বুধবার, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৩:৪৩ পূর্বাহ্ন

একের পর এক হিট গান গেয়েও পুরস্কার না পাওয়ার আক্ষেপ জুনের

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ৬ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ৩৯ Time View

বিনোদন ডেস্ক : দেবের ছবিতে তার গান প্রথম দিন থেকে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। মাঝে ১০ বছরের বিরতিতে ছিলেন। আবার ফিরেই ‘খাদান’ ছবিতে কণ্ঠ দিলেন। আবারও জনপ্রিয়তার তুঙ্গে। বাকিটা ইতিহাস। এরপর আনন্দবাজার অনলাইনের খোঁজ। মুখোমুখি হলেন সংগীতশিল্পী জুন বন্দ্যোপাধ্যায়। তার আসল নাম দেবপ্রিয়া। সম্প্রতি এক সন্ধ্যায় সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন সাংবাদিক উপালি মুখোপাধ্যায়। এটি যুগান্তর পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো—

যারা বিয়ে করেছেন তারা তো গাইছেনই ‘হায় রে বিয়ে হলো কেনে’! যাদের বিয়ে হয়নি, তাদেরও এই গান মনপছন্দ। এ বিষয়ে গায়িকা জুন বন্দ্যোপাধ্যায় কী ভাবছেন? কোন রসায়নের জোরে দেবের ছবিতে তার গাওয়া প্রত্যেকটি গান হিট?—এমন প্রশ্নের উত্তরে জুন বলেন, পুরোটাই কাকতালীয়। আমার কোনো পরিকল্পনা ছিল না। আমার প্রথম নেপথ্য গান ‘চিরদিনই তুমি যে আমার’ ছবিতে। সেখানেও দেব অতিথি চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন! পরে তো দেবের ছবি মানেই আমার গান। দেবের নায়িকার ঠোঁটে আমার গান। ১০ বছর পরও সেই ধারা বজায় থাকল, তাতেই খুশি।

গানটি ভীষণ ছন্দোময়, যাকে বলা যায়— ‘পেপি’। আপনার কি এ ধরনের গান গাইতেই বেশি ভালো লাগে?—এর উত্তরে গায়িকা বলেন, এ ধরনের গান গাওয়ার আলাদা মজা আছে। তার মানে এই নয়, এ ধারার গানই কেবল পছন্দ। আমার সব ধরনের গান গাইতে ইচ্ছে করে। মেলোডি বা প্রেমের গান, দুঃখের গান—সব সব। এই গানের পেছনেও একটা গল্প আছে…

জুন বলেন, গানটি গাওয়ার আগে ১০ মিনিটও পাইনি! কারণ স্টুডিওতে দুটি গান রেকর্ডিংয়ের মাঝখানে আমার গানটি রেকর্ড করার কথা ছিল। কিন্তু আগের গানটি শেষ হতে দেরি হয়ে যায়। তখন আমায় বলা হয়, গানটি যেন আমি বাড়ি থেকে গেয়ে পাঠাই। কিন্তু আমার ইচ্ছে স্টুডিওতে গান গাওয়ার। সবার উপস্থিতিতে গাইলে গান নিয়ে, গায়কী নিয়ে বাকিদের মতামত জানতে পারব। তাই মিনিট দশেকের মধ্যে নিজেকে প্রস্তুত করে ‘হায় রে বিয়ে হলো কেনে’ গেয়েছিলাম।

মাত্র ১০ মিনিটে গাওয়া গান হিট। এর নেপথ্যেও কি দেব-জুনের বিশেষ কোনো বিশেষ রসায়ন আছে। গায়িকা মুচকি হেসে বলেন, আমার আসল নাম দেবপ্রিয়া। ডাক নাম জুন। ওই জন্যই বোধহয় দেবের প্রিয়াদের জন্য দেবপ্রিয়া গাইলেই গান হিট। আবার হেসে বললেন, রসিকতা করলাম। বিশ্বাস করুন, এতে আমার কোনো হাত নেই।

একটু আগেই বললেন, সবসময় সব ধরনের গান গাওয়ার মেজাজ থাকে না। কী করে তৈরি করেন সেই মেজাজ?—এমন প্রশ্নের উত্তরে জুন বলেন, এটিও একটি অভ্যাসের বিষয়। ধরুণ, চূড়ান্ত রোমান্টিক গান গাইতে হবে। এদিকে মেজাজ খুবই খারাপ। একবার বা দুবার টেকের পর মনের মতো গাইতে না পারলে রেকর্ডিং স্টুডিওতেই একটু সময় চেয়ে নিই। মনকে প্রস্তুত করি। তার পর ঠিক গাইতে পারি। 

তিনি বলেন, কারণ এখন কারও হাতে সময় নেই। ফলে মুড নিয়ে বসে থাকলে তো হবে না! তাই আগে নিজেকে শান্ত করি। ঈশ্বরকে স্মরণ করি। দেখি, সব ঠিক হয়ে যায়। একটা ছোট্ট ঘটনা বলি— ‘চিরদিনই তুমি যে আমার’ ছবিতে ‘বাতাসে গুনগুন’ গাইব। এদিকে সেদিন আমার গলার অবস্থা খুবই খারাপ। সুরকার জিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বাড়ি চলে যাওয়ার অনুরোধ জানালেন। আমি কিন্তু বাড়ি যাইনি। চিকিৎসকের কাছে গিয়ে কড়া ডোজের ওষুধ খেয়ে ঠিক সময়ে গেয়েছি। গলা শুনে কেউ বোঝেননি, আমার কী অবস্থা হয়েছিল।

সময় নেই বলে আগের মতো সবাই মিলে গান রেকর্ডিংয়ের চলটাও নেই— এটি ভালো না খারাপ?গায়িকা বলেন, অন্ধকারের মধ্যে তীর চালানো বোঝেন? আমাদের ক্ষেত্রে এটাই হয়। আমরা এখন নায়ক বা নায়িকাকেও ভালো করে চিনি না! গল্পের একটা আভাস হয়তো দেওয়া হয়। আমরা একা স্টুডিওতে গিয়ে নিজের অংশটুকু রেকর্ড করে চলে আসি! কারও সঙ্গে কারও যোগাযোগ নেই, দেখা নেই। ভালো লাগে না। এতে ভুল হওয়ার আশঙ্কা অনেক বেশি। আমি জানি না, নায়িকা কে বা কেমন। এবার জোরালো গাইলে হয়তো তার বাচনভঙ্গির সঙ্গে মানানসই হবে না। আবার আস্তে গাইলেও হয়তো উল্টো ফল হবে। আগে সবার সঙ্গে সবার আদান-প্রদান ছিল। মহড়া হতো। তার পর গাওয়া হয়। গানগুলো তাই চিরস্মরণীয় হতো।

১০ বছর পর বাংলা গানের দুনিয়ায় ফিরে অনেক বদল দেখছেন? এ বিষয়ে জুন বলেন, অনেক, অ-নে-ক বদল। গান, গানের ধারা, গায়কী, মিউজিক ও প্রচার— এত কিছু আমার মধ্যে ছিলই না। সেই সময় একবার ছোটপর্দায় দেখানো হতো। তার পরেই সোজা বড়পর্দায়। এই প্রচার যদি সেই সময়ে পেতাম, তা হলে আমার গান আরও জনপ্রিয় হতো। 

তিনি বলেন, এত হিট গান দিয়েও একটা পুরস্কার পাইনি। কেউ জানতেও চাননি— কে গেয়েছেন। সবাই জিৎদার নাম জানতেন। তিনি গানগুলো তৈরি করেছেন, সেটিও জানতেন। গায়কের নাম নিয়ে কারও কোনো মাথাব্যথা ছিল না। একের পর এক গান জনপ্রিয় হওয়ায় একটা সময়ের পর আমার নাম শ্রোতারা জানতে পেরেছিলেন। এখন গায়কের জনপ্রিয় হওয়ার অনেক সুযোগ।

আফসোস হয়?—এর উত্তরে জুন বলেন, নিশ্চয়ই হয়। আবার হয়ও না। যখন দেখি জুনের গান মানেই ‘বাতাসে গুনগুন’ বা ‘উলালা’—শ্রোতারা বোঝেন। এখনকার কোনো গান এত বছর ধরে জনপ্রিয় থাকে না।  ‘খাদান’ নিশ্চয়ই দেখেছেন…। অনেকে বলছেন— ‘পুষ্পা ২’-এর ছায়া নাকি ছবিতে। আপনার মনে হয়?— এর উত্তরে এ সংগীতশিল্পী বলেন, না, হয়নি। কারণ যে কোনো রাজ্যেরই প্রত্যন্ত অঞ্চলে গেলে সেখানকার অধিবাসী, চালচলন, আচরণ, সাজপোশাক ও কথাবার্তায়— মিল পাবেন। এই ছবির ক্ষেত্রেও সেটিই হয়েছে। দুই ছবিতেই মাটির কাছাকাছি থাকা মানুষদের গল্প। তাই হয়তো কেউ কেউ মিল পেয়েছেন।

আবার বাংলা ছবির দুনিয়ায় ফিরলেন। কলকাতায় এসে প্রচার সারলেন। আবারও দর্শক-শ্রোতাদের ভালোবাসা পেলেন। নিজের শহরে ঘটে যাওয়া আরজি করকাণ্ড নিয়ে তো কিছু বললেন না, খারাপ লাগেনি? জুন বলেন, অবশ্যই লেগেছে। অবশ্যই প্রতিবাদ জানিয়েছি। আমার সামাজি যোগাযোগমাধ্যম তার সাক্ষী। তার জন্য কম কটাক্ষের শিকার হইনি। মুম্বাইয়ে বাঙালি সম্প্রদায় ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন, পথে নেমেছেন। শুধু বাঙালিরা নন, অন্য সম্প্রদায়ও পথে নেমেছিলেন। হ্যাঁ, সেসব প্রচার করিনি। আর কলকাতায় ছিলাম না। তাই লোকে কম জেনেছে।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/০৬ জানুয়ারী ২০২৫,/সন্ধ্যা ৬:৪৫

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

September 2025
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit