বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫, ০৯:৩৫ পূর্বাহ্ন

চৌগাছায় এক দিন মজুরের পঁচাগলা মরাদেহ উদ্ধার

এম এ রহিম চৌগাছা (যশোর)
  • Update Time : শুক্রবার, ৫ মে, ২০২৩
  • ৬৯৪ Time View

এম এ রহিম চৌগাছা (যশোর) : যশোরের চৌগাছায় হাশেম গাজী (৬৫) নামে এক দিন মজুরের পঁচাগলা মরাদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহ¯পতিবার (৪ মে) বিকেলে নিজ ঘর থেকে তার মরাদেহ উদ্ধার করেন স্থানীয়রা। হাশেম গাজী উপজেলার ধুলিয়ানি ইউনিয়নের ধুলিয়ানি গ্রামের বাজার পাড়ার বাসিন্দা। মর্মান্তিক এই মৃত্যু ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।দিন মজুর হাশেম গাজী (৬৫)। ৪ ছেলে ২ মেয়ের জনক তিনি। বেঁচে আছেন স্ত্রী কল্পনা বেগম। ডায়াবেটিস ও হৃদ রোগে ভুগছিলেন তিনি। ছোটছেলে ও স্ত্রীকে সাথে নিয়ে অভাব অনাটনে কোনো রকম দিন কাটছিল হাশেম গাজীর। কিন্তু মৃত্যুর সময় তার পাশে স্বজনদের কেউ ছিলনা! এমনকি মৃত্যুর দুদিন পরে প্রতিবেশিদের কাছ থেকে খবর পেয়ে পঁচাগলা মরাদেহ উদ্ধার করে দাফন করেছে স্বজনরা।

বৃহ¯পতিবার (৪ মে) নিজ ঘর থেকে দুপুরে তার পঁচা-গলা মরাদেহ উদ্ধার করা হয়। ঐদিন সন্ধ্যায় দাফন করা
হয়। এলাকা বাসীর ধারনা তিনদিন আগে মঙ্গলবার (২ মে) স্ট্রোক করে তিনি মারা যান। বাড়িতে তিনি একা থাকার কারনে মৃত্যুর খবর কেউ জানেত পারেনি।স্থানীয় মসজিদের ঈমাম হাফেজ নজরুল ইসলাম বলেন, লাশটি পঁচে দূগন্ধময় হওয়ার কারনে প্রতিবেশিরা কেউ ধোয়াতে অসেনি। মৃতের স্ত্রীর সহযোগীতায় কোনোরকম পানি ছিটিয়ে গোসল দেওয়া হয়। এবং মৃতদেহ পঁচা গলা হওয়ায় কাফনের কাপুড় পরানো যায়নি। যে কারেন পলিথিন মুড়িয়ে দাফন সমপন্ন করা হয়।

প্রতিবেশীরা জানান, হাশেম গাজীর চার ছেলের তিন ছেলে হাসান গাজী (৩৬), মেরাজ গাজী (৩৪) ও হোসেন গাজী (৩২) ঢাকায় শ্রমিকের কাজ করেন। বড় মেয়ে নাজমাকে বিয়ে দিয়েছেন ময়মনসিংহ জেলায় এবং ছোট মেয়ে ফাতেমাকে বিয়ে দিয়েছেন (ধুলিয়ানী) গ্রামেই। আর ছোট ছেলে পরান (১৩) এবং স্ত্রী কল্পনা বেগমকে সাথে নিয়ে বসবাস করতেন হাসেম গাজী। স্ত্রী কল্পনা বেগম ছোট ছেলেকে সাথে নিয়ে উপজেলার সদর চৌগাছা ইউনিয়নের ঢেকিপোতা গ্রামে বাবার বাড়িতে গিয়ে ছিলেন। হাসেম গাজীর বড় ভাই জালাল গাজী ও খুব অসুস্থ। তিনিও শশুর বাড়ি পাশের গ্রাম আটুলিয়াতে বসবাস করেন। জালাল গাজীর একমাত্র ছেলে প্রবাসী।পাশের বাড়ীর গৃহবধূ সামছুন নাহার ও রুপভান বেগম জানান, বেলা ১১ টার দিকে মৃতের কয়েকটি ছাগল বাড়ির মধ্যে খুব ডাকছিল। ছাগলের ডাক শুনে বাড়ির মধ্যে গিয়ে দেখি কলাপসিবল গেইটের ভিতর থেকে তালা লাগানো। ছাগল খুব জোরে ডাকা ডাকি করলেও ভিতর থেকে হাসেম গাজীর কোনো সাড়া শব্দ নেই। তাকে ডাকা ডাকি করে কোনো সাড়া-শব্দ না পেয়ে গ্রামে তার ছোট মেয়ে ফাতেমা খাতুনকে খবর দেই।

ছোট মেয়ে ফাতেমা খাতুন বলেন, মঙ্গলবার দুপুরে বাবাকে রান্না করে দিয়ে গেছি। এর পরে আর খবর নিতে পারেনি। বৃহ¯পতিবার এসে বাবাকে ডেকে কোনো শব্দ না পেয়ে তালা খুলে দেখি, বাবা এক পাশে হাতের উপরে কাত হয়ে শুয়ে আছে। গায়ে হাত দিয় ডেকে দেখি তিনি মারা গেছেন। গন্ধ ছড়াচ্ছে। এর পরে আমার ডাক-চিৎকারে স্থানীয় লোকজন আসেন।মৃতের স্ত্রী কল্পনা বেগম বলেন, আমি গত রোববার বাবার বাড়িতে ধান গোছানোর কাজে সহযোগীতা করতে গিয়েছিলাম। ছোট ছেলে আমার সাথে ছিল। মঙ্গলবার বিকেলে পরানের বাবার সাথে আমার শেষ কথা হয়।

মৃতের বড়ছেলে হাসান গাজী বলেন, বাবা ঢাকায় থেকে শ্রমিকের কাজ করতেন। সে কারেণ তাদের তিন ভাইয়ে ঢাকা থাকা। বছর খানেক হলো বাবা বাড়িতে যাওয়া আসা করতেন। সর্বশেষ ঈদের কদিন আগেইতিনি বাড়ীতে আসেন। তিনি বলেন, বাবার ডাযাবেটিস ও হার্ডের রোগছিল। এছাড়া এর আগে ৫ বার স্ট্রোক হয়েছে। তাকে একা রাখা আমাদের ভূল হয়েছে!
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান এস এম মোমিনুর রহমান বলেন, সংবাদ পেয়ে ওই বাড়িতে গিয়েছিলাম। লাশ দুরগন্ধ হয়ে গিয়েছিল। গোসল দিতে প্রতিবেশিরা কেউ এসেছিলকিনা আমার জানা নেই। স্থানীয় মসজিদেরঈমাম সাহেব লাশ দাফন করেন।চৌগাছা থানার ওসি সাইফুল ইসলাম সবুজ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, স্ট্রোকের কারণে মৃত্যু হতে পারে তাছাড়া এ বিষয়ে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি।

কিউএনবি/অনিমা/০৫ মে ২০২৩,/বিকাল ৫:৪৬

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

June 2025
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit