তোবারক হোসেন খোকন,দুর্গাপুর(নেত্রকোনা)প্রতিনিধি : চলতি আমন মওসুমে নেত্রকোনার দুর্গাপুরে ধানের ফড়িয়া, আড়ৎদার ও মহাজনরা সের ও কেজির মারপ্যাঁচে ভেজাধানও কাঁচাধানের অজুহাতে ওজনে কারচুপি করে এলাকারকৃষকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ধান হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ ওঠেছে। এনিয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন স্থানীয় কৃষকগন।এ নিয়ে উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে গিয়ে দেখাগেছে, মাপের পরিমাপ কেজির ওজনের কথা থাকলেও ধানের বাজারে এখনো চলে সের বা ওজনের মাপ। ওই ওজনে ধান কেনা-বেচা না হলেও মেপে নেয়া হয় কেজির বাটখারায়। আর এখানেই হিসাবের মারপ্যাঁচে কৃষককে ঠকানো হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
মেট্রিক পদ্ধতির ওজন ব্যবহার না করলে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জেল-জরিমানার বিধান থাকলেও এ মৌসুমে বাজারে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা না করায় ফড়িয়া ব্যবসায়িদের দৌরাতœ বেড়েই চলেছে। এলাকার কৃষকেরা ধান ব্যবসায়ীদের এসব কারচুপি থেকে বাঁচার জন্য বিভিন্ন স্থানে মৌখিক অভিযোগ করেও কোনো ফল পাচ্ছেন না। উপজেলার দু’চারটি হাট-বাজার ছাড়া প্রায় প্রত্যেক হাটবাজার ও আড়তে কেজির বাটখারার পরিবর্তে সেরের ওজন পরিমাপ করা হয়। কেজি থেকে সেরে পরিবর্তন সহজে সাধারণ কৃষকগন বুঝে ওঠে না। তাই ব্যবসায়িদের মতানুসারেই ধান বিক্রি করতে হয়।
এ নিয়ে কৃষক হযরত আলী বলেন, ধানের মহাজনেরা তাদের ইচ্ছামত ধান মেপে নেয়। এতে আমাদের বলার কিছুই থাকেনা। অনেক কৃষক এতে বাঁধাপ্রদান করলে তাদের ধান আর নেয়া হয়না। ফড়িয়া ধান ব্যবসায়ীর, আড়ৎদার মহাজনরা আমাদের কাছ থেকে ধান কেনার সময় প্রতিমণে কমপক্ষে দুই থেকে আড়াই কেজি অতিরিক্ত ধান নিয়ে থাকে। শিবগঞ্জ, ঝাঞ্জাইল, দুর্গাপুর, কুমুদগঞ্জ ও কালিকাপুর বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে এসব কারচুপিতে ধান নেয়ার সংস্কৃতি চালু আছে এখনো। এসব কারচুপি থেকে বাঁচার জন্য প্রশাসনের সহায়তা কামনাসহ বাজার গুলোতে প্রতিনিয়ত মোবাইল কোর্ট পরিচালনার দাবী জানাচ্ছি।
দুর্গাপুর বাজারের ধানব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সিরাজ আলী জানান, বড় বড় মিলারগন আমাদের কাছ থেকে ভেজা ধানের অজুহাতে প্রতিমনে দুই কেজি ধান বেশি নিয়ে থাকেন। তাই আমরাও বাজারে ধান কেনার সময় যদি ভিজা ধান হয় তাহলে স্থানীয় কৃষকদের বুঝিয়ে তাদের কাছ থেকে প্রতি মনে কিছু বাড়তি ধান নিয়ে থাকি। আবার শুকনা ধান কেনার ক্ষেত্রে এমনটা হয়না। তবে দুই-তিন কেজি ধান নেয়ার অভিযোগ সঠিক নয়।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ রাজীব-উল-আহসান এ প্রতিনিধিকে জানান, ধান কেনার সময় বাজারের ব্যবসায়ীরা ওজনে বেশি নেয়ার বিষয়টি আমি শুনেছি। কৃষকরা যেন ধান বিক্রি করতে এসে প্রতারিত না হন, সে বিষয়ে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।
কিউএনবি/অনিমা/২৯ নভেম্বর ২০২২,খ্রিস্টাব্দ/বিকাল ৩:০৭