সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:১১ পূর্বাহ্ন

যুদ্ধবিরতির নিময় ভেঙ্গে যে কারণে গাজায় ইসরায়েলের হামলা

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ১৯ মার্চ, ২০২৫
  • ১৩৫ Time View

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : গাজায় ফের গণহত্যামূলক যুদ্ধ শুরু করেছে ইসরায়েল। এমন মর্মান্তিক খবরে জেগে উঠেছে বিশ্ববাসী। মূলত যুদ্ধবিরতি ভেঙে গতকাল মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) রাতভর হামলা চালিয়ে চার শতাধিক মানুষকে হত্যা করেছে দখলদার বাহিনী। ভোরের দিকে মানুষ যখন ঘুমিয়ে ছিল, তখন ভয়াবহ এই বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় গাজায় পুনরায় যুদ্ধ শুরু করার ঘোষণা দিয়ে একটি বিবৃতিও প্রকাশ করেছে। ইসরায়েল দাবি করেছে যে তারা গাজায় বন্দিদের মুক্তি দিতে হামাসকে বাধ্য করতে এই হামলা করেছে। তারা আরও দাবি করেছে, হামাস পুনরায় অস্ত্র তৈরি করছে এবং একটি নতুন হামলার পরিকল্পনা করছে জেনেই হামলা চালানো হয়েছে। তবে এই দাবির যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।

ইসরায়েল হয়তো কখনোই গাজা ছেড়ে যাওয়ার বা যুদ্ধ বন্ধ করার ইচ্ছা করেনি। যখন উভয় পক্ষ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছিল, ইসরায়েল তখনও লিখিতভাবে বলতে অস্বীকার করেছে, তারা প্রথম পর্বের পরে আবার শত্রুতা শুরু করবে না। মিশর, কাতার এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের – মধ্যস্থতাকারীদের কাছ থেকে মৌখিক গ্যারান্টি পাওয়ার পরে হামাস এই শর্তে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছিল যে, ইসরায়েল ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে তার গণহত্যামূলক যুদ্ধ পুনরায় শুরু করবে না। তবে ইসরায়েল সে শর্ত মানেনি।

ইসরায়েল বলেছে যে এই হামলা শুধু বন্দিদের ফিরে পাওয়ার জন্যই করছে, এটা বিশ্বাস করা খুব কঠিন। গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধও একটি বৃহত্তর সংঘাতের অংশ, সমগ্র অঞ্চল জুড়েই আগ্রাসন চালাচ্ছে ইসরায়েল। আর আগ্রাসনের পক্ষে দাবি করছে, নিজেদের নিরাপত্তার জন্য এই যুদ্ধ প্রয়োজন।

আল জাজিরার হামদাহ সালহুত বলেছেন, যুদ্ধবিরতির চুক্তির দ্বিতীয় পর্বের জন্য আলোচনা থেকে নিজেদের সরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসরায়েল। ওই চুক্তি না হলে শেষ পর্যন্ত যুদ্ধের অবসান ঘটা এবং গাজায় বন্দি ৫৯ জন ইসরায়েলির মুক্তি দেখার সম্ভাবনা খুবই কম।

এদিকে হামাস টেলিগ্রামে এক বিবৃতিতে ইসরায়েলের প্রতি যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন এবং গণহত্যা অব্যাহত রাখার অভিযোগ এনেছে। গোষ্ঠীটি বলছে, এই আক্রমণগুলো “সব আন্তর্জাতিক এবং মানবিক চুক্তির স্পষ্ট লঙ্ঘন”। বিপজ্জনক মানবিক পরিস্থিতি এবং উপত্যকায় জ্বালানীর অভাবের অর্থ হল অনেক আহতরা মারা গেছে কারণ তারা হাসপাতালে পৌঁছতে পারেনি।

অন্যদিকে হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, হামলা পুনরায় শুরু করার আগে ইসরাইল যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পরামর্শ করে নিয়েছে। ফলে বুঝা যাচ্ছে মার্কিন সবুজ সংকেত পেয়েই তারা এই ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে।

গাজায় প্রায় ৫৯ জন ইসরায়েলি বন্দী রয়েছে। ইসরায়েলি সরকারের মতে তাদের মধ্যে অর্ধেকেরও কম এখনো জীবিত আছেন। আর হামাস ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন এবং বন্দীদের জীবন ঝুঁকির জন্য অভিযুক্ত করেছে।

ইসরায়েলে বন্দিদের পরিবারের ফোরাম বলেছে “তাদের সবচেয়ে বড় ভয় সত্যি হয়েছে” এবং বন্দিদের ছেড়ে দেয়ার জন্য তাদের সরকারকে দোষারোপ করেছে। হোস্টেজ অ্যান্ড মিসিং ফ্যামিলি ফোরাম এক বিবৃতিতে বলেছে, “হামাসের ভয়ানক বন্দিদশা থেকে আমাদের প্রিয়জনকে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়ার ইচ্ছাকৃত ব্যাঘাতের জন্য আমরা হতবাক, ক্ষুব্ধ এবং ভীত।”

ইসরায়েলি অভিযানগুলো মূলত উত্তর, মধ্য ও দক্ষিণ গভর্নরেটকে লক্ষ্য করে হয়েছে। আল জাজিরা আরবি জানিয়েছে যে ইসরায়েলি ট্যাঙ্কগুলো খান ইউনিসের আবাসান শহরে গোলাবর্ষণ করেছে। আল জাজিরার তারেক আবু আজজুম বলেছেন, “বেশিরভাগ বিমান হামলা হয়েছে অস্থায়ী স্কুল এবং আবাসিক ভবনগুলোতে, যেখানে লোকেরা আশ্রয় নিচ্ছে।”

মাত্র কয়েক ঘণ্টায় ইসরায়েলের হাতে অন্তত ৪০৪ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। উপত্যকার ছবিগুলোতে নিহতদের মধ্যে শিশুদেরও দেখা মিলেছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো অসংখ্য মানুষ রয়েছে। গাজার সরকারী মিডিয়া অফিস বলেছে, নিহত এবং নিখোঁজ ব্যক্তিদের বেশিরভাগই নারী, শিশু এবং বয়স্ক ব্যক্তিরা। এছাড়া কিছু ক্ষেত্রে, “পুরো পরিবারের সব সদস্য” নিহত হয়েছেন।

কিউএনবি/অনিমা/১৯ মার্চ ২০২৫,/রাত ৯:০৬

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit