নির্বাচনে বলসোনারোকে অল্প ব্যাবধানে হারিয়ে দেন লুই ইনাসিও লুলা দা সিলভা। তবে বলসোনারো প্রকাশ্যে পরাজয় স্বীকার করেননি। শুধু তাই নয়, লুলা প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেয়ার এক সপ্তাহ পর বলসোনারোর সমর্থকরা ব্রাজিলের পার্লামেন্ট, সুপ্রিম কোর্ট ও প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে হামলা ও ভাঙচুর চালায়।
সাবেক কট্টর ডানপন্থি প্রেসিডেন্ট বলসোনারোকে ক্ষমতায় রাখতে নির্বাচনের ফলা জালিয়াতির ব্যর্থ চেষ্টার অভিযোগে গত মাসে ওয়াল্টার ব্রাগা নেট্টো ও বলসোনারো এবং আরও ৩৫ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ আনা হয়। এখন সেই অভিযোগের তদন্ত চলছে। তদন্তে সহায়তার জন্য শনিবার ওয়াল্টার ব্রাগা নেট্টোকে গ্রেফতার করা হয়।
খবরে বলা হয়েছে, মূলত প্রমাণ সংগ্রহে বাধা দেয়ার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে শনিবার গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয় বলে জানিয়েছে ফেডারেল পুলিশ। প্রসিকিউটর জেনারেলের কার্যালয়ের পর্যালোচনা ও সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি আলেজান্দ্রে ডি মোরায়েসের অনুমোদনক্রমে এই পরোয়ানা জারি হয়।
পুলিশের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ব্রাগা নেট্টো বলসোনারোর এক সাবেক সহকারীর সাক্ষ্য জানার চেষ্টা করেছিলেন বলে পুলিশের কাছে শক্ত প্রমাণ রয়েছে। ওই সহকারী তদন্তকারীদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করেছিলেন। পুলিশ ব্রাগা নেট্টো ও তার সহকারী কর্নেল ফ্লাভিও বোতেলহো পেরেগ্রিনোর বাড়িতেও তল্লাশি অভিযান চালিয়েছে। ফেডারেল পুলিশের প্রতিবেদনে ফল উল্টে দেয়ার চেষ্টাকে অভ্যুত্থান চেষ্টা অভিহিত করে ব্রাগাকে অভ্যুত্থানের পরিকল্পনাকারী প্রধান নেতাদের একজন হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।
৮৮৪ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে যথেষ্ট তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে বলা হয়েছে, অভ্যুত্থান সফল করার জন্য কয়েক ধাপের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। এর মধ্যে ছিল জনগণের মধ্যে নির্বাচনি ব্যবস্থার প্রতি অবিশ্বাস তৈরি করা, পরিকল্পনাকে আইনি কাঠামো দেয়ার জন্য এই আদেশ জারি করা, সামরিক নেতাদের পরিস্থিতির সাথে তাল মিলিয়ে চলতে চাপ দেয়া এবং রাজধানীতে দাঙ্গা উসকে দেয়া।
এছাড়া নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট লুই ইনাসিও লুলা দা সিলভা, ভাইস প্রেসিডেন্ট জেরালদো আলকমিন ও সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি আলেজান্দ্রে ডি মোরায়েসকে হত্যার পরিকল্পনাও অন্তর্ভুক্ত ছিল বলে তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। তদন্তকারীদের অভিযোগ, নিজ বাসভবনে এক বৈঠকের সময় এই হত্যার পরিকল্পনায় সম্মতি দেন ব্রাগা নেট্টো।
সুপ্রিম কোর্টের বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, অভ্যুত্থানের পরিকল্পনা সফল করতে প্রয়োজনীয় অর্থ সংগ্রহ ও বিতরণের সঙ্গে ব্রাগা নেট্টো জড়িত ছিলেন বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। ব্রাগা নেট্টো ও বলসোনারোসহ তাদের মিত্ররা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এই তদন্তকে ‘রাজনৈতিক নিপীড়ন’ বলে দাবি করেছেন তারা। অন্যতম প্রধান আসামি বলসোনারো যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন।