ডেস্কনিউজঃ সরকার পতনের ১০ দফা বাস্তবায়নই নতুন বছরে বিএনপির চ্যালেঞ্জ বলে মন্তব্য করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি বলেন, ক্ষমতা ছেড়ে দিতে সরকারকে বাধ্য করতে হবে। রাজপথেই এর ফয়সালা করতে হবে। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে বিদায় হবে এই সরকার।
রোববার বিকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
খন্দকার মোশাররফ আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, অন্ধকার কেটে যাবে। আলো আসবে। ছাত্রসমাজ, জনগণ, বিএনপি, গণতান্ত্রিক-দেশপ্রেমিক শক্তি- যারা যুগপৎ আন্দোলনে রয়েছে তারা আলো দেখানোর জন্য ইতিহাস সৃষ্টি করবে। আগামী দিন আমাদের চ্যালেঞ্জ ১০ দফা দাবি বাস্তবায়ন। এর মধ্যে রয়েছে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে এনে স্বাধীনভাবে রাজনীতি করার সুযোগ করে দেওয়া, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মির্জা আব্বাসসহ সব রাজবন্দিকে মুক্ত করা।
লাল-সবুজ টুপি, জাতীয় ও দলীয় পতাকা হাতে নিয়ে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে নেতাকর্মীরা প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সমাবেশে অংশ নেন। তাদের উপস্থিতিতে একপর্যায়ে নয়াপল্টনের একপাশের সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সমাবেশকে কেন্দ্র করে নয়াপল্টন ও আশপাশের এলাকায় বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়। ১৯৭৯ সালের ১ জানুয়ারি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান শিক্ষা, ঐক্য ও প্রগতি- এই তিন মূলনীতিকে ধারণ করে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল গঠন করেন।
সরকারের দমনপীড়নের কঠোর সমালোচনা করে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, সরকার যতই নির্যাতন করুক, নেতাকর্মীদের কারাবন্দি করুক- কোনো লাভ হবে না। তারা ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য ছয় শতাধিক নেতাকর্মীকে গুম করেছে, এক হাজারের ওপরে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, ৩৭ লাখের বেশি নেতাকর্মীর নামে মামলা দিয়েছে। কিন্তু আমাদের আন্দোলন থামেনি। তাই সরকারকে বলতে চাই, এতকিছু করেও আন্দোলনকে দমাতে পারেননি। জনগণ নেমে গেছে রাস্তায়। আপনাদের কোনো রেহাই নেই।
ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েলের সঞ্চালনায় সমাবেশে ছাত্রদলের সাবেক নেতাদের মধ্যে শামসুজ্জামান দুদু, আসাদুজ্জামান রিপন, আমান উল্লাহ আমান, নাজিম উদ্দিন আলম, আজিজুল বারী হেলাল, আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, রাজীব আহসান, আকরামুল হাসান, ফজলুর রহমান, ইকবাল হোসেন শ্যামল, মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস প্রমুখ বক্তব্য দেন।
দুই গ্রুপে মারামারি, সাংবাদিক লাঞ্ছিত : সমাবেশের শেষ পর্যায়ে ছাত্রদলের দুই গ্রুপের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। বসা ও স্লোগানকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের কয়েকজন আহত হন।
এর আগে সমাবেশ কাভার করতে আসা এক সাংবাদিককে লাঞ্ছিত করেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। একটি বেসরকারি টিভির ওই সাংবাদিক নির্ধারিত জায়গায় ট্রাইপড রাখেন। এ সময় ছাত্রদলের এক কর্মী সেটাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেন। এর কারণ জানতে চাইলে ওই সাংবাদিকের ওপর চড়াও হন তারা। তাকে লাঞ্ছিত করা হয়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মঞ্চ থেকে নেমে আসেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আসাদুজ্জামান রিপন ও ছাত্রদলের সভাপতি রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ। এ সময় মারামারির সঙ্গে জড়িতদের বহিষ্কারের ঘোষণা দেন সংগঠনের সভাপতি।
জিয়ার সমাধিতে শ্রদ্ধা : এদিন সকালে ছাত্রদলের নেতাদের নিয়ে শেরেবাংলা নগরে শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। এ সময় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতা তবিবুর রহমান সাগর, আবু আফসান মো. ইয়াহিয়া, খায়রুল আলম সুজন, আসাদুজ্জামান আসাদ, আনোয়ার হোসেন, শাফি ইসলাম, আবু জাফর, আদনান, মো. মোহন, আরিফুল ইসলাম, সাইদুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, নতুন বছরে বিএনপির সামনে প্রধান চ্যালেঞ্জ হচ্ছে সরকার পতনসহ ১০ দফা দাবি আদায়। এজন্য যা যা করা প্রয়োজন, তাই করতে প্রস্তুত আছেন নেতাকর্মীরা। ভয়ভীতি দেখিয়ে আন্দোলন দমন করা যাবে না।
কিউএনবি/বিপুল ০১.০১.২০২৩/রাত ১০.৪৯