সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:২৬ পূর্বাহ্ন

ফেনীতে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ১০ লাখ মানুষ

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ২৮ আগস্ট, ২০২৪
  • ১৫৯ Time View

ডেস্ক নিউজ : ফেনীর ইতিহাসে স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যায় তছনছ হয়ে গেছে পুরো জনপদ। জেলার ১৬ লাখ মানুষের মধ্যে ১০ লাখ মানুষই বন্যার কবলে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ জনপদের ফুলগাজী-পরশুরাম বন্যা কবলিত এলাকা হলেও এবারের বন্যায় জেলার প্রতিটি উপজেলা বন্যা কবলিত হয়েছে। আকস্মিক এ বানের জলে সম্পূর্ণ ক্ষয়ক্ষতি এখনও নিরূপণ করা সম্ভব না হলেও জেলার ১০ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলাপ্রশাসন ফেনী।

সোমবার (২৬ আগস্ট) জেলাপ্রশাসন সূত্র জানায় জেলার ১০ লাখ মানুষ ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছে। এরমধ্যে ১ লাখ ৫০ হাজার মানুষ বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে। অবশিষ্ট মানুষ বিভিন্ন উঁচু ভবনে আশ্রয় নিয়েছেন। আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা সকলকে ত্রান বিতরণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা। এছাড়াও জেলায় ১টি, ছয় উলজেলায় ৬টি এবং বেসরকারি ৭টি মেডিকেল হাসপাতালে মেডিকেল ক্যাম্প চালু করা হয়েছে।

একই সূত্র জানায়, সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে ৬২ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার,সশস্ত্র বাহিনী কর্তৃক হেলিকপ্টারযোগে ৪৮ হাজার শুকনো খাবার এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত এবং স্থানীয়ভাবে মানুষজনকে ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সমাজ, সশস্ত্র বাহিনী, বিজিবি, পুলিশ, র‍্যাব, ফায়ারসার্ভিসের মাধ্যমে ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলাপ্রশাসন।

জেলার ফুলগাজী, পরশুরাম, ছাগলনাইয়ায় বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হওয়ার পত হঠাৎ অপর দুই উপজেলা সোনাগাজী ও দাগনভূঞাঁয় পানি প্রবেশ করে। তবে ইতোমধ্যে পানি কমতে শুরু করে। পানি কমলেও বিশুদ্ধ খাবার পানি ও খাদ্যের অভাবে চারিদিকে মানুষের হাহাকার।
জেলার বিভিন্ন উপজেলা ঘুরে দেখা গেছে,কোথাও বাড়ির এক তলা পেরিয়ে দোতলা ছুঁয়েছে বানের পানি। জেলার পাঁচ উপজেলার অধিকাংশ জনপদ ডুবে ফেনী শহর ও সদরের বিভিন্ন এলাকায় বুক সমান পানি জমে মানুষের ঘর-বসতিতে।যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে মানুষ। বিদ্যুৎ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক বিহীন হয়ে অন্ধকার জনপদে পরিণত হয় পুরো জেলা।

ইতোমধ্যে পানি কমতে শুরু করায় আশ্রয়কেন্দ্রগুলো থেকে মানুষ বাড়ি ঘরে ফিরতে শুরু করেছে। বন্যা দুর্গতরা জানান, এ মুহূর্তে শুকনো খাবারের চাইতেও স্যানিটারি ন্যাপকিন, রান্না করা খাবার এবং ঔষধ সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন।

গত মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া আকস্মিক বন্যা শুরুতে আঘাত হানে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য লাগোয়া ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলায়। এরপর তা ছড়িয়ে পড়ে ছাগলনাইয়া ও ফেনী সদরে। পরবর্তীতে পানি বাড়ে সোনাগাজী ও দাগনভূঞাঁ উপজেলায়।

ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানিয়েছে, মুহুরী নদীর পানি কমে যাওয়ায় পরশুরাম, ফুলগাজীতে বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হয়েছে। ফেনী শহরেও পানি কমছে। সোনাগাজী, দাগনভূঞাতে বন্যা পরিস্থিতি অবনতির দিকে থাকলেও সোমবার (২৬ আগস্ট) সকালে পানি কমতে শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন একাধিক ভুক্তভোগী।

ফেনী শহরে কোমড় সমান পানিতে ডুবে থাকা কিছু সড়ক এখন দৃশ্যমান। সালাউদ্দিন মোড়, বারাই উত্তরা ও মহিলা ক্যাডেট কলেজ সড়কে যানবাহনও চলতে দেখা গেছে। তবে, রামপুর, মাস্টার পাড়া, একাডেমি, বিরিঞ্চি, পাঠানবাড়িসহ কিছু কিছু সড়কে কিছুটা পানি রয়ে গেছে। শহরের কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সচল রয়েছে। তবে গ্রামীন জনপদ এখনও বিদুৎহীন।

বন্যাদুর্গত এলাকায় স্বেচ্ছাসেবকদের উদ্ধার তৎপরতা উল্লেখযোগ্যহারে লক্ষ্য করা গেছে। সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বন্যার্তদের উদ্ধার এবং শুকনো খাবার সহায়তায় প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার।

বন্যায় মৃত্যু প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক বলেন, এখন পর্যন্ত একজনের মৃত্যুর সংবাদ নিশ্চিত হওয়া গেছে। বিভিন্ন মাধ্যমে মৃত্যুর আরও সংবাদ পাওয়া গেলেও এর সত্যতা এখনো নিরূপণ করা যায়নি।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/২৮ অগাস্ট ২০২৪,/সন্ধ্যা ৬:০৫

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

December 2025
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৬
IT & Technical Supported By:BiswaJit