রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ০৬:২৫ পূর্বাহ্ন

বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো সেরনিয়াবাত ভবন

Reporter Name
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
  • ৮০ Time View

ডেস্ক নিউজ : বরিশালে উত্তাল ছাত্র-জনতার বিক্ষোভের মুখে অবশেষে বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো শেখ হাসিনার ভাগ্নে ও বরিশাল সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর বাড়ি।

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে বারোটার পর নগরীর কালীবাড়ি রোডের সেরনিয়াবাত ভবন ঘিরে হাজারো বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা জড়ো হয়। ফেসবুকে আগেই এই হামলার ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল।

রাত ১২টা ৫০ মিনিটের দিকে বিক্ষুব্ধরা বাড়ির দেয়াল ভেঙে বুলডোজার প্রবেশ করানোর চেষ্টা করলে সেনাবাহিনীর সদস্যরা বাধা দেয়। প্রথমে সেনাবাহিনী বুলডোজারের চাবি নিয়ে নেয় এবং বিক্ষোভকারীদের শান্ত করার চেষ্টা করে। কিন্তু উত্তেজিত ছাত্র-জনতা সেনা সদস্যদের “ছাত্রলীগের দালাল” বলে স্লোগান দিতে থাকে।

একপর্যায়ে সেনাবাহিনীর সঙ্গে বিক্ষুব্ধদের বাকবিতণ্ডা শুরু হয়।

সেনাসদস্যদের প্রতিরোধ ব্যর্থ হলে রাত ১টা ২০ মিনিটের দিকে সেনাবাহিনী বুলডোজারের চাবি বিক্ষোভকারীদের হাতে তুলে দিয়ে ঘটনাস্থল থেকে সরে যায়। এরপরই ছাত্র-জনতা বুলডোজার চালিয়ে সেরনিয়াবাত ভবন গুঁড়িয়ে দেওয়া শুরু করে।

এই ভবন নিয়ে বহুদিন ধরে আলোচনা চলছিল। স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, সাদিক আবদুল্লাহ এই ভবনকে “টর্চার সেল” হিসেবে ব্যবহার করতেন। আওয়ামী লীগবিরোধী অনেককে এখানে আটকে রেখে নির্যাতন করা হতো বলে অভিযোগ রয়েছে।

মাহফুজুর রহমান নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘এই বাড়ি ছিল ফ্যাসিবাদের প্রতীক। এখানে মানুষ নির্যাতিত হয়েছে, শোষিত হয়েছে। আমরা এই অভিশপ্ত বাড়ি আর বরিশালে থাকতে দেব না।’

বিক্ষোভকারী ইয়াকুব মিয়া বলেন, ‘সাদিক আবদুল্লাহর এই বাড়ি ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির স্মারক। তাই আমরা এটিকে ধ্বংস করছি।’

এর আগেও এই ভবনে হামলা হয়েছে। গত বছরের ৫ আগস্ট উত্তেজিত জনতা এই ভবনে আগুন ধরিয়ে দেয়। এরপর থেকেই বাড়িটি জনরোষের কেন্দ্রে পরিণত হয়।

গত রাতে ৫ ফেব্রুয়ারি শেখ হাসিনার একটি ভাষণের পর ফের বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে এবং ছাত্র-জনতা রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বর ভাঙচুরের পর বরিশালে সেরনিয়াবাত ভবন গুড়িয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বরিশালসহ সারাদেশে রাজনৈতিক উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। আওয়ামী লীগ এই হামলাকে ষড়যন্ত্র ও নৈরাজ্য বলে অভিহিত করেছে, অন্যদিকে ছাত্র-জনতা ও বিরোধী দলগুলোর দাবি, এটি ছিল গণঅভ্যুত্থান।

এই ঘটনার পর বরিশালে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। যেকোনো মুহূর্তে নতুন সংঘর্ষের আশঙ্কা করা হচ্ছে। বরিশালের সেরনিয়াবাত ভবন এখন ধ্বংসস্তূপ। এটি শুধু একটি বাড়ি ছিল না, এটি ছিল রাজনৈতিক ক্ষমতার প্রতীক। এক সময়ের ক্ষমতাধর পরিবারের এই পতন বাংলাদেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যতের নতুন দিকনির্দেশ করছে।

কিউএনবি/অনিমা/৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫,/সকাল ১০:১৯

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit