ডেস্ক নিউজ : বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন তিনি। তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা মনে করি, সমালোচনা পথচলাকে শাণিত করে, কাজের জন্য সহায়ক এবং বাংলাদেশে গণমাধ্যমের যে স্বাধীনতা আছে, সেটি উন্নয়নশীল বিশ্বের জন্য একটি দৃষ্টান্ত।’
তিনি বলেন, ‘গত পনেরো বছরে দেশে পত্রিকার সংখ্যা সাড়ে ৪০০ থেকে ১ হাজার ২৬০টিতে উন্নীত হয়েছে। বেসরকারি টেলিভিশনের যাত্রা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত দিয়ে শুরু হয়েছিল। এর পর বিএনপি এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমল শেষ হওয়া পর্যন্ত ১০টি ছিল। আজ ৩৫টি টিভি চ্যানেল সম্প্রচারে আছে। আরও কমপক্ষে ৫টি খুব শিগগিরই সম্প্রচারে আসবে। অনলাইন গণমাধ্যম কত হাজার সেটি একটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার বিষয়। এগুলোই প্রমাণ করে, শেখ হাসিনা এবং তার সরকার কতটুকু গণমাধ্যমবান্ধব।’
সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, “জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জীবনের একটি সময় সাংবাদিকতা করেছেন, আজকের এই চত্বরের জায়গা বঙ্গবন্ধুই জাতীয় প্রেসক্লাবকে দিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা এখানে দাঁড়িয়েই ২০১৪ সালে সাংবাদিকদের কল্যাণে একটি স্থায়ী তহবিলের কথা উল্লেখ করে বলেছিলেন: ‘আমি কতদিন বাঁচব জানি না, কিন্তু সাংবাদিকদের জন্য একটি স্থায়ী ব্যবস্থা করে দিতে চাই।’ তারই চিন্তাপ্রসূত, তারই উদ্যোগে ‘সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট’ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, এটি দেশের সব সাংবাদিক স্বীকার করেন এবং বলেন এই ট্রাস্ট তাদের একটি ভরসাস্থল হিসেবে দাঁড়িয়েছে।”
ড. হাছান বলেন, ‘একজন সাংবাদিক মারা গেলে কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে তার পরিবার ৩ লাখ টাকা অনুদান পায়, অসুস্থ সাংবাদিকরা অনুদান পান। আমরা ট্রাস্টের বিধিমালা সংশোধন করেছি, এখন থেকে অসচ্ছল সাংবাদিকদের মেধাবী শিক্ষার্থী সন্তানরাও অনুদান পাবে। সবাইকে অবাক করে করোনাকালে আমরা ট্রাস্ট থেকে সাংবাদিকদের এককালীন সহায়তা দিয়েছি। দেশব্যাপী ৭ হাজারের বেশি সাংবাদিক অনুদান পেয়েছেন। ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, নেপালসহ উপমহাদেশের কোনো দেশে এটি হয়নি। এমনকি ইউরোপের কোনো দেশেও সাংবাদিকদের জন্য আলাদা কোনো বরাদ্দ ছিল না, যেটি জননেত্রী শেখ হাসিনা দিয়েছেন।’
বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘বিএনপি সমাবেশের নামে ২৮ অক্টোবর কী করেছে আপনারা জানেন। সাংবাদিকরা কোনো দল করে না, তারা সংবাদ সংগ্রহের জন্য সেখানে গিয়েছিল এবং ৩২ জনের বেশি সাংবাদিক আহত হয়েছে, যার মধ্যে ২০ জনই বিএনপি বিটের। একজন সাংবাদিককে মাটিতে টেনে-হিঁচড়ে সাপকে যেভাবে মারা হয়, সেভাবে মারা হয়েছে, ভাগ্য ভালো তার মাথায় হেলমেট ছিল। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমি অনুরোধ জানাব, সাংবাদিকদের যারা নির্যাতন করেছে, আহত করেছে, পিটিয়েছে; সেই দুষ্কৃতকারী, সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে জনমত গঠন করুন, কলম ধরুন, পত্রিকার পাতায় লিখুন, টেলিভিশনে প্রতিবেদন পেশ করুন। একই সঙ্গে উদ্বেগ প্রকাশ করি যে রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস এবং আরও যেসব সংগঠন আছে তারা একজন সাংবাদিক নিয়েও অনেক সময় বিবৃতি দেয়, আর ২৮ তারিখ ৩২ জনকে পেটানো হলো, এত ঘটনা ঘটল, কোনো বিবৃতি নাই। আমি সাংবাদিকদের অনুরোধ করব, তাদের কাছে চিঠি লেখার জন্য যে তারা কেন নিশ্চুপ।’
ওয়েজবোর্ড নিয়ে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘নবম ওয়েজবোর্ড প্রধানমন্ত্রী দিয়েছেন কিন্তু কিছু সংবাদপত্র মালিক মামলা করায় সেটি বন্ধ রয়েছে। মালিকপক্ষকে বিনীতভাবে অনুরোধ, নবম ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়ন করুন এবং কথায় কথায় ছাঁটাই উচিত নয়। আর দশম ওয়েজবোর্ড গঠন প্রক্রিয়া শুরু করে মন্ত্রণালয়ে ফাইল উপস্থাপনের জন্য বলেছি।’বিএফইউজে সভাপতি ওমর ফারুকের সভাপতিত্বে এবং মহাসচিব দীপ আজাদের সঞ্চালনায় ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী এবং বিএফইউজের আঞ্চলিক নেতারা সভায় বক্তৃতা করেন।
কিউএনবি/আয়শা/০২ নভেম্বর ২০২৩,/সন্ধ্যা ৬:২১