শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:১৩ অপরাহ্ন

গৃহ শিক্ষকের আড়ালে অদিতার উপর লোলুপ দৃষ্টি ছিল: শিক্ষক রনির স্বীকারোক্তি

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২
  • ১২৩ Time View
নোয়াখালী প্রতিনিধি : একজন গৃহ শিক্ষকের আড়ালে অদিতার উপর গৃহ শিক্ষক রনির লোলুপ দৃষ্টি ছিল। সময় সুযোগের অপেক্ষায় ছিল সে। অবশেষে গত বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে বিকেলের মধ্যে নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদীর লক্ষীনারায়ণপুর মহল্লার নিজ বাসায় অষ্টম শ্রেণির স্কুল ছাত্রী তাসমিয়া হোসেন অদিতাকে (১৪) ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে নির্মম ভাবে হত্যা করেছে গৃহ শিক্ষক আবদুর রহিম রনি। এদিকে স্কুল ছাত্রী অদিতা হত্যার প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে নোয়াখালীর শিক্ষাঙ্গন ও রাজপথ।

অভিযুক্ত আবদুর রহিম রনি (৩০) নোয়াখালী পৌরসভার ৩নম্বর ওয়ার্ডের লক্ষীনারায়ণপুর মহল্লার লাতু কাউন্সিলরের বাড়ির খলিল মিয়ার ছেলে। শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ১৬৪ ধারায় সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. এমদাদের আদালতে এ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় আসামি। একই দিন রাত ৯টার দিকে সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ারুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে ফোন আসে নোয়াখালী পৌরসভার ৩নম্বর ওয়ার্ডের লক্ষ্মীনারায়ণপুর মহল্লায় নোয়াখালী সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে কে বা কাহারা নিজ শয়ন কক্ষে গলায় ছুরি দিয়ে জবাই করে হত্যা করে।

ঘটনাটি শোনার সাথে সাথে ছুটে যাই ঘটনাস্থলে। তখন সেখানে লোকে লোকারন্য। পিতৃহারা অদিতার নিথর রক্তাক্ত দেহ পড়ে আছে নিজ শয়ন কক্ষে। দুই রুমের সব আসবাবপত্র এলোমেলো। যেন একটু আগে কোন ডাকাত চক্র ডাকাতি করে গেছে এ বাসায়। ঘটনাস্থলে ছুটে আসলেন নোয়াখালী জেলার পুলিশ সুপার। তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেন। উপস্থিত লোকজন বুঝাতে চাইলেন কিশোর গ্যাংয়ের কাজ। পুলিশ সুপার সবার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনলেন। অদিতার মায়ের সাথে কথা বললেন। খুব ঠান্ডা মাথায় ঘটনা বিশ্লেষণ করলেন। আমাদেরকে দিলেন পরামর্শ ও দিক-নির্দেশনা।  

ওসি আরো বলেন, সম্পূর্ণ ক্লু-লেস মামলার রহস্য উদঘাটনের জন্য শুরু হলো তদন্ত। মানুষের মুখে মুখে কিশোর গ্যাংয়ের কথা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম তোলপার। অদিতার মায়ের বক্তব্যও তাই। চাপের মাঝে প্রতিটি বিষয় নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়। জানা গেল রনি নামে অদিতার এক গৃহ শিক্ষক ছিল। অদিতা তার কাছে পড়তে চাইতো না। একপর্যায়ে বদল করা হয় তাকে। অদিতা নতুন গৃহ শিক্ষকের নিকট পড়তে শুরু করে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হানা দেয়া হয় গৃহ শিক্ষক রনির বাসায়। রনিকে জিজ্ঞাসাবাদ কালে রনির পরনের জামায় ফোঁটা ফোঁটা রক্তের দাগ দেখা যায়। গলায় খামছির দাগ। ঘাড় এবং মাথায়ও একই রকম দাগ। রনি এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ এড়িয়ে যাচ্ছিল। সন্দেহ বাড়তে থাকে। রনির প্রতিটি উত্তর যাচাই করা হচ্ছিল। কিন্তু বার বার প্রমাণ হচ্ছিল সে মিথ্যা বলছে। কিছু লুকাচ্ছে। 

অপর এক প্রশ্নের জবাবে ওসিবেলেন, আদালতে উপস্থাপন করে রনিকে ৩দিনের রিমান্ডে আনা হয়। রিমান্ডে সে সব স্বীকার করে। একজন গৃহ শিক্ষকের আড়ালে অদিতার উপর ছিল তার লোলুপ দৃষ্টি। সময় সুযোগের অপেক্ষায় ছিল রনি।  অবশেষে গত বৃহস্পতিবার সে সুযোগ আসে। অদিতাকে ঘরে একা পেয়ে তার বিকৃত যৌন লালসা চরিতার্থ করার চেষ্টা করে। যৌন লালসা চরিতার্থ করতে ব্যর্থ হয়ে এবং বিষয়টি বাহিরে প্রকাশ হয়ে যাওয়ার ভয়ে সে নির্মম ভাবে হত্যা করে অদিতাকে। রনি নিজের দোষ স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। 

উলেখ্য, গত বৃহষ্পতিবার বিকেলে জেলা শহর মাইজদীতে নোয়াখালী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী তাসমিয়া হোসেন অদিতাকে (১৪) গলাকেটে হত্যা করা হয়। নিহত শিক্ষার্থীর মৃতদেহ উদ্ধারের পরপর পুলিশের একাধিক দল পৃথক অভিযান চালিয়ে প্রধান আসামি সাবেক গৃহ শিক্ষক আবদুর রহিম রনিকে (২০), ইসরাফিল (১৪), তার ভাই সাঈদ (২০) গ্রেফতার করে। গতকাল আদালত রনির ৩ দিনের মঞ্জুর করে।

কিউএনবি/আয়শা/২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২,খ্রিস্টাব্দ/দুপুর ১২:৪০

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

December 2025
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৬
IT & Technical Supported By:BiswaJit