্নয়নে স্বচ্ছতা ও অংশগ্রহণমূলক সিদ্ধান্ত প্রয়োজন। এই খাতের সঙ্গে জড়িত সব পক্ষের মতামত গুরুত্ব দেয়া উচিত। বাংলাদেশ ওষুধশিল্প সমিতি ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধান খুঁজে বের করাই সরকারের জন্য শ্রেয়।
তিনি বলেন, শিল্প উদ্যোক্তাদের বাদ দিয়ে কোনো কমিটি গঠন বা নীতি প্রণয়ন সমর্থনযোগ্য নয়। এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের পরিস্থিতি মাথায় রেখে এই শিল্পের সুরক্ষায় সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তিনি আরও উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের ওষুধশিল্প দেশের অর্থনীতি, জনস্বাস্থ্য ও কর্মসংস্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। দেশের চাহিদার প্রায় শতভাগ ওষুধ এখন স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত হয়। এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, কানাডা, অস্ট্রেলিয়াসহ ১৬০টিরও বেশি দেশে বাংলাদেশি ওষুধ রফতানি হয়। এই খাত এপিআই (অ্যাকটিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রিডেন্ট) উৎপাদনেও সক্ষমতা অর্জন করেছে।
বিএনপির শাসনামলে এই শিল্পের উন্নয়নে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়া হয় বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে ১৯৯৪ সালে ওষুধের মূল্যনীতি প্রণয়ন, ২০০২ সালে জাতীয় ওষুধ নীতি হালনাগাদ, ২০০৩ সালে ওষুধ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ শক্তিশালীকরণ, ট্রিপস ছাড়ের সুযোগ কাজে লাগিয়ে সাশ্রয়ী জেনেরিক ওষুধ উৎপাদন, রফতানি প্রণোদনা এবং গবেষণায় বিনিয়োগ বৃদ্ধি।
মির্জা ফখরুল বলেন, গত দুই বছর ধরে নতুন কোনো ওষুধ নিবন্ধন দেয়া হয়নি এবং ওষুধের মূল্য সমন্বয়ও করা হয়নি। এতে ট্রিপস ওয়েভার সুবিধা হারানোর ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। ২০২৬ সালের ২৪ নভেম্বর বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হবে। তাই নতুন ওষুধ নিবন্ধন দ্রুত শুরু করা জরুরি। বিএনপি আশা করে, সরকার ওষুধশিল্পের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে উদ্যোক্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে শিল্পবান্ধব সিদ্ধান্ত নেবে।
কিউএনবি/আয়শা/১৩ আগস্ট ২০২৫/সন্ধ্যা ৬:৩৩