শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:২৩ পূর্বাহ্ন

সুদের টাকার জন্য চাপ দেয়ায় মামা-মামি-বোনকে হত্যা

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ৩১ জানুয়ারী, ২০২৪
  • ২০৭ Time View

ডেস্ক নিউজ : সুদের টাকার জন্য অতিরিক্ত চাপ দেওয়ায় সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলায় মামা বিকাশ চন্দ্র সরকার, মামি স্বর্ণা রানী সরকার ও মামাতো বোন তুষি সরকারকে গলা কেটে হত্যা করে রাজিব কুমার ভৌমিক (৩৫) বলে জানিয়েছে পুলিশ।

বুধবার (৩১ জানুয়ারি) বিকেলে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মন্ডল। তিনি জানান, ট্রিপল মার্ডারের ঘটনায় গ্রেফতার রাজিব কুমার ভৌমিক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এতথ্য জানিয়েছে। গ্রেফতার রাজিব কুমার ভৌমিক উল্লাপাড়া উপজেলার তেলিপাড়া গ্রামের মৃত বিশ্বনাথ কুমার ভৌমিকের ছেলে। হত্যাকারী রাজিব নিহত বিকাশ চন্দ্র সরকারের আপন ভাগনে।

পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান জানান, হত্যাকারী রাজিবের বাবা মারা যাওয়ার পর ভাগিনার ব্যবসার পুঁজি হিসেবে ২০ লাখ টাকা সুদের ওপর দেন মামা বিকাশ চন্দ্র সরকার। ব্যবসা চলমান থাকাকালীন হত্যাকারী রাজিব তার মামাকে বিভিন্ন ধাপে সুদসহ ২৬ লাখ টাকা দেন। কিন্তু মামা বিকাশ সরকার ভাগনে রাজিবের কাছে সুদসহ আরও ৩৫ লাখ টাকা দাবি করেন।

হত্যাকারী রাজিব


তিনি জানান, গত ২২ জানুয়ারি বিকাশ চন্দ্র সরকার দাবিকৃত টাকা এক সপ্তাহের মধ্যে ফেরত দেবার জন্য রাজিবকে চাপ প্রয়োগ করেন ও রাজিবের মাকেও অনেক কথা বলেন। এর জেরে হত্যাকারী রাজিব টাকার ব্যবস্থা করতে ব্যর্থ হওয়ায় তার মামাসহ পুরো পরিবারকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। তারই ধারাবাহিকতায় গত ২৭ জানুয়ারি (শনিবার) বিকেল পৌনে ৫টার দিকে টাকা দিবেন বলে মামাকে জানান রাজিব।

মামা বিকাশ চন্দ্র সরকার বাড়ির বাহিরে থাকায় তার তাড়াশের বাসায় এসে রাজিবকে মামির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বাসাতেই থাকতে বলেন। হত্যাকারী রাজিব কফি খাওয়ার কথা বললে তার মামি বাসার নিচে দোকানে গেলে মামাতো বোন তুষির মাথায় লোহার রড দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করে। এতে তুষি জ্ঞান হারিয়ে ফেললে হাসুয়া দিয়ে গলা কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করে রাজিব।

ইতিমধ্যে তার মামি কফি নিয়ে বাসায় ফিরলে তাকেও একইভাবে লোহার রড দিয়ে মাথায় আঘাত ও গলা কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করে। মামি ও মামাতো বোনকে হত্যার কিছুক্ষণের মধ্যে তার মামা বাসায় ঢুকলে তাকেও প্রথমে রড দিয়ে মাথায় আঘাত ও পরে হাসুয়া দিয়ে গলা কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করে মরদেহ টেনে বেড রুমে রেখে তালা দিয়ে উল্লাপাড়া ফিরে যায়। যাওয়ার পথে রাজিব লোহার রড একটি পুকুরে ফেলে যায় এবং রক্তমাখা হাসুয়াসহ ব্যাগটি নিজ বাড়িতে যান।

পুলিশ সুপার আরও বলেন, আমরা বিকাশের ফোনের একটি কল রেকর্ড থেকে প্রথম সূত্র পাই। এরপর তথ্যপ্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের মাধ্যমে মোটামুটি নিশ্চিত হওয়ার পর রাজিবকে গ্রেফতার করি। এরপর রাজিব আমাদের কাছে এই হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেন। তবে এটাই সত্য যে রাজিব একাই তিনজনকে হত্যা করে। এরপরও আমরা সবকিছু যাচাই-বাছাই করছি। তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানোর বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।

প্রসঙ্গত, সোমবার (২৯ জানুয়ারি) দিবাগত রাত ৩টার দিকে তাড়াশ পৌর শহরের বারোয়ারি বটতলা এলাকার কালিচরণ সরকারের ছেলে বিকাশ সরকার, তার স্ত্রী স্বর্ণা রানি সরকার (৪০) ও মেয়ে তাড়াশ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী পারমিতা সরকার তুষির (১৫) গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এর আগে স্বজনরা দুই দিন যাবত তাদের খোঁজ না পেয়ে পুলিশকে খবর দিলে ঘরের তালা ভেঙে মেঝেতে ও বিছানায় তাদের গলাকাটা মরদেহ পাওয়া যায়।

নিহত বিকাশ সরকার হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের তাড়াশ উপজেলা শাখার কোষাধ্যক্ষ ছিলেন। বিকাশরা দুই ভাই ও পাঁচ বোন। বিকাশ সবার ছোট ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) সামিউল আলম, উল্লাপাড়া সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার অমৃত সুত্রধর, তাড়াশ থানার ওসি নজরুল ইসলাম, জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) ওসি জুলহাস উদ্দীন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/৩১ জানুয়ারী ২০২৪,/সন্ধ্যা ৭:১২

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit