মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:২৪ পূর্বাহ্ন

গাজীপুরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে নারী পোশাক কর্মী নিহত

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ৮ নভেম্বর, ২০২৩
  • ৮৫ Time View

ডেস্ক নিউজ : পোশাকশ্রমিকদের ন্যুনতম মজুরি ২৩ হাজার টাকা করার দাবিতে গাজীপুরের কোনাবাড়ী এলাকায় বিক্ষোভরত শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে এক নারী নিহত হয়েছেন। বুধবার সকালে গুরুতর আহত অবস্থায় ওই নারীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।

নিহত নারীর নাম আঞ্জুয়ারা খাতুন (২৪)। তিনি সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলার চর নাটিপাড়া এলাকার জামাল হোসেনের স্ত্রী। 

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, নিহত আঞ্জুয়ারা কোনাবাড়ীর ইসলাম গার্মেন্টসে সেলাই মেশিন অপারেটর হিসেবে কাজ করতেন।

সংশ্লিষ্টরা জানান, গাজীপুরে পোশাক কারখানার শ্রমিকরা দীর্ঘদিন ধরে বেতন বাড়ানোর আন্দোলন করছে। শ্রমিকদের আন্দোলনের মধ্যে মঙ্গলবার পোশাক শ্রমিকদের নূন্যতম মজুরি সাড়ে ১২ হাজার টাকা করার ঘোষণা দিয়েছে মজুরি বোর্ড। ঘোষিত নূন্যতম মজুরি প্রত্যাখান করে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের কোনাবাড়ি ও জরুনসহ আশপাশের কয়েকটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা আন্দোলনে নামেন।  এ ঘটনায় এক নারী ও পুরুষসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। গুরুতর আহত দুজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। তাদের মধ্য থেকে একজনের মৃত্যু হয়।

পুলিশ, আন্দোলনরত শ্রমিক ও এলাকাবাসী জানায়, কারখানা শ্রমিকদের নূন্যতম বেতন ২৩ হাজার টাকা করার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে গাজীপুরের কোনাবাড়ি, কাশিমপুর, সফিপুর ও মৌচাকসহ আশপাশের বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকরা আন্দোলন করে আসছেন। মঙ্গলবার পোশাক শ্রমিকদের নূন্যতম মজুরি সাড়ে ১২ হাজার টাকা মজুরি বোর্ডের সভা শেষে ঘোষণা করা হয়। মজুরি বোর্ড ঘোষিত শ্রমিকদের বেতন প্রত্যাখান করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয় শ্রমিকরা। প্রতিদিনের মতোই বুধবার সকাল থেকে কোনাবাড়ি এলাকার স্ট্যান্ডার্ড গার্মেন্টস লিমিটেড, রিপন নিটওয়্যার লিমিটেড, ইসলাম গার্মেন্টস ও বেস্টঅল সোয়েটারসহ আরো কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা কাজে যোগ না দিয়ে কারখানার সামনেই বিক্ষোভ শুরু করলে কারখানায় ছুটি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। 

সকাল ৮টার দিকে কয়েকশ শ্রমিক কাশিমপুরের জরুন মোড়ের সামনে একত্রিত হয়ে হাতে ইট এবং লাঠিসোটা নিয়ে মিছিল করতে থাকে। এক পর্যায়ে শ্রমিকরা বিভিন্ন সড়ক অবরোধ করে কাঠ ও টায়ারে আগুন ধরিয়ে দেয়। এছাড়া বিভিন্ন যানবাহন ভাঙচুরের চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে উত্তেজিত শ্রমিকরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টিয়ারসেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। পরে উত্তেজিত শ্রমিকরা ছত্রভঙ্গ হয়ে রওশন মার্কেটের হয়ে হাতিমারার দিকে এগিয়ে যায়।

গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুলিশের কোনাবাড়ি থানার ওসি একেএম আশরাফ উদ্দিন জানান, শ্রমিকদের শান্ত থাকতে অনুরোধ হলে শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে পুলিশের উপর ইট পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। এ পর্যায়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে টিয়ারসেল ছুড়লে শ্রমিকরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।

এ বিষয়ে গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. মাহবুব আলম বলেন, বুধবার সকাল থেকেই শ্রমিকরা আন্দোলন করে। বেশিরভাগ কারখানায় কাজ চলছে এবং তারা উৎপাদন করছে। কারখানার শ্রমিকরা আন্দোলন করছে। আমরা তাদের ঘোষণা দিয়েছিলাম আপনারা নিজেদের জায়গা থাকেন, আপনাদের ফ্যাক্টরিতে ঢুকেন, কাজ পছন্দ না হলে কাজ বন্ধ রাখেন কিন্তু অন্য কোনো কারখানায় ভাংচুর করতে যাবেন না, অন্য কোনো কারখানার শ্রমিকদের নামাতে যাবেন না। কিন্তু তারা আমাদের নির্দেশনা না শুনে অন্য কারখানার শ্রমিকদের নামানোর চেষ্টা করলে সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে পুলিশ টিয়ার সেল, সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষে একজন নারী ও একজন পুরুষ শ্রমিক আহত হন। তাদের স্থানীয় ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

কিউএনবি/অনিমা/০৭ নভেম্বর ২০২৩/দুপুর ১:৩৫

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

December 2025
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৬
IT & Technical Supported By:BiswaJit