সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:২৬ অপরাহ্ন

আটাত্তরে ‘বাকের ভাই’

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ৩১ অক্টোবর, ২০২৩
  • ৭১ Time View

বিনোদন ডেস্ক : অসংখ্য গুণের অধিকারী আসাদুজ্জামান নূর। একাধারে তিনি অভিনেতা, আবৃত্তিকার, নাট্যজন, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সফল রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। যে অঙ্গনেই পদচারণা করেছেন, সে অঙ্গনের প্রান্তসীমা ছুঁয়ে নিজেকে নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়। এত পরিচয়ের ভিড়েও তিনি শুধু নিজেকে অভিনেতা বলতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। অসম্ভব আত্মপ্রত্যয়ী মানবতাবাদী মানুষ হিসেবে পরিচয় দিতে ভালোবাসা এ অভিনেতার আজ জন্মদিন। ৭৭ বসন্ত পেরিয়ে পা রাখলেন ৭৮-এ।

১৯৪৬ সালের ৩১ অক্টোবর দেশের সীমান্তবর্তী প্রত্যন্ত জেলা নীলফামারীতে জন্ম নেন আসাদুজ্জামান নূর। কলেজ জীবনেই তিনি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। দেশের স্বাধীনতার জন্য, মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে রাজনীতির হাজারো কূট-কৌশলের মাধ্যমেই এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় নেন। রাজনীতির সঙ্গে জড়ালেও স্বার্থ, দ্বন্দ্ব, আর্থিক লোভ- এসব কখনো ঘেঁষতে পারেনি তাকে। রাজনীতি তাকে শিখিয়েছে সাধারণ মানুষের কাছে থাকতে, মানুষকে ভালোবাসতে আবার প্রয়োজনে মানুষের দাবি আদায়ে সোচ্চার হতে। ছাত্রজীবনেই আইয়ুববিরোধী আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন। বায়ান্ন, বাষট্টি, ঊনসত্তর, একাত্তর-দেশের সব ইতিহাসের সন্ধিক্ষণে, রাজনৈতিক গতিধারায় তিনি অসীম প্রজ্ঞা আর সাহস নিয়ে দাঁড়িয়েছেন এ অভিনেতা। লড়ে গেছেন বীরের বেশে।

১৯৭২ সালে সাপ্তাহিক চিত্রালীতে কাজ করার মধ্য দিয়ে কর্মজীবন শুরু করেন আসাদুজ্জামান নূর। ১৯৭৩ সালে একটি বিজ্ঞাপনী সংস্থার অধীনে ছাপাখানার ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ১৯৭৪ সালে সোভিয়েত দূতাবাসের (বর্তমানে রাশিয়া) প্রেস রিলেশন অফিসার হিসেবে যোগদান করেন। পরবর্তীতে ১৯৮০ সালে ইস্ট এশিয়াটিক অ্যাডভারটাইজিং লিমিটেডে সাধারণ ব্যবস্থাপক পদে কাজ করেন। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর প্রতিষ্ঠায় অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন আসাদুজ্জামান নূর। তিনি মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি সদস্য, আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সভাপতি, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সদস্য ও বাংলাদেশ রাশিয়া মৈত্রী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

নব্বইয়ের দশকে নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের লেখা ‘কোথাও কেউ নেই’ নাটকে ‘বাকের ভাই’ চরিত্রে রূপ দান করে দেশব্যাপী তুমুল জনপ্রিয়তা লাভ করেন নূর। দেশ টিভিতে প্রচারিত ‘কে হতে চায় কোটিপতি’ অনুষ্ঠান উপস্থাপনার দায়িত্বও পালন করেন তিনি।

আসাদুজ্জামান নূরের অভিনয় জীবনের সূচনা থিয়েটার থেকে। ১৯৭২ সাল থেকে তিনি নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ের সঙ্গে জড়িত হন। সে সময়ে তিনি ‘চিত্রালী’র অভ্যর্থনাকারী ছিলেন এবং বিখ্যাত অভিনেতাদের সাক্ষাৎকার নিতে যেতেন। এভাবেই তিনি আলী জাকেরের সঙ্গে দেখা করেন, যিনি ছিলেন নাগরিক সম্প্রদায়ের।

নিজের পরিচালনায় নূর ৫০টিরও বেশি বিজ্ঞাপনচিত্র ও ভিডিও ছবি নির্মাণ করেন। টেলিভিশনে তার উল্লেখযোগ্য কাজের মধ্যে রয়েছে ‘এইসব দিনরাত্রি (১৯৮৫)’, ‘অয়োময় (১৯৮৮)’, ‘কোথাও কেউ নেই (১৯৯০)’, ‘আজ রবিবার (১৯৯৯)’ ও ‘সমুদ্র বিলাস প্রাইভেট লিমিটেড (১৯৯৯)’।

নূরের বেতারে প্রচারিত নাটকের সংখ্যা ৫০ এরও বেশি। টেলিভিশনের পাশাপাশি তিনি চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র হলো শঙ্খনীল কারাগার (১৯৯২) ও আগুনের পরশমণি (১৯৯৪)। সংস্কৃতিতে অবদান রাখার জন্য ২০১৮ সালে নূর স্বাধীনতা পুরস্কার লাভ করেন।

কিউএনবি/অনিমা/৩১.১০.২০২৩/বিকাল ৫:৩৬

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

December 2025
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৬
IT & Technical Supported By:BiswaJit