সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:৪৮ পূর্বাহ্ন

দুই বিচারপতির দুই মত, মামলা যাচ্ছে বৃহত্তর বেঞ্চে

Reporter Name
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ১৩ অক্টোবর, ২০২২
  • ৭২ Time View

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কর্ণাটকে হিজাবকাণ্ডের রায় নিয়ে ভিন্ন মত জানিয়েছেন ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতি। এ কারণে বিতর্কের অবসান করতে মামলাটি তিন সদস্যের বৃহত্তর বেঞ্চে পাঠাতে ভারতের প্রধান বিচারপতির কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন তারা। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়ার। বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টার দিকে (বাংলাদেশ সময় বেলা ১১টা) ভারতের সর্বোচ্চ আদালতে আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণা হওয়ার কথা ছিল।

এদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হিজাব নিষিদ্ধ করার বিষয়ে কর্ণাটক সরকারের আদেশ বহাল রাখার পক্ষে অবস্থান নেন বিচারপতি গুপ্তা। তিনি আবেদনকারীদের আপিল খারিজ করে দেন। কিন্তু বিচারপতি ধুলিয়া বলেছেন, তার কাছে মুসলিম মেয়ে শিশুদের শিক্ষাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এ কারণে বিচারপতি গুপ্তার সঙ্গে মতপার্থক্য তৈরি হয়েছে।

এর আগে, সর্বোচ্চ আদালতে যুক্তিতর্ক চলাকালে আবেদনকারীদের পক্ষে উপস্থিত আইনজীবীরা জোর দিয়ে বলেছিলেন, মুসলিম ছাত্রীদের হিজাব পরতে বাধা দেওয়া তাদের শিক্ষাজীবনকে বিপণ্ন করবে। এমন সিদ্ধান্তের কারণে তারা ক্লাসে যাওয়া বন্ধ করে দিতে পারে।

এসময় তারা আরও নানা যুক্তি উত্থাপন করেন। আইনজীবীরা বলেন, কর্ণাটকে রাজ্য সরকারের আদেশ স্কুল-কলেজগুলোতে সাম্য, অখণ্ডতা ও জনশৃঙ্খলাকে বিঘ্নিত করেছে। তারা মুসলিমদের হিজাবকে হিন্দুদের পরিধান করা ঘুনঘাট ও টিপ এবং শিখদের পাগড়ির সঙ্গেও তুলনা করেন। ভারতের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে এগুলো পরে যাওয়ার বিষয়ে কোনো বিধিনিষেধ নেই। তবে রাজ্য সরকারের পক্ষে উপস্থিত আইনজীবীরা দাবি করেন, কর্ণাটক সরকারের যে আদেশ বিতর্কের জন্ম দিয়েছে তা ‘ধর্ম নিরপেক্ষ’।

এ অবস্থায় বিচারপতিদের মতপার্থক্যের কারণে বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতি বলেছেন, কর্ণাটক সরকারের আদেশ থেকে উদ্ভূত মামলাটি তিন বিচারপতির বেঞ্চের হাতে অর্পণ করার জন্য প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠানো হবে। চলতি বছরের ১ জানুয়ারি কর্ণাটকের উদুপির একটি কলেজে কয়েকজন হিজাব পরা শিক্ষার্থীকে ক্লাসে বসতে বাধা দেওয়ার ঘটনা ঘটে। কলেজ উন্নয়ন সমিতির সভাপতি বিজেপি বিধায়ক রঘুপতি ভাট স্পষ্ট জানিয়ে দেন, হিজাব পরা শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ঢুকতে পারবেন না।

রাজ্যজুড়ে সেই বিতর্ক দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। হিজাবের পাল্টা হিসেবে গেরুয়া উত্তরীয় পরে আন্দোলন শুরু করে একাধিক হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। কয়েক জায়গায় হিজাবের পক্ষে-বিপক্ষে আন্দোলনকারীরা মুখোমুখি হয়। পুলিশের সঙ্গেও একাধিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। কয়েকটি জেলায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয় রাজ্যের সব স্কুল-কলেজ।

গত ২৬ জানুয়ারি কর্ণাটক সরকার এ বিষয়ে একটি বিশেষ কমিটি গঠন করে। ঘোষণা করা হয়, কমিটি নির্দিষ্ট সুপারিশ করার আগ পর্যন্ত ছাত্রীরা কেবল ইউনিফর্ম পরেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে পারবে। হিজাব বা গেরুয়া উত্তরীয় কিছুই পরার অনুমতি নেই।

jagonews24

রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে উদুপির কয়েকজন ছাত্রী কর্ণাটক হাইকোর্টে রিট করেন। তারা আদালতে দাবি করেন, হিজাব পরা তাদের মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে। কোনোভাবেই তা বাতিল করা যাবে না।

তবে ১০ ফেব্রুয়ারি কর্ণাটক হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি রিতুরাজ অবস্তি, বিচারপতি কেএস দীক্ষিত এবং বিচারপতি জেএম খাজি অন্তর্বর্তী রায়ে বলেন, যতদিন না রায় ঘোষণা হচ্ছে, কর্ণাটকে স্কুল-কলেজ খুলতে পারে। কিন্তু কোনো শিক্ষার্থী ধর্মীয় প্রতীকসম্বলিত কোনো পোশাক পরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে পারবে না।

এই মামলায় শুরু থেকে কর্ণাটক সরকার বলে এসেছে, হিজাব পরা ইসলামের বাধ্যতামূলক অনুশীলনের মধ্যে পড়ে না। গত ১৫ মার্চ কর্ণাটক হাইকোর্টও রাজ্য সরকারের পক্ষেই রায় দেন। সেদিন হাইকোর্টের তিন বিচারপতি বলেন, ইসলাম ধর্মে হিজাব পরা বাধ্যতামূলক নয়। এ কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এটি পরা নিষিদ্ধ করার অধিকার রয়েছে স্থানীয় সরকারের।

পরে এ রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন ভুক্তভোগীরা।

সূত্র: এনডিটিভি, টাইমস অব ইন্ডিয়া

 

 

কিউএনবি/আয়শা/১৩ অক্টোবর ২০২২,খ্রিস্টাব্দ/দুপুর ১২:২৫

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

December 2025
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৬
IT & Technical Supported By:BiswaJit