শনিবার, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০২:৫৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম
স্বামীর মৃত্যুর ১২ মিনিট পর স্ত্রীর মৃত্যু স্বামীর লাশ নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে স্ত্রীর মৃত্যু যশোর শিক্ষা বোর্ডে এসএসসিতে মেধাবৃত্তি পেল ২৭৮০ শিক্ষার্থী ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত আফগানে ত্রাণ পাঠালো বাংলাদেশ লুণ্ঠিত অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধারে পুরস্কার ঘোষণা করলো পুলিশ ভাতিজা তামিমের জন্য ‘মাঠ’ ছাড়লেন চাচা আকরাম ঢাকার তাপমাত্রা ও বৃষ্টি নিয়ে যে বার্তা দিল আবহাওয়া অফিস কিমের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে উচ্ছ্বাস প্রকাশ শি জিনপিংয়ের লালমনিরহাটে বহুল আলোচিত একাধিক ক্লুলেস ছিনতাই মামলার আসামি রানা গ্রেপ্তার বৃষ্টি হবে কবে জানাল আবহাওয়া অফিস আফগানিস্তানে ফের শক্তিশালী ভূমিকম্প

নিজ বাড়িতেই পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার খুলেছিলেন সেই কর্মকর্তা!

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ১০ মার্চ, ২০২৫
  • ৬০ Time View

ডেস্ক নিউজ : পুলিশ নিয়োগের জন্য বাড়িতেই গড়ে তোলা হয় ট্রেনিং সেন্টার। সেখান থেকে পরীক্ষার প্রস্তুতির যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। আবেদনকারীদের ওই ট্রেনিং সেন্টারে ভর্তি করা হয় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির এক মাস আগে। প্রতি ব্যাচে ভর্তি হয় ১৫ থেকে ২০ জন। জনপ্রতি চুক্তি ৫-৭ লাখ টাকা। বিগত ৭-৮ বছরে এভাবে শতাধিক ব্যক্তিকে পুলিশ বাহিনীতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। যার মাধ্যমে প্রায় ৫-৬ কোটি টাকা ঘুষ বাণিজ্য হয়েছে।

অভিনব এমন নিয়োগ বাণিজ্যসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অঢেল সম্পদের মালিকানা অর্জনের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার ছানোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অভিযোগ অনুসন্ধানে এরই মধ্যে সংশ্লিষ্ট নথিপত্রও তলব করা হয়েছে।

গত ৩ মার্চ এক চিঠিতে স্ত্রী, সন্তান, ভাই, বোন ও মায়ের এনআইডিসহ বিভিন্ন নথিপত্র তলব করা হয়। এরই মধ্যে কিছু নথিপত্র দুদকে পৌঁছেছে বলেও জানা গেছে।

দুদক সূত্র জানা যায়, ছানোয়ার হোসেন ঢাকার ধামরাইয়ে নিজের বাড়িতে স্থাপন করেছেন পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির এক মাস আগে আবেদনকারীদের ভর্তি করে তার ভাই স্কুল শিক্ষক আবদুল মান্নান ও নুরুল ইসলাম কোচিং বাণিজ্যের যাবতীয় কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেন। চূড়ান্ত নিয়োগপ্রাপ্তদের থেকে নেওয়া হয় ৫ থেকে ৮ লাখ টাকা। নামমাত্র মূল্যে কারো কারো কাছ থেকে নেওয়া হয় জমিও।

অভিযোগে বলা হয়, তার বড় ভাই আব্দুল মান্নান ধামরাইয়ের সাইদপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। ২০১৭ সাল থেকে তিনি পুলিশ বাহিনীতে নিয়োগ দিয়ে বাণিজ্য করে আসছেন। শুধু পুলিশ নিয়োগের জন্য তারা বাড়িতে একটি ট্রেনিং সেন্টার স্থাপন করেছেন। প্রতি ব্যাচে ১৫ থেকে ২০ জনকে ভর্তি করিয়ে ৫ থেকে ৮ লাখ টাকা নেওয়া হয়। উদাহরণ হিসেবে অভিযোগে বলা হয়, ২০১৭ সালে চাচাতো ভাই রাজু ওরফে আরিফুল ইসলামকে সাড়ে ৪ লাখ টাকার বিনিময়ে চাকরি দেওয়া হয়েছে, একইভাবে অন্য চাচাতো ভাই শাকিল হোসেনের কাছ থেকে নেওয়া হয়েছে ৬ লাখ টাকা।

অভিযোগে বলা হয়, বিগত ৭-৮ বছরে ছানোয়ার হোসেন শতাধিক ব্যক্তিকে পুলিশ বাহিনীতে নিয়োগ দিয়েছেন। যার মাধ্যমে ৫ থেকে ৬ কোটি টাকা ঘুষ বাণিজ্য করেছেন। এছাড়াও তাদের একটি লাঠিয়াল বাহিনী রয়েছে বলে জানা গেছে, যারা দুর্নীতির বিষয়ে কথা বললে হুমকি ও মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করে।

হয়রানির শিকার তার আত্মীয় ভুক্তভোগী দেলোয়ার হোসেন অভিযোগ করে বলেন, ছানোয়ারের বড় ভাই আব্দুল মান্নানের বাড়ির দক্ষিণে আমার ৩৭ শতাংশ একটি জমি রয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ছানোয়ার হোসেন প্রভাব খাটিয়ে ধামরাই থানায় মিথ্যা, বানোয়াট ও হয়রানিমূলক চাঁদাবাজির মিথ্যা মামলায় আমাকে ২ নম্বর আসামি করেন। আমি মিথ্যা মামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার চাই।

ছানোয়ারের যত সম্পদ

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ছানোয়ার হোসেন ও তার ভাইয়েরা বিভিন্ন ব্যাংকের ২৭টি ব্যাংক হিসাবে কোটি কোটি টাকা লেনদেন করছেন। ঘুষ বাণিজ্যের টাকা দিয়ে বাড়িতে একটি আলিশান দোতলা বাড়ি, একটি পুলিশ নিয়োগের ট্রেনিং সেন্টার ও ঘর করেছেন। যার আনুমানিক মূল্য কোটি টাকার বেশি। এ ছাড়া আব্দুল মান্নানসহ তার ভাইয়েরা ছানোয়ার হোসেনের নাম ভাঙ্গিয়ে অনেকের কাছ থেকে জমি ক্রয় করেছেন। যার মধ্যে রয়েছে– ঢাকার ধামরাইয়ের উত্তর দীঘলগ্রামের মো. হানিফ আলির থেকে ১৪ শতাংশ, একই গ্রামের শাহাবুদ্দিনের কাছ থেকে ১৬ শতাংশ, চাঁন মিয়ার কাছ থেকে ১৫৭ শতাংশ, আনোয়ার হোসেনের কাছ থেকে ১৬ শতাংশ, শামছুল হকের কাছ থেকে ১৬ শতাংশ এবং দক্ষিণ দীঘলগ্রামের আওয়াল মিঠন আনোমানারার কাছ থেকে ৩৯ শতাংশ জমি ক্রয় করা হয়। এসব জমির মূল্য প্রায় ৭ কোটি টাকা হবে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।

এছাড়া বড় ভাই আব্দুল মান্নান মুরাদনগরের আনোয়ারা বেগমের ৮ শতাংশ, লাকুরিয়া পাড়ার তোবারক হোসেন কামাল ও মো. আলী খানের ৪.৫ শতাংশ, মো. চাঁন মিয়ার ৮০ শতাংশ জমি ক্রয়ের জন্য বায়না চুক্তি করেছেন। এসব জমির মূল্য প্রায় সাড়ে ৪ কোটি টাকা হতে পারে।

মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন ২০০৬ সালে ২৫তম বিসিএসে সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশে যোগদান করেন। প্রশিক্ষণ শেষে ২০০৮ সালের মার্চে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশে কর্মজীবন শুরু করেন। ২০০৯ সালে ঢাকা মহানগর পুলিশের অন্যতম বিশেষায়িত বোম ডিসপোজাল ইউনিটের ইনচার্জ হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৩ সালে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে পদোন্নতি পাওয়ার পর পুনরায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা বিভাগে অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হন। তিনি ঢাকা মহানগর পুলিশের এন্টি কিডন্যাপিং স্কোয়াড (একস) ও কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের (সিটিটিসি) ইনর্চাজ হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে জানতে মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেনের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলেও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

কিউএনবি/অনিমা/১০ মার্চ ২০২৫,/সকাল ১০:৪৫

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

September 2025
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit