আন্তর্জাতিক ডেস্ক : টালমাটাল অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে চীনের অর্থনীতি। এর ফলে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বিরুদ্ধে দানা বাঁধছে ক্ষোভ। এই পরিস্থিতিতে একের পর এক গগনচুম্বী অট্টালিকা ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলো বেইজিং। নিজেদের ভুল সিদ্ধান্তকে ধামাচাপা দিতেই এই সিদ্ধান্ত, এমনই বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
সূত্রের খবর, গত কয়েক বছরে একসঙ্গে প্রচুর বহুতল তৈরি করেছে চীন। কিন্তু সেই আবাসন কিনতে চাইছেন না কেউ। ফলে লোকসানের মুখ দেখতে হচ্ছে নির্মাণ সংস্থাগুলোকে। শেষ পর্যন্ত ক্ষতি এড়াতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
বিশেষজ্ঞদের দাবি, মুদ্রাস্ফীতি আটকাতে নির্মাণশিল্পে বিনিয়োগ করে জিনপিং প্রশাসন। ফলে গলি থেকে রাজপথ সর্বত্রই গড়ে ওঠে উঁচু উঁচু বহুতল। এর মাধ্যমে শ্রমিকদের হাতে কাঁচা টাকা তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়। বেইজিং ভেবেছিল, হাতে টাকা পেলে তা পণ্য কেনায় ব্যবহার করবে আমজনতা। ফলে বাজারে লেনদেন বাড়বে। আর এর জেরে আরও ফুলে ফেঁপে উঠবে অর্থনীতি।
কিন্তু বাস্তবে এর ফল হয় হিতে বিপরীত। হাতে টাকা পেয়ে অতি সঞ্চয়ী হয়ে ওঠে চীনের মানুষ। কোভিড মহামারি শুরু হতেই গাটের টাকা খুব হিসাব করে খরচ করা শুরু করেন তারা। ফলে বিপাকে পড়ে জিনপিং প্রশাসন। লাখ লাখ আবাসন তৈরি হয়ে গেলেও সেগুলো বিক্রির লোক খুঁজতে হিমশিম খেতে হয় তাদের।
সংবাদ সংস্থা ব্লুমবার্গের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এখনও চীনে লাখ লাখ বাড়ি ফাঁকা পড়ে রয়েছে। অন্যদিকে দেশে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বেকারত্ব। এর মধ্যে বেশ কিছু নির্মাণসংস্থা আবার জড়িয়ে পড়েছে আইনি জটে। ফলে কিছুটা বাধ্য হয়ে নিজেদের বানানো বহুতল ভেঙে ফেলছে বেইজিং। খবর এই সময়ের।
চীনের রিয়েল এস্টেট সংস্থাগুলোর মধ্যে অন্যতম এভারগ্রান্ডে গ্রুপ। বর্তমানে গলা পর্যন্ত ঋণে ডুবে রয়েছে এই সংস্থা। এছাড়া আরেকটি রিয়েল এস্টেট সংস্থা কান্ট্রি গার্ডেন হোল্ডিংসের অবস্থাও তথৈবচ। প্রায় দেউলিয়া হতে চলেছে সংস্থাটি।
ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, এই পরিস্থিতিতে চীনে নির্মাণ সংস্থাগুলোর শেয়ারের দর হু হু করে পড়তে শুরু করেছে। এ নিয়ে কিছুদিন আগে একটি সমীক্ষা করা হয়। রিপোর্টে জানা গেছে, চলতি বছরের শেষে চীনের অর্থনীতি আরও ভয়ংকর সমস্যার মুখে পড়বে। এজন্য নির্মাণ শিল্পকেই দায়ী করেছেন বেশিরভাগ মানুষ।
কিউএনবি/অনিমা/০৩ অক্টোবর ২০২৩,/রাত ৯:৩৩